নিজস্ব প্রতিবেদক : নোয়াখালীর আল মদিনা একাডেমির এসএসসি পরীক্ষার্থী নার্গিস সুলতানার নবজাতক শিশুকে কোলে তুলে নিলেন জেলা প্রশাসক। পুরো পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করলেন পরীক্ষার্থী নার্গিস।
পরীক্ষার্থীর প্রতি জেলা প্রশাসকের মহানুভবতার বিরল ঘটনায় উপস্থিত সবাই ভূয়সি প্রশংসা করেন। এমনকি প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই ঘটনার উৎসাহিত বোধ করেন।
জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার্থী নার্গিস সুলতানার ১০ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন।
তবে এ অবস্থায় তিনি পরীক্ষার প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবেই নিয়েছেন। কিছুদিন আগে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেও পরীক্ষা দেবেন বলে প্রত্যয়ী ছিলেন তিনি।
গতকসল রবিবার ৩০ এপ্রিল, সন্তান নিয়েই নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের আল ফারুক একাডেমি স্কুলে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন পরীক্ষার্থী নার্গিস সুলতানা।
নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্রসচিব মেহেরুন নেছা বলেন, বাচ্চা কোলে নিয়েই এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসে। নানির কোলে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে। জেলা প্রশাসক স্যার অনেকক্ষণ শিশুটিকে কোলে রাখেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন।
শিশুটির নানি শাহিন আক্তার জানান, জেলা প্রশাসক স্যার এসে বাবুকে কোলে নিলেন। মেয়ের পড়াশোনার খবর নিলেন। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দিয়েছি কি না জিজ্ঞেস করেছেন। ১৮ বছর হওয়ার পর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি সেটা স্যারকে বলেছি। স্যার অনেকক্ষণ বাবুকে কোলে রেখেছেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রসচিব থেকে জানতে পেরে আমি পরীক্ষার্থীকে দেখতে যাই। খোঁজখবর নিই। শিক্ষার্থীর মায়ের কাছে জানতে পেরেছি ১৮ বছর হওয়ার পর বিয়ে দিয়েছেন। শিশুটিকে অনেকক্ষণ কোলে রাখি।
এ সময় মেয়েটি পরীক্ষা দিচ্ছিল। পরবর্তীতে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে সাহস দিয়েছি। শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই সামনের পরীক্ষাগুলোতে যেন অংশগ্রহণ করে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি।