!! অভিযোগকারীরা জানায়, প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম)১৯৮৯ অনুযায়ী মঞ্জুরিকৃত সহকারী প্রসিকিউটর পদের সংখ্যা ৩৭টি, ইন্সপেক্টর (এনফোর্সমেন্ট) পদের সংখ্যা ১২৮টি এবং সাব-ইন্সপেক্টর (এনফোর্সমেন্ট) ১০২টি। এখন বিভিন্ন জেলায় কর্মরত সহকারী প্রসিকিউটরদের পরিদর্শক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় এই পদের (পরিদর্শক) কোটায় পদোন্নতির সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাবে। ফলে ন্যায্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হবার আশংকায় উপ-পরিদর্শকরা। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। বলেছেন, এটি সংস্থার নিয়োগবিধি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পরিপন্থী। সংস্থার নিয়োগবিধি- ১৯৯৪ ও ২০২২ আনুযায়ী প্রসিকিউটরের ফিডার পদ সহকারী প্রসিকিউটর এবং একইভাবে পরিদর্শকের ফিডার পদ উপ-পরিদর্শক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিধি ভেঙ্গে গ্রেডেশনের তালিকা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। জনপ্রশাসন বিধিমালাকে তোয়াক্কা করছে না দফতরের মহাসপরিচালকসহ তার সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে চলছে নানামুখি কৌশল। অনিয়মের দায় নিতে নারাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। তাই ত্রুটিপূর্ণ তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি)। এই প্রতিষ্ঠানের চলছে জোর তদ্বির। তবে নিয়োগ বিধিমালা ও নির্দেশনা অনুসরণ করা হলে বিপিএসসির মতামত তাদের দিকে আসবে বলে ধারণা করছে বঞ্চিতরা।
এদিকে বেআইনি কর্মকাণ্ডের লাগাম ধরতে গত ১০ মে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ডিজি, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সচিব ও বিজ্ঞ সকল সদস্যকে বিবাদী করা হয়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শকদের গ্রেডেশনের জন্য একটি তালিকা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। অধিদফতরের ওই তালিকায় ‘সহকারী প্রসিকিউটর’দের নামভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিভি লঙ্ঘন করা হয়েছে তাতে। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বঞ্চিতদের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ‘পরিদর্শক পদের চূড়ান্ত তালিকা’ শিরোনামে একটি চিঠি গত ১০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। ৫৮.০২.০০০০.০০৬.১২.০৩৫.১৫-৬২৬৩ স্মারকের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন মাদকদ্রব্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন, অর্থ ও পরিকল্পনা)। চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত তালিকায় ১২০ কর্মকর্তার নাম, পরিচিতি নম্বর, যোগদানের তারিখ, পরিদর্শক পদে পদোন্নতি ও যোগদানের তারিখ সবিস্তার উল্লেখ রয়েছে। এ তালিকায় সুকৌশলে ১৪ জন সহকারী প্রসিকিউটরের নাম যুক্ত করা হয়েছে। তবে সেখানে ‘সহকারী প্রসিকিউটর’ শব্দের কোন উল্লেখ নেই। মূলতঃ নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতেই এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি সরাতেই এমন কৌশলীপন্থা অবলম্বন করা হয়েছে।
অভিযোগকারীরা জানায়, প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম)১৯৮৯ অনুযায়ী মঞ্জুরিকৃত সহকারী প্রসিকিউটর পদের সংখ্যা ৩৭টি, ইন্সপেক্টর (এনফোর্সমেন্ট) পদের সংখ্যা ১২৮টি এবং সাব-ইন্সপেক্টর (এনফোর্সমেন্ট) ১০২টি। এখন বিভিন্ন জেলায় কর্মরত সহকারী প্রসিকিউটরদের পরিদর্শক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় এই পদের (পরিদর্শক) কোটায় পদোন্নতির সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাবে। ফলে ন্যায্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হবার আশংকায় উপ-পরিদর্শকরা। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। বলেছেন, এটি সংস্থার নিয়োগবিধি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পরিপন্থী। সংস্থার নিয়োগবিধি- ১৯৯৪ ও ২০২২ আনুযায়ী প্রসিকিউটরের ফিডার পদ সহকারী প্রসিকিউটর এবং একইভাবে পরিদর্শকের ফিডার পদ উপ-পরিদর্শক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ১১ মার্চ ইস্যুকৃত ৯৪ নং স্মারকের এক চিঠিতেও বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। ওই চিঠিতে ‘সহকারী প্রসিকিউটর পদে নিয়োগপ্রাপ্তগণ পরিদর্শক পদে পদায়নের সুযোগ পাবেন না’ বলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সে নিয়মকে পাত্তা দিচ্ছেন না তালিকা প্রণয়নের দায়িত্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ শীর্ষ ছয় কর্মকর্তা। তারা সহকারী প্রসিকিউটরদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ‘পরিদর্শক’ পদের চূড়ান্ত তালিকা করেছেন। ওই ১৪ জনের মধ্যে রয়েছে- আব্দুল্লাহ আল মামুন (পরিচিতি নং ২৩১৮৬), খবির আহম্মেদ (পরিচিতি নং ২৩১৮৪), মাহবুবা জেসমিন রুমা (পরিচিতি নং ২৩১৮৩), মাসুদুর রহমান তালুকদার (পরিচিতি নং ২৩১৮১), নুরুল আলম (পরিচিতি নং ২৩১৮০), লোকমান হোসেন (পরিচিতি নং ২৩১৭৮), জান্নাতুন নুরী (পরিচিতি নং ২৩১৭৫), খরিলুর রহমান (পরিচিতি নং ২৩১৭৪), সাইফুর রহমান (পরিচিতি নং ২৩১৭২), এসএম মঈন উদ্দীন (পরিচিতি নং ২৩১৭১), পারভীন আক্তার (পরিচিতি নং ২৩১৬৯), শরিফুল ইসলাম (পরিচিতি নং ২৩১৬৮), বেলায়েত হোসেন (পরিচিতি নং ২৩১৬৭), রাসেল আলী (২৩১২৩১৬৫)। উল্লিখিতরা যোগদান করেছেন ২০১৩ সালে মে থেকে জুনের বিভিন্ন সময়।এদিকে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে ১০ মে আইনি নোটিশ দিয়েছে ক্ষুব্ধরা। প্রস্তুতি নিচ্ছেন নতুন করেন আরেক মামলার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এজকন উপ-পরিচালক সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে জানান, এই তালিকাটি ত্রুটিমুক্ত হতো যদি ১৪ জনের নাম অন্তর্ভূক্ত না করা হতো। বিধি ভেঙ্গে ১৪জনের নাম তালিকাভুক্ত করে পুরো তালিকাকেই ত্রুটিপূর্ণ করা হয়েছে। যে কারণে মামলা, নোটিশের পর বিষয়টি গড়িয়েছে পিএসসিতে। এখন দেখার বিষয় পিএসসি কি করে। তবে পিএসসিতে সঠিক সমাধান মিলবে বলে মনে করছেন সংক্ষুব্ধরা।