সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুর মিছিলে সাংবাদিক নাদিম
নিজস্ব প্রতিনিধি : মিথ্যা মামলা, হামলা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও হামলা যেন নিত্যদিনের ঘটনা এটা বলা যায় এক প্রকার গাসওয়া হয়ে গেছে সহকর্মী সাংবাদিকের মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছে জামালপুরের সাংবাদিক মহল।
প্রচারমাধ্যম কে বলা হয় রাস্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।অথচ সারাদেশে যেভাবে সাংবাদিক ও প্রচারমাধ্যমের নামে মামলা ও সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী ও পেটুয়া বাহিনী দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তাতে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকতা আজ বিপন্ন। আর এদের শেল্টার দিচ্ছে কোন না কোন ক্ষমতাশীন দলের নেতা বা প্রভাবশাী মহল। এহেন পরিস্থিতিতে রাস্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আজ নড়বড়ে, রাস্ট্র আজ শক্তি হারিয়ে ফেলেছে চতুর্থ স্তম্ভের ধারণক্ষমতা রক্ষায়।যে কারণে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের নাম।
সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশের জেরে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত জামালপুরে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম (৪২) মারা গেছেন, এমন সংবাদে কেঁদে ওঠে মন অশ্রুসিক্ত নয়নে লিখতে হচ্ছে সেই সংবাদ এটা একজন সাংবাদিকের কাছে কতোটা বেদনার ও মর্মস্পর্শী ঘটনা তা একমাত্র সাংবাদিকরাই জানেন। মোসাহেব, গোপালভাড় কিংবা মিয়া তানসেন বা রাজা বীরবল শ্রেণির সাংবাদিকদের জানার কথা নয়।
কারণ তারা রাজা বা সম্রাটের মুখ্যাপেক্ষী হয়ে নিতে চায় ক্ষমতার মসনদ। এ জন্য বোধহয় দেশের বৃহত্তর সাংবাদিক গোষ্ঠীকে পুঁজি করে ক্ষুদ্রতম একটা সাংবাদিক গোষ্ঠী রাতারাতি ফুলে ফেঁপে কলাগাছ বা বটবৃক্ষে পরিনত হচ্ছে।, আার মামলা ও হামলার শিকার হচ্ছে মাঠে ময়দানে কাজ করা তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকরা।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক নাদিম বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুর আড়াই টার দিকে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুবরণ করেন ।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বেলা ১১ টার দিকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গোলাম রব্বানী নাদিম মারা যায়।
এর আগে, বুধবার (১৪ জুন) রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা গেছে, পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে নাদিমের উপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ফেলে পালিয়ে যান তারা।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় নাদিমকে।
নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজনরা নাদিমের ওপর এ হামলা চালান। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু দাবি করেন, তার সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের কোনো শত্রুতা নেই। এ হামলায় তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।
এর আগে গত ১১ এপ্রিলও নাদিমের ওপর একবার হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে তার ওপর ওই হামলা করা হয়েছিল।