অনুমোদন নেই তারপরও ব্যাবহার করা হচ্ছে বিএসটিআই এর মান চিহ্ন।
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার রানা ভাটা এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা মশার কয়েল তৈরি কারখানার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, রানা ভাটা এলাকায় সংলগ্ন পোড়াবাড়ি নামক জনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি কারখানায় কোনো প্রকার বৈধতা ছাড়াই তৈরি হচ্ছে মশার কয়েল। কারখানার বাইরে নেই কোন সাইনবোর্ড বা কোম্পানির নাম। ওই কয়েল তৈরির ফ্যাক্টরির ভিতরে ৭ থেকে ৮ জন শ্রমিক বিভিন্ন কেমিকেলের মিশ্রণে তৈরি করছে মশার কয়েল।
এসব তৈরিকৃত মশার কয়েল গুলো ট্যালেন্ট-৫৭০ নামের মোড়ক সামগ্রীতে অবৈধভাবে বিএসটিআই এর মান চিহ্ন ব্যবহার করে প্যাকেট জাত করে বিক্রি করা হচ্ছে যশোর-খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দোকানে। যার ফলে সাধারন ভোক্তাদের সাথে ভোক্তা অধিকার আইনে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এসব অনুমোদনহীন মশার কয়েলের কার্যকারীতা বৃদ্ধিতে ব্যাবহার করা হচ্ছে অধিক থেকে অধিকতর কীটনাশক যার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে কোমলপ্রাণ শিশুরা।
প্রস্তুতকারক হিসেবে প্যাকেটের গায়ে ব্যবহার করা হয়েছে মেসার্স মিজান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম।মশার কয়েল ফ্যাক্টরি করতে দেশের আইন অনুযায়ী বেশ কিছু পূর্ব শর্ত রয়েছে।তারমধ্যে অন্যতম ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া।
নিজের ব্রান্ড ও লোগোয় বাজারজাত করনে শিল্প মন্ত্রনালয় থেকে ট্রেড মার্ক করা। ভ্যাট ও টিন সার্টিফিকেট। একক মালিকানা হলে, নিজের নামে টিন সার্টিফিকেট হলেই হবে। আর একক মালিকানা না হলে, ব্যবসায়ের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। থাকতে হবে বিএসটিআই এর অনুমোদন। বি এস টি আই অনুমোদন পেতে বাধ্যতামূলক উপরোক্ত কাগজপত্র দপ্তরগুলো থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআইতে আবেদন করার শর্ত রয়েছে। তবে এই ফ্যাক্টরি থেকে তৈরি মশার কয়েলগুলোর প্যাকেটে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নং এর জায়গাটা ফাকা রাখা হয়েছে। ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন জায়গা ফাকা থাকায় বিএসটিআই অনুমোদনের বিষয়টা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
ওই ফ্যাক্টরির পার্শ্ববর্তী বসবাসকারী কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অবৈধ ওই ফ্যাক্টরিতে কয়েল তৈরির কাজে ব্যবহারিত কেমিক্যালের দুর্গন্ধে এলাকায় বসবাসের অনেক পরিবারের কষ্টকরভাবে দিন পার করছে। বিষাক্ত কেমিক্যালের দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ সহ সব বয়সি মানুষ শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন বায়ুবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ।
ওই ফ্যাক্টরির মালিক মিজানুর রহমানের সাথে ফ্যাক্টরির বৈধতা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সকল প্রকার কাগজপত্র রয়েছে। কাগজ দেখাতে বললে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়। কাগজপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, কাগজপত্র ফ্যাক্টরিতে নাই আমাদের অফিসে আছে।
বিষয়টি যশোর জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনিমকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) খুলনা বিভাগীয় অফিসের সহকারী পরিচালক গোবিন্দ কুমার ঘোষ জানান, বিএসটিআই’র অনুমোদন পূর্বে আইন অনুযায়ী সকল কার্য সম্পন্ন করতে হয়। পরে ফ্যাক্টরি পরিদর্শন শেষে অনুমোদন দেওয়া হয়। ফ্যাক্টরিটি সম্পর্কে খোজ নেওয়া হবে।