!! যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ২নং সাগরদাড়ী ইউনিয়নের গোপসেনা গ্রামের মৃত নাসির উদ্দীন মোড়লের ছেলে গ্রাম ডাক্তার আনসার আলী মোড়ল ২ কাটা জমিতে চায়না ডায়াবেটিস মুক্ত ধান চাষ করেছেন, তার এই ডায়াবেটিস মুক্ত ধান চাষের উদ্দেশ্য ও স্বপ্ন নিয়ে সরজমিন তদন্ত করে বিশেষ এই প্রতিবেদন টি লিখেছেন আজকের দেশ ডটকম এর যশোরের বিশেষ প্রতিনিধি মো : সুমন হোসেন !!
ডায়াবেটিস মুক্ত ধান। যে ধানের চাউল থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লাইসোমিক ইনডেক্স (যে কোনো খাবার খাওয়ার পরে ওই খাবার মানুষের শরীরের রক্তে মিশে যাওয়ার প্রক্রিয়া) পাওয়া যায়। এই ধানের চাউলে মানুষের রক্তে গ্লুকোজের পরিমন বৃদ্ধি করে না। যে কারনে ওই চাউলের ভাত খেলে আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির নিয়মিত বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ২নং সাগরদাড়ী ইউনিয়নের গোপসেনা গ্রামের মৃত নাসির উদ্দীন মোড়লের ছেলে গ্রাম ডাক্তার আনসার আলী মোড়ল ২ কাটা জমিতে চায়না ডায়াবেটিস মুক্ত ধান চাষ করেছেন। আনসার আলী বলেন, আমি মনিরামপুরের শাহজাহান মাষ্টারের নিকট থেকে অল্প কিছু ধানের বীজ এনে জমিতে পরিক্ষা মুলক ভাবে আবাদ করেছি। আমার স্ত্রী সাজেদা খাতুন ওই ধানের চাউলের ভাত খেয়ে অনেকটা ডায়াবেটিস মুক্ত আছেন। যে কারনে এলাকার অনেকেই আমার নিকট থেকে ওই ধানের বীজ নিয়ে ডায়াবেটিস মুক্ত ধান চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। বোরো মৌশুমে সঠিক পরিচর্যা নেওয়া ও বীজ বপনের ৯০ দিন পর ফলন পাওয়া যায়। ভালো ফলন হলে কাটায় ৩০ কেজি পর্যন্ত ধান উৎপাদন হয়। তবে উৎপাদনের উপর নিজের আবাদ বৃদ্ধি করবেন বলে জানান কৃষক আনসার আলী।
গোপসেনা গ্রামের মৃত আরশাদ আলীর ছেলে ক্ষুদ্র সারের ডিলার ও কৃষক মো: হাসান বলেন, আনসার আলীর নিকট থেকে ডায়াবেটিস মুক্ত ধান বীজ নিয়ে চাষ করতে চাই। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষের মাঝে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা বেশি। যে কারনে এই ধান চাষ করা সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। এই ধান চাষে অর্থ উপার্জনের পাশ্বাপাশি মানুষের সেবা করার সুযোগ রয়েছে।
গবেষণা বলছে, যে সব খাবারে লাইসোমিক ইনডেক্স কম থাকে ওই খাবার গুলো ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য ভালো। প্রতি ধরনের খাবারে ১-৫৫ পর্যন্ত লাইসোমিক ইনডেক্স কম, ৫৬-৬৯ পর্যন্ত মাঝারী ও ৭০-১০০ পর্যন্ত উচ্চ লাইসোমিক ইনডেক্স থাকে। এখানে ১-৫৫ পর্যন্ত লাইসোমিক ইনডেক্স ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। এর বেশি হলে ওই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। যার ফলে সে অধিক অসুস্থতা বোধ করেন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি প্রতিদিন ওই ধানের ১০০ গ্রাম আতপ চাউলের ভাত খেলে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে জানা যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ব্রি-ধান ১০৫ এর সাধারনত লাইসোমিক ইনডেক্স কম থাকে। যার ফলে ওই ধানের চাউল খেলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোছা: লাভলী খাতুন বলেন, উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের ইয়াছিন আলী সরদারের ছেলে আব্দুল গনি সরদার ২ শতক জমিতে বেগুনা ধান চাষ করছেন। এখনও ফলন না হওয়ায় কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে উপজেলায় এ বছর বোরো মৌশুমে প্রথম কয়েকজন কৃষক কে বিনামূল্যে ব্রি-ধান ১০৫ এর বীজ, সার ও কিটনাশক প্রদর্শনীর জন্য বিতরন করা হবে। এর আগে এই ধান কেউ আবাদ করে নি।