মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনের কাজ রাতে করছে পৌর-সভা। নড়াইল পৌর কর্তৃপক্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস। গত সোমবার ২৫ ডিসেম্বর, দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী’রা। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস চন্দ্র বোস বলেন,প্রায় সাত মাস আগে নড়াইল পৌর-সভা অবৈধ ভাবে নড়াইল শহরের কালিদাস ট্যাংক পুকুর সৌন্দর্যবর্ধন এবং শহরের কাঁচাবাজার আধুনিকায়নের কাজ শুরু করে।
যেসব জায়গায় এসব উন্নয়ন কাজ চলছে,তার মধ্যে ৪ একর ২১ শতাংশ জায়গা জেলা পরিষদের। এ কাজ বন্ধ করতে গত (২ নভেম্বর) জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সদরের দেওয়ানি আদালতে মামলা করলে বিচারক এনামুল হক তফশিলভুক্ত জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ জারি করেন।
কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। দিনে বন্ধ থাকলেও রাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করলেও আমরা আইনগত কোনো সহায়তা পাচ্ছি না বলেও অভিযোগ করেন।
জেলা পরিষদের জমিতে নড়াইল পৌর-সভা যেন অবৈধ ভাবে কাজ করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করছেন জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার আবু হানিফ জানান,নড়াইল পৌর-সভা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে অনেক বছর নালিশি জমির খাজনা দিয়ে আসছে।
জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে আবেদন করলে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৫মে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিম আহম্মেদ জেলা পরিষদের পক্ষে রায় দেন। এরপর ২৯মে অনলাইনে জেলা পরিষদ ৭৪ নম্বর মহিষখোলা মৌজার ২ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ৫৩৯ দাগ ও ৫২৮ দাগের ৪ একর ২১ শতাংশ জমির হালনাগাদ খাজনা পরিশোধ করেছে (বাংলা ১৪১২ সন থেকে ১৪৩০ সন পর্যন্ত)।
এ ব্যাপারে নড়াইল পৌর-সভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন,১৯৩৯ সালে তৎকালীন যশোর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড পত্রের মাধ্যমে তৎকালীন ইউনিয়ন বোডর্কে (বর্তমান পৌর-সভা) ৭৪ নম্বর মহিষখোলা মৌজার এস এ ২ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ তফশিলে বর্ণিত প্রায় ৪ একর ২১শতাংশ জমির মালিকানা প্রদান করেন।
এরপর থেকে পৌর-সভার সব উন্নয়নমূলক কাজ,বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জায়গা এবং জমি লিজ দিয়ে আসছে। এছাড়া পৌর-সভার একাধিক মার্কেট নির্মাণ এবং বাৎসরিক ইজারা প্রদান করে আসছে। এখন জেলা পরিষদ মিথ্যা মালিকানা দাবি করে পৌর-সভার উন্নয়ন প্রকল্পে বাঁধা দিচ্ছে।
এমনকি মামলা দিয়েছে। তফশিলভুক্ত জমিতে আদালতের স্থিতিবস্থা বজায় থাকায় পৌর-সভা উন্নয়ন কাজ বন্ধ রেখেছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে,পৌর কর্তৃপক্ষ সেটাই মেনে নেবে বলেও জানান।