বিআইসিসি-তে বসেছে নিরাপদ পিঠার হাট

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  কেহ উপস্থাপন করছেন গোপালগঞ্জের তক্তিকে, কেউ এসেছেন টাঙ্গাইল থেকে, কেউ আবার উপস্থাপন করছেন নোয়াখালীর খোলা জালি পিঠা, অনেকে আবার নিজে এলাকা ছাড়িয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন ভিন্ন কোন এলাকাকে, সাভারের চুষি পিঠা কিংবা গাজীপুরের চুই পিঠাসহ অন্তত ৪০ প্রকার পিঠা নিয়ে অংশগ্রহণ করেন প্রায় অর্ধ-শতাধিক উদ্যোক্তা। বাহারি থালায় সাজিয়ে নিরাপদতা বজায় রেখে পরিবেশন করছেন তাদের সৃষ্টিশীল কাজের অন্যতম সব উপস্থাপনা। যেন চলছিলো পিঠার মহাসমাবেশ। যে যেভাবে পারছে তার এলাকাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। বলছিলাম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) কর্তৃক আয়োজিত সেইফ ফুড কার্নিভালের তৃতীয় দিনে পিঠা প্রতিযোগিতার কথা।


বিজ্ঞাপন

বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। পিঠা-পায়েস সাধারণত শীতকালের রসনাজাতীয় খাবার হিসাবে অত্যন্ত পরিচিত এবং মুখরোচক খাদ্য হিসাবে বাঙালি সমাজে আদরণীয়। আত্মীয়স্বজন ও পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় ও মজবুত করে তুলতে পিঠা-পুলির উৎসব বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম শীতকালেই বেশি পড়ে।

ফুলঝুড়ি, দুধপুলি, সেমাই পিঠা, বিবিখানা, নারিকেল পুলি, ক্ষীর সেমাই , চিকেন বিং, ঝাল চিংড়ি পিঠা, শাহী ভাঁপা, ডিম সুন্দরী, ডাল সুন্দরী, পাটিসাপটা, তেলে ভাজা, ডিমের পানতোয়া, ধুপাই, নকশী, জামাই, গোলাপ, মাংসপুলি, চুই পিঠা, মালাই পিঠা, নোনতা ভাঁপা পিঠা, চুষি পিঠাসহ নাম না জানা কতো কতো পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।

সেইফ ফুড কার্নিভাল আয়োজন কমিটির আহবায়ক ও বিএফএসএ সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, ” পিঠা বাংলাদেশের একটা দারুণ ঐতিহ্য। যথাযথ খাদ্যের নিরাপদতা মেনে এই ঐতিহ্যসমূহকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই মূলত আমাদের এই আয়োজন। অংশগ্রহণকারীদের সকলে যেভাবে নিরাপদতা মেনে পিঠা প্রস্তুত ও পরিবেশন করছেন দেখে ভালো লেগেছে। ”

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই আয়োজনে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে খাদ্যমন্ত্রীর তথ্য ও গণসংযোগ কর্মকর্তা  মোঃ কামাল হোসেন, রন্ধনশিল্পী ও লেখক হাসিনা আনছার এবং রেবেকা খান, উপপরিচালক, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। কামাল হোসেন বলেন, “এ আয়োজন আমাদের শেকড়কে মনে করিয়ে দিচ্ছে। নিরাপদতার মাপকাঠিসমূহ মেনে যদি পিঠা প্রস্তুত ও পরিবেশন করা হয়, তাহলে আমাদের ঐতিহ্যসমূহ আরো টেকসই থাকবে। ”

অন্য বিচারক হাসিনা আনছার বলেন, “নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজন পিঠা তৈরীকারকদের মাঝে আরো সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ”

সাভার থেকে এসেছেন প্রভাষক মাসুদা আক্তার। তিনি বলেন, “নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজন আমাদের মতো শত শত উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরী করবে। নিরাপদতা বজায় রেখে পিঠা তৈরী হলে দেশের ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি এ খাতকে আরো সমুন্নত করা যাবে।”

নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত তৈয়বা আক্তার তাঁর অনুভূতি ব্যক্তকালে বলেন, ” কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। আমরা চাইবো প্রতি বছর যাতে এমন আয়োজন করা হয়। এতে করে দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষিত হবে।”

পিঠা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন মেরিনা সুলতানা, দ্বিতীয় হয়েছেন শারমিনা জেসমিন তুলি এবং তৃতীয় হয়েছেন নুসরাত জাহান। পুরস্কারবিজয়ীরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *