তাপস চন্দ্র সরকার, (কুমিল্লা) : সনাতন ধর্ম্মালম্বীরা পাপ মুক্ত হওয়ার মনোবাসনায় পবিত্র তীর্থভূমি লাঙ্গলবন্দের ন্যায় কুমিল্লা আড়াইওরা সার্বজনীন কালীবাড়ী ও মহাশ্মশান ঘাটস্থ গোমতী নদীতে অষ্টমী স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার ১৫ এপ্রিল বিকেল ৪টা ২১ মিনিট ০১ সেকেন্ড গতে অষ্টমী স্নানোৎসব আরম্ভ হয় এবং আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৫৬ মিনিটে বিহীত পূজার মাধ্যমে শেষ অষ্টমী স্নানোৎসব।
গতকাল সোমবার লগ্ন শুরুর পরই আড়াইওরা সার্বজনীন কালীবাড়ী ও মহাশ্মশান ঘাটে জেলা বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত হাজার হাজার ভক্ত পূণ্যার্থী ভিড় জমায়।

তদুপলক্ষে শ্মশানের দু’পাশে বিশাল মেলা বসেছে। মেলায় সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার আইসিটি সম্পাদক এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন- সনাতন ধর্ম্মালম্বীরা পাপ মোচনের আশায় অষ্টমী তিথিতে স্নান করে “হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য তুমি পাপ হরণ কর” -এই মহামন্ত্র উচ্চারণ করে ফুল, বেলপাতা, ধান-দুর্বা, হরিতকি, ডাব ও আমপাতা পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন ব্রহ্মার কাছে কৃপা চায়। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। তিনি আরও বলেন- এ বছর পহেলা বৈশাখ ও বাসন্তী পুজো একসাথে হওয়ায় পূজারী ও দর্শণ্যাথীর ছিলো চোখে পড়ার মতো। এ বছর দুইবার বাসন্তী পূজা এবং একবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আরও জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের জলের মাধ্যমে পাপমুক্ত হয়েছিলেন বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম মুনি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, মহাভারতের বর্ণনামতে পরশুরামমুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে পরশুরামের পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার কথা স্মরণ করে শত শত বছর ধরে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।