নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক ডাক শাখা হতে USA এর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য হতে আগত একটি পার্সেল হতে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ, ক্যানাবিস চকলেট ও ক্যানাবিস কেকসহ ৩ জন গ্রেফতার হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারসহ মাদকের মরণ ছোবল থেকে তরম্নন সমাজকে রক্ষার জন্য ঢাকা মহানগরীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালক (অপারেশনস্ ও গোয়েন্দা),মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জনাব তানভীর মমতাজ মহোদয়ের সার্বিক নিদের্শনায় এবং অতিরিক্ত পরিচালক, জনাব মো: জাফরুল্ল্যাহ কাজল ও ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর উপপরিচালক জনাব মোঃ আবুল হোসেনও সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ মেহেদী হাসান এর তত্ত্বাবধানে এবং পরিদর্শক, জনাব মো: হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম গঠন করে গতকাল মঙ্গলবার ২১ এপ্রিল অভিযান পরিচালনা করেপল্টন মডেল থানাধীন পুরাতন ডাক ভবন বৈদেশিক ডাক এর সিইডি/ডিসিএল শাখা হতে USA এর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য হতে আগত একটি পার্সেল হতে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ, ক্যানাবিস চকলেট ও ক্যানাবিস কেক জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত আলামালের বিবরণ যথাক্রমে, একটি কার্টুনের ভিতর ০৬ (ছয়) টি পলি প্যাকেটে টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (যাহা আমেরিকার তৈরী) প্রতি পলি প্যাকেটে ২২৫ (দুইশত পঁচিশ) গ্রাম করে সর্বমোট (২২৫x০৬)=১৩৫০ (এক হাজার তিনশত পঞ্চাশ) গ্রাম প্রাপ্ত। একই কার্টুনের ভিতর আমেরিকার তৈরী গাঁজার চকলেট ০৯ (নয়) টি; প্রতিটি ২৮ (আটাশ) গ্রাম করে সর্বমোট (২৮x০৯)=২৫২ (দুইশত বায়ান্ন) গ্রাম প্রাপ্ত। একই কার্টুনের ভিতর আমেরিকার তৈরী গাঁজার কেক ১০ (দশ) টি; প্রতিটি ৬০ (ষাট) গ্রাম করে সর্বমোট (১০x৬০)=৬০০ (ছয়শত) গ্রাম প্রাপ্ত।
জব্দকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় কোটি টাকা।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে,
মোঃ রাসেল মিয়া (২০) , পিতার নাম- মোঃ দুলাল মিয়া, স্থায়ী সাং-থানা- কাজিপুর, জেলা- সিরাজগঞ্জ, হাল সাং- দুর্গাপুর, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকা। রমজান মিয়া (২১), পিতা- মোঃ রিপন মিয়া, স্থায়ী সাং- থানা- কিশোরগঞ্জ সদর, জেলা- কিশোরগঞ্জ, হাল সাং- কাঠগড়া আমতলা তেল পাম্পের উল্টোপাশে ইসলামিয়া হোটেলের পিছনে, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকা বলে জানায়।মোঃ ইমরান @ রাজ (২০), পিতা- মোঃ শাকিলস্থায়ী সাং- গোলাহাটি, ০২ নং ওয়ার্ড, থানা- সৈয়দপুর, জেলা- নীলফামারী, হাল সাং- লতিফ দেওয়ান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া, কাঠগড়া আমতলা তেল পাম্পের পাশে, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকা।
চক্রটিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয় ঃগোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অবগত হই যে, বিপুল পরিমাণ মাদকসহ একটি পার্সেল USA এর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য হতে ডাকযোগে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডাক বিভাগের সহযোগিতায় পার্সেলটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণপূর্বখ পুরাতন ডাক ভবন বৈদেশিক ডাক এর সিইডি/ডিসিএল শাখার দক্ষিন-পূর্ব কর্ণার হতে ২৮৯৫৮৪১৫৫ নম্বর সম্বলিত পার্সেলটি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত পার্সেল হতে বর্ণিত মাদকসমূহ উদ্ধার করা হয়।
পার্সেলের গায়ে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশেস্নষণপূর্বক প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপকের এর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আশুলিয়া থানাধীন কাঠগড়া বাজার একজন আসামী মোঃ রাসেল মিয়া (২০) গ্রেফতার করা হয়। ১ নং আসামী মোঃ রাসেল মিয়া’কে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসবাদে জব্দকৃত পার্সেল সে ডেলিভারী নেওয়ার কথা স্বীকার করে। জিজ্ঞাসবাদে আরো জানায় রমজান মিয়া নামের একজন ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে পার্সেলটি ডেলিভারী নেওয়ার জন্যতাকে বলেন।
গ্রেফতারকৃত ১ নং আসামী মোঃ রাসেল মিয়া এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেআশুলিয়া থানাধীন আমতলা তেল পাম্পের উল্টোপাশে হতে রমজান মিয়া’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ২ নং আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে পার্সেলটির সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। সে আরো জানায়, রাজ নামের একজন পূর্ব পরিচিত ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে পার্সেলটি ডেলিভারী নেওয়ার জন্য ২নং আসামীকে বলেন। ২ নং আসামী রমজান মিয়া এবং ৩ নং আসামী রাজ পূর্ব পরিচিত এবং পরষ্পর বন্ধু বলে জানা যায়। ২ নং আসামী রমজান মিয়া এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেআশুলিয়া থানাধীন কাঠগড়া আমতলা তেল পাম্পের পাশে গলির ভিতরে লতিফ দেওয়ান এর বাড়ীর সামনে রাসত্মা হতে মোঃ ইমরান @ রাজকে গ্রেফতার করা হয়।
আটক কৃত আসামীদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় য়ে, আসামীগন পরষ্পর যোগ সাজসে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন পন্থায় বিদেশ থেকে মাদক এনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরম্নদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক সংশিস্নষ্ট থানায় মামলা দায়ের পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) কর্তৃক ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মাদকের বিরম্নদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি বাসত্মবায়নে তথা মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বদ্ধপরিকর।