বিশেষ প্রতিবেদক : শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের কয়লা আনতে গেলে সংঘবদ্ধ ভারতীয় নাগরিকদের গণপিটুনিতে বাংলাদেশি চার কয়লা চোরাকারবারি আহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।আইনি জঠিলতা এড়াতে বাড়ি ফিরে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে আহতরা গোপনে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাসেবা গ্রহন করেছেন।
ভারতীয়দের গণপিটুনিতে আহত বাংলাদেশি চার কয়লা চোরাকারবারিরা হলেন,সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তগ্রাম পুটিয়ার মঙলা মিয়ার ছেলে ফিরোজ মিয়া, পার্শ্ববর্তী লাকমা গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে সফিকুল ইসলাম, লাকমা বালুচরের ইসমাঈলের ছেলে কালা মিয়া, লাকমার আছমত আলীর ছেলে সাইদুল।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বালিয়াঘাট ও টেকেরঘাট বিজিবির কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের মধ্যবর্তী দায়িত্বপূর্ণ এলাকা বাংলাদেশ -ভারত মেইন পিলার ১১৯৮ এর ওয়ান-টু এস সাব পিলারের ওপারে ভারতের মেঘালয় ষ্টেইটের বড়ছড়া গারো বস্থির নিচে ওই চার কয়লা চোরকারবারিদেরকে ৩০ থেকে ৩৫ জন সংঘবদ্ধ ভারতীয় নাগরিক বেধরকভাবে গণপিটুনি দিয়ে আহত করে।
গণপিটুনিতে মাথা, হাত পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তার্থ জখম হলে পাহাড়ের বস্তির নিচে ফেলে রাখার পর সুযোগ বুঝে কোন রকম কৌশলে প্রাণ নিয়ে ওই কয়লা চোরাকারবারিরা বাংলাদেশে অভ্যন্তরে ফিরে এসে উপজেলার লাকমা বাজারের পল্লী চিকিৎসকের নিকট ওই রাত ১০টার দিকে গোপনে চিকিৎসাসেবা গ্রহন করেন।
শনিবার বিকেলে উপজেলার সীমান্তগ্রাম পুটিয়ার আহত ফিরোজ মিয়ার নিকট ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারন ও ভারতীয়দের দ্বারা গণপিটুনির বিষয়ে জানতে চাইলে, সে প্রথমেই কয়লা চোরাচালানের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে কয়লা ক্রেতা পরিচয়ে তার সাথে আলাপকালে এক পর্যায়ে সে নিজেই অকপটে স্বীকার করে জানায়, কয়েকজন একত্রিত হয়ে ভারতে থাকা কোয়ারি থেকে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কয়লা আনতে গেলে ৩০ থেকে ৩৫ জন ভারতীয় নাগরিক সংঘবদ্ধ হয়ে তাকে, তার সাথে থাকা কালা মিয়া, সাইদুল ও সফিকুলকে বেধরকভাবে পিটিয়ে রক্তার্থ জখম করে গারো বস্তির নিচে ফেলে রাখে।
এরপর পালিয়ে এসে তারা উপজেলার লাকমা বাজারের থাকা লেদারবন্দ গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক সফিকের ফার্মেসীতে গোপনে চিকিৎসা গ্রহন করে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার লাকমা বাজারের থাকা লেদারবন্দ গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক সফিকের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেও স্বীকার করেন,শুক্রবার রাতে ফিরোজসহ আহত চারজনকে মাথায় সেলাই প্রদান ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।
শনিবার বিকেলে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বালিয়াঘাট বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আনোয়ার হোসেনের নিকট শুক্রবার রাতে বালিয়াঘাট- টেকেরঘাট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের দায়িত্বপূর্ন এলাকার ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের গারো বস্তির নিচে চার বাংলাদেশি অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে চোরাচালানের কয়লা আনতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ভারতীয় নাগরিক কতৃক বেধরকভাবে গণপিটনির শিকার হওয়া ও অবৈধ অনুপ্রবেশপূর্বক প্রায়শই কয়লা চোরাকারবারি চক্রের বিরুদ্ধে সীমান্তবাসীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি লোকমুখে ঘটনাটি শুনেছি, তবে ভারতের পাহাড়ে যে গারো বস্তির নিচে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি টেকেরঘাট বিজিবি’র কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ওপারে।
শনিবার বিকেলে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের – টেকেরঘাট বিজিবি’র কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার উবায়দুর রহমানের নিকট একই প্রসঙ্গে সরকারি মুঠোফোনে কল করে জানতে চাইলে তিনি বলেন , হ্যা এমন একটি ঘটনা শুনেছি লোকমুখে।