নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত ২৮ আগস্ট দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে বিভিন্ন সময়ে আইন শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনগণ ‘গুম পরিবারের সদস্য’ এর ব্যানারে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতির নিকট একটি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য সুপ্রীম কোর্টে আসলে সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল উক্ত স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজন ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দের আর্থিক ও মানসিক দুর্দশার বিবরণের পাশাপাশি গুমের অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ, গুমের শিকার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ প্রদান, সরকারী খরচে মামলা পরিচালনার সুযোগ প্রদান, গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তরের নিমিত্ত বিশেষ সনদ প্রদানসহ মোট ৮ (আট) টি বিষয়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতির সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এছাড়া, গুম পরিবারের সদস্যদের প্রধান সমন্বয়ক আলহাজ্ব মোঃ বেল্লাল হোসেন স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপিতে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া মোট ৬৪ (চৌষট্টি) জন ব্যক্তির ছবি ও নাম, ঠিকানা সম্বলিত একটি তালিকা সংযুক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপনমূলে হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী সংস্থার সদস্য কর্তৃক সংঘটিত জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্ত ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করা হয়।
উক্ত প্রজ্ঞাপনে কমিশনের কর্মপরিধি হিসেবে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও তাদের সনাক্ত করা এবং কি পরিস্থিতিতে তাদের গুম করা হয়েছিলো তা নির্ধারণ করা, গুমের ঘটনাসমূহের বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা এবং এতদ্বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করাসহ গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের অবহিত করার বিষয়সমূহ বিধৃত রয়েছে।
যেহেতু উক্ত স্মারকলিপির সাথে সংযুক্ত গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকাসহ স্মারকলিপিতে বর্ণিত বিষয়সমূহ এ সংক্রান্তে গঠিত কমিশনের তদন্ত কার্যে সহায়ক হতে পারে এবং কমিশনের কার্যপরিধিতে গুমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, তাই বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয় গুম হওয়া ৬৪ (চৌষট্টি) জন ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত উক্ত স্মারকলিপিটি জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্ত সরকার কর্তৃক গঠিত ৫ (পাঁচ) সদস্য-বিশিষ্ট তদন্ত কমিশনের সভাপতির নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় অদ্য বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত একটি পত্র সহযোগে বর্ণিত স্মারকলিপিটি জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্ত গঠিত তদন্ত কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।