সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর ১৮ শতাংশ জমি জবর দখল করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভূমিখেকোরা

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি

!!  সরেজমিন বুড়িরটেক এলাকার ওই জমিতে গিয়ে দেখা গেছে- সরকারি বাউন্ডারি ভেঙে জেলা প্রশাসকের দেওয়া সাইনবোর্ড তুলে সেখানে নতুন ১০টি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে ভূমিখেকো চক্র। সাইনবোর্ডে লেখা- ‘আলী নগর, হ্যাভেলী প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’। এ ছাড়া আরও কয়েকজনের নামেও ঝুলছে সাইনবোর্ড। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই জমিতে পাহারারত আনসার সদস্যরা চলে গেলে ফের সরকারি এই জমি জবর দখলে নেয় আউয়াল সিন্ডিকেট। শুধু জেলা প্রশাসনের এই জমিই নয়, বাউনিয়া মৌজায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) ৬৬৫ কোটি টাকা মূল্যের ৬ একর ৬৫ শতাংশ জমিও দখল করে আবাসন প্রকল্পের নামে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক এ এমপির বিরুদ্ধে। কিছু কিছু দাগের জমিতে এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবনও। প্রশ্ন উঠেছে, অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমি কীভাবে কেনা-বেচা হলো? কীভাবেই বা খাজনা-খারিজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন মিলল। এসব বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে একাধিক মামলা, জিডি, নোটিশের পরও বেপরোয়া ভূমিখেকো সিন্ডিকেটটি।  ঢাকা জেলা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বাউনিয়া মৌজায় অবস্থিত এই সম্পত্তি (০৫/৭২-৭৩ এল) কেসমূলে জাগৃক-এর অনুকূলে অধিগ্রহণ করা হয়। জাগৃক দীর্ঘদিন ধরে এ সম্পত্তি অব্যবহৃত রাখায় ২০০৯ সালে তৎকালীন ঢাকা জেলা প্রশাসক এ সম্পত্তি পুনঃগ্রহণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে পুনঃগ্রহণের গেজেট প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি মতে- সাবেক মিরপুর (বর্তমান পল্লবী) থানাধীন বাউনিয়া মৌজার সিএস ৩১০১, ৩১০২, ৩১০৩, ৩১০৪, ৩১০৫, ৩১০৬, ৩১০৭, ৩১২১, ৩১২২, ৩১২৩ ও ৩১২৪ দাগের ১ একর ৬৫ শতাংশ পুনঃগ্রহণ করা জমির পরিমাণ ১৬ একর ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের সম্পত্তির পরিমাণ ১০ একর ১৮ শতাংশ। জাগৃকের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ঢাকা উপবিভাগ-২, ঢাকা ডিভিশন-১) মো. সাখাওয়াত হোসেন গত বছরের ৩০ নভেম্বর পল্লবী থানায় করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, জাগৃকের ঢাকা ডিভিশন-১ কর্তৃক ‘মিরপুরস্থ ৯নং সেকশনে ১৫টি ১৪ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (স্বপ্ননগর ২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের জমি জাগৃক এলএ কেস নম্বর-৫/৭২-৭৩ মূলে অধিগ্রহণকৃত ও গেজেটভুক্ত। মাটি কেটে এই প্রকল্পের কাজ শুরুর পর হ্যাভেলী গ্রুপ নামীয় একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থানীয় ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জমিটিতে জোরপূর্বক অবৈধ অনুপ্রবেশ, দখলের অপচেষ্টা ও সরকারি নির্মাণকাজে বাধা প্রদান এবং প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্টদের হত্যা ও গুমের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও জানানো হয় অভিযোগে। এমএ আউয়ালকে ভূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে গতকাল একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, সাবেক এমপি এমএ আউয়াল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার বলে মিরপুর ১২ পল্লবী থানা ডিওএইচএস সংলগ্ন বাউনিয়া মৌজায় সিএস ৩১০১, ৩১০২, ৩১০৩, ৩১০৪, ৩১০৫, ৩১০৬, ৩১০৭, ৩১০২১ নং দাগে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে শত শত লোকের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস, রাজউক, জাগৃকসহ সব জায়গায় সক্রিয় আউয়াল সিন্ডিকেট। ফলে সরকারের অধিগ্রহণ করা জমি রেজিস্ট্রি দিয়েছেন আউয়াল। অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর নামজারি মিউটেশন খাজনা-খারিজও হয়েছে। কিন্তু এমএ আউয়াল জমি বুঝিয়ে না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করছেন  !! 


বিজ্ঞাপন
পল্লবীর বাউনিয়া মৌজায় ঢাকা জেলা প্রশাসকের অধিগ্রহণকৃত প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর ১৮ শতাংশ জমি জবর দখল করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভূমিখেকোরা।

 

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে দেশের মানুষ ঘাতক, দালাল, রাজাকার, আলবদর নেতাদের বিচার নিশ্চিতের মতো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর বিচার দেখতে চায়। দল-মত নির্বিশেষে একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে আবার সবাইকে সতর্ক হতে হবে।’ ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে এ বক্তব্য দিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এবং তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এমএ আউয়াল। এর তিন মাস পর রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়া মৌজায় জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শিশুসন্তানের সামনে শাহিন উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাকা-ের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ভৈরবের একটি মাজার থেকে গ্রেপ্তার হয়ে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। সর্বশেষ, গত বুধবার বিকালে ওই একই মৌজার একটি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কলাবাগান থানায় দায়ের করা প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আবার সংবাদের খোরাক হয়েছেন এমএ আউয়াল। ভুয়া কাগজে জমি বিক্রি করে জনৈক রাজীব কায়সারের ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা এ মামলায় বাদীর সঙ্গে আপস করে গতকাল বৃহস্পতিবার জামিন পেয়েছেন তিনি।


বিজ্ঞাপন

অভিযোগ উঠেছে, পেশাগত জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আউয়ালের প্রতিষ্ঠান হ্যাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপার লিমিটেডের কাছ থেকে পল্লবীর বাউনিয়া মৌজায় জমি ক্রয় করে রাজীব কায়সারের মতো আরও অনেকেই এখন ভূমির খাজনা-খারিজ করতে না পেরে ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। এ ধরনের অর্ধশতাধিক ভুক্তভোগীর তালিকা এসেছে আমাদের সময়ের হাতে। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরাও রয়েছেন ভুক্তভোগীর তালিকায়।

জানা গেছে, পল্লবীর বাউনিয়া মৌজায় ঢাকা জেলা প্রশাসকের অধিগ্রহণকৃত প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর ১৮ শতাংশ জমি জবর দখল করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভূমিখেকোরা। সরকারি গেজেটভুক্ত এ সম্পত্তির মধ্যে বুড়িরটেক এলাকায় (আলীনগর) অবস্থিত প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা মূল্যের ৬ একর জমি গত ৯ এপ্রিল পুনরুদ্ধার করে জেলা প্রশাসন। ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার সাহার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে সেদিন এখানকার অবৈধ স্থাপনা ভেঙে বেশ কয়েকটি সরকারি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে টিনের বাউন্ডারি তুলে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি এ জমিতে ‘হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ, আলীনগর হাউজিং’র নামে প্রকল্প করে অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিলেন সাবেক এমপি আউয়াল।

সরেজমিন বুড়িরটেক এলাকার ওই জমিতে গিয়ে দেখা গেছে- সরকারি বাউন্ডারি ভেঙে জেলা প্রশাসকের দেওয়া সাইনবোর্ড তুলে সেখানে নতুন ১০টি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে ভূমিখেকো চক্র। সাইনবোর্ডে লেখা- ‘আলী নগর, হ্যাভেলী প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’। এ ছাড়া আরও কয়েকজনের নামেও ঝুলছে সাইনবোর্ড। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই জমিতে পাহারারত আনসার সদস্যরা চলে গেলে ফের সরকারি এই জমি জবর দখলে নেয় আউয়াল সিন্ডিকেট। শুধু জেলা প্রশাসনের এই জমিই নয়, বাউনিয়া মৌজায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) ৬৬৫ কোটি টাকা মূল্যের ৬ একর ৬৫ শতাংশ জমিও দখল করে আবাসন প্রকল্পের নামে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক এ এমপির বিরুদ্ধে। কিছু কিছু দাগের জমিতে এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবনও। প্রশ্ন উঠেছে, অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমি কীভাবে কেনা-বেচা হলো? কীভাবেই বা খাজনা-খারিজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন মিলল। এসব বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে একাধিক মামলা, জিডি, নোটিশের পরও বেপরোয়া ভূমিখেকো সিন্ডিকেটটি।

ঢাকা জেলা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বাউনিয়া মৌজায় অবস্থিত এই সম্পত্তি (০৫/৭২-৭৩ এল) কেসমূলে জাগৃক-এর অনুকূলে অধিগ্রহণ করা হয়। জাগৃক দীর্ঘদিন ধরে এ সম্পত্তি অব্যবহৃত রাখায় ২০০৯ সালে তৎকালীন ঢাকা জেলা প্রশাসক এ সম্পত্তি পুনঃগ্রহণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে পুনঃগ্রহণের গেজেট প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি মতে- সাবেক মিরপুর (বর্তমান পল্লবী) থানাধীন বাউনিয়া মৌজার সিএস ৩১০১, ৩১০২, ৩১০৩, ৩১০৪, ৩১০৫, ৩১০৬, ৩১০৭, ৩১২১, ৩১২২, ৩১২৩ ও ৩১২৪ দাগের ১ একর ৬৫ শতাংশ পুনঃগ্রহণ করা জমির পরিমাণ ১৬ একর ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের সম্পত্তির পরিমাণ ১০ একর ১৮ শতাংশ। জাগৃকের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ঢাকা উপবিভাগ-২, ঢাকা ডিভিশন-১) মো. সাখাওয়াত হোসেন গত বছরের ৩০ নভেম্বর পল্লবী থানায় করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, জাগৃকের ঢাকা ডিভিশন-১ কর্তৃক ‘মিরপুরস্থ ৯নং সেকশনে ১৫টি ১৪ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (স্বপ্ননগর ২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের জমি জাগৃক এলএ কেস নম্বর-৫/৭২-৭৩ মূলে অধিগ্রহণকৃত ও গেজেটভুক্ত। মাটি কেটে এই প্রকল্পের কাজ শুরুর পর হ্যাভেলী গ্রুপ নামীয় একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থানীয় ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জমিটিতে জোরপূর্বক অবৈধ অনুপ্রবেশ, দখলের অপচেষ্টা ও সরকারি নির্মাণকাজে বাধা প্রদান এবং প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্টদের হত্যা ও গুমের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও জানানো হয় অভিযোগে। এমএ আউয়ালকে ভূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে গতকাল একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, সাবেক এমপি এমএ আউয়াল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার বলে মিরপুর ১২ পল্লবী থানা ডিওএইচএস সংলগ্ন বাউনিয়া মৌজায় সিএস ৩১০১, ৩১০২, ৩১০৩, ৩১০৪, ৩১০৫, ৩১০৬, ৩১০৭, ৩১০২১ নং দাগে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে শত শত লোকের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস, রাজউক, জাগৃকসহ সব জায়গায় সক্রিয় আউয়াল সিন্ডিকেট। ফলে সরকারের অধিগ্রহণ করা জমি রেজিস্ট্রি দিয়েছেন আউয়াল। অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর নামজারি মিউটেশন খাজনা-খারিজও হয়েছে। কিন্তু এমএ আউয়াল জমি বুঝিয়ে না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করছেন।

এমএ আউয়ালকে ভূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে গতকাল একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, সাবেক এমপি এমএ আউয়াল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার বলে মিরপুর ১২ পল্লবী থানা ডিওএইচএস সংলগ্ন বাউনিয়া মৌজায় সিএস ৩১০১, ৩১০২, ৩১০৩, ৩১০৪, ৩১০৫, ৩১০৬, ৩১০৭, ৩১০২১ নং দাগে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে শত শত লোকের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস, রাজউক, জাগৃকসহ সব জায়গায় সক্রিয় আউয়াল সিন্ডিকেট। ফলে সরকারের অধিগ্রহণ করা জমি রেজিস্ট্রি দিয়েছেন আউয়াল। অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর নামজারি মিউটেশন খাজনা-খারিজও হয়েছে। কিন্তু এমএ আউয়াল জমি বুঝিয়ে না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করছেন।

মির্জা আব্দুল খালেক নামে টাঙ্গাইলের এক ভুক্তভোগী গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, ঢাকার বুকে একটু জমি পাওয়ার আশায় সারা জীবনের সঞ্চিত সর্বশেষ সম্বল দিয়ে ২০১৪ সালে এমএ আওয়ালের কাছ থেকে বাউনিয়া মৌজার ৩১০৪ নম্বর দাগে ৫ কাঠা জমি কিনেছি। কিন্তু তিনি সে জমি বুঝিয়ে না দিয়ে নানা টালবাহানা করছেন। আমি দুইবার খাজনা দিয়েছি। এখন ভূমি অফিসে গেলে বলে, এই জমি সরকারের, খাজনা নেওয়া যাবে না। আমার মতো আরও অনেকেই এভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। জমি বুঝে নিতে গেলে এমএ আউয়ালের লোকজন নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখায়; মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

রাজধানীর কলাবাগান থানায় দায়ের করা প্রতারণা মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী রাজীব কায়সার উল্লেখ করেন, সাবেক সংসদ সদস্য এমএ আউয়ালের প্রতিষ্ঠান হ্যাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপার লিমিটেড থেকে রাজীব কায়সার ২৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি ক্রয় করার জন্য চুক্তি করেন। পরবর্তী সময়ে মিরপুর রেজিট্রি অফিসে গিয়ে তা দলিল করেন। মামলার বাদী ভূমি অফিসে খাজনা পরিশোধ করতে গেলে দেখেন, এ নামে কোনো জমিই নেই। রাজীব টাকার জন্য চাপ দিলে তিনটি চেক প্রদান করা হয়। চেকের টাকা নগদায়ন করতে গেলে চেক ডিজঅনার হয়। পরবর্তী সময়ে রাজীব টাকা চাইলে তাকে হত্যা ও গুমের হুমকি দেন আসামিরা। এমএ আউয়াল ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- হ্যাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপার লিমিটেডের অ্যাকাউটেন্ট নব কুমার ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর আব্দুস সালাম। অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে এমএ আউয়াল, নব কুমার ও আব্দুস সালামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি।

এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার এমএ আউয়ালকে তিন দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার এসআই সুলতানউদ্দিন খান। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। মামলার বাদী রাজীব কায়সার আদালতে হাজির হয়ে বলেন, আমাদের মধ্যে আপস হয়ে গেছে। তিনি (আউয়াল) জামিন পেলে আপত্তি নেই। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাগীব নূর আপসের শর্তে এক হাজার টাকা মুচলেকায় আউয়ালের জামিন মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, বাউনিয়া মৌজার সরকারি এই জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের ১৪ মে রাজধানীর পল্লবীতে শিশুপুত্রের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ব্যবসায়ী শাহিন উদ্দিনকে হত্যার মাস্টারমাইন্ডও সাবেক এমপি আউয়াল। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকা-ে দায়ের মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়- আউয়ালের নির্দেশেই ৩০ লাখ টাকার চুক্তিতে খুন হন শাহিন উদ্দিন। ঘটনার পর আউয়ালকে ফোন করে- ‘স্যার ফিনিস’ বলে জানায় হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ নেতা সুমন ব্যাপারী। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়ায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও বিষয়টি জানিয়েছেন সুমন। সরকারি এই সম্পত্তি জবরদখলকে কেন্দ্র করে শাহিন উদ্দিন হত্যাকা-সহ তিনটি (বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজছাত্র চঞ্চল এবং চঞ্চল হত্যাকা-ের অন্যতম আসামি মোমিন বক্স) হত্যাকা- ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *