মোঃ মাহবুব আলম চৌধুরী জীবন : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে হাত বদল হয়েছে চাঁদাবাজি, দখলবাণিজ্য ও চোরাচালানের। আগে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে অপকর্মের কুশীলবরা দাপিয়ে বেড়ালেও এবার এই স্থান দখলে নিয়েছেন সুযোগ সন্ধানীরা। নদীতে পাথর বালি লুটপাট, সীমান্তের চোরাচালান, সবকিছুতেই শুরু হয়েছে নতুন মুখের খবরদারি। সঙ্গে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনিক আনুকূল্য। প্রতিদিন আদায় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব চাঁদার টাকা বণ্টন হচ্ছে সুষমভাবে। পুলিশ, উপজেলা প্রশাসনের কয়েক ব্যক্তি, স্থানীয় দালাল মাতবর, কথিত সংবাদকর্মী সবাই ভাগ পাচ্ছে নিয়মিত। বিনিময়ে শান্তিপূর্ণভাবে লুট হচ্ছে সরকারি সম্পদ, সীমান্ত দিয়ে বানের পানির মতো নেমে আসছে চোরাই পণ্য। নেই কোনো প্রতিবন্ধকতা কিংবা প্রতিকার।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরিবেশ এবং প্রতিবেশগতভাবে বিপন্ন এলাকা ঘোষিত শাহ আরেফিন এলাকার টিলা ধ্বংস করে পাথর অপসারণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই রাতের আঁধারে চলছে টিলা ধ্বংস করে পাথর লুটের মহোৎসব। লুটপাট নির্বিঘ্ন রাখতে পুলিশ ও বিজিবির নামে এখানে আদায় হয় মোটা অংকের বখরা। কোম্পানীগঞ্জ থানার একজন এসআই’র নেতৃত্বে এখানকার রাতের সামগ্রিক তত্ত্বাবধান চলে। তারা জানান, ভোর হওয়ার আগেই লুটকৃত পাথর ট্রাকে করে সদর উপজেলার ধোপাগুল এবং নদীপথে ছাতক দিয়ে স্থানান্তর করা হয়। অনুরূপভাবে ধলাই নদীর সাদাপাথর, দশ নম্বর এবং সংরক্ষিত রেলওয়ে এলাকা থেকে শত শত নৌকা করে পাথর ও বালু নির্বিঘ্নে নিয়ে যাচ্ছে লোকজন। এসব নৌকা থেকেও পুলিশও বিজিবির নাম ভাঙিয়ে আদায় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ব্যাপকভাবে চলা এসব লুটপাট ও চাঁদাবাজি নিয়ে পত্রিকায় দৃশ্যমান সংবাদ প্রকাশ না হওয়ায় রমরমা উৎসবমুখর জমজমাটে শুরু হয়ে ওঠে চোরাচালান, পাথর ও বালু লুট।
এদিকে সীমান্তে চোরাচালান তৎপরতার নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে নতুন কুশীলবদের তত্ত্বাবধানে তা বেপরোয়াভাবে চলমান রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের পক্ষ থেকে কুশীলব নির্বাচন করে চোরাই ঘাটের দায়িত্ব দেয়া হয়। এসব ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সীমান্তে দিনেরাতে তৎপর থেকে ভারতীয় চিনি, মাদক এবং গরু সিন্ডিকেটের কাছ থেকে প্রতিদিন আদায় করে মোটা অংকের টাকা। এ সবকিছু প্রকাশ্যে চললেও প্রশাসনের মদত থাকায় এদের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দটি করার সাহস পায় না।
সম্প্রতি এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় কয়েক ছাত্র সমন্বয়ক সোচ্চার হলে তাদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন- প্রকাশ্যে দিনের বেলায় লুটকৃত পাথরের ট্রাক আটকে পুলিশ টাকা আদায় করে। সড়কে প্রকাশ্যেই চলে পুলিশের এহেন অপকর্ম। এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ‘শুনেছি শাহ আরেফিনে অপকর্ম হচ্ছে, বিষয়টি নলেজে আছে।’ তিনি জানান, ‘তিনি থানায় নতুন পদায়িত হয়েছেন, এখনো লাইনঘাট পুরো আত্মস্থ হয়নি। এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আবিদা সুলতানার সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি পরবর্তী ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন আমি একা কি করবো পুলিশ কিংবা বিজিবি কেউ তেমন সহযোগিতা করতে চায় না বলে এখন ব্যস্ত আছেন বলেই ফোন রেখে দেন।