কুমিল্লায় রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন পালিত

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

তাপস চন্দ্র সরকার (কুমিল্লা)  : সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের আপনজনের মঙ্গল কামনায় রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ব্রত পালিত হয়। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর ২০২৪) দ্বিতীয়দিনে কুমিল্লা মহানগরীর লাকসাম রোডস্থ মহেশাঙ্গণে লোকনাথের আরাধনায় নিমগ্ন থেকে এই ব্রত পালন করেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত হাজারো লোকনাথ অনুসারী ভক্ত ও পূর্ণ্যাথী।


বিজ্ঞাপন

এ সময় প্রদীপ, ধুপ, ফল, ফুল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে মগ্ন থাকেন আরাধনায়।
জানা যায়- প্রাণঘাতী রোগ কলেরা-বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাস পালন এবং আশ্রম প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে বিপদ-আপদ, রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে ও আপনজনের কল্যাণ কামনা করে লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা পালন করে থাকেন ‘রাখের উপবাস’। কার্তিক ব্রত কোন কোন স্থানে ‘গোসাইর উপবাস’ নামেও পরিচিত এই ব্রত। প্রতি বছরের ১৫ কার্তিকের পর মাসের বাকি সময়ের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার লোকনাথ অনুসারীরা এই ব্রত পালন করেন। প্রতিবছর ঘটা করে এ উৎসব পালিত হয়। বিকেল ৩টা হতেই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা মহেশাঙ্গণে এসে জড়ো হন।


বিজ্ঞাপন

কুমিল্লা মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সভাপতি ননী গোপাল পাল এবং শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- এই ব্রতের আগের দিন সংযম করতে হয়।

তারপর উপবাস থেকে সন্ধ্যায় আগে ধূপ-প্রদীপ ইত্যাদি নিয়ে বসতে হয়। আরাধনায় বসে প্রদীপ জ্বালানোর পর কথা বলা বন্ধ করে দিতে হয়।

সংযম, মনোব্রতের মাধ্যমে একাগ্রচিত্তে লোকনাথকে ডাকতে হয়। প্রদীপ আলো নিভে গেলে মন্দির থেকে ফলফলাদি ও চড়ুই প্রসাদ দেওয়া হয় পূণ্যার্থীদের। তারা বলেন- আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি লোকনাথ যুব সেবা সংঘের প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

মহেশাঙ্গণে আসা একজন ব্রতী এডভোকেট সংগীতা চক্রবর্তী বলেন, আমি আজকে উপবাস থেকে আমার পরিবারের সকলের মঙ্গল কামণাসহ আপনজনের মঙ্গল কামনায় এখানে এসেছি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে। ওই অনুষ্ঠানে পুরোহিত্য করেন বিজন চক্রবর্তী এবং তাকে সহযোগী পুরোহিত সমর চক্রবর্তী ও অমূল্য চক্রবর্তী।এতে বাবার লোকনাথের পাঁচালী পাঠ করেন অধ্যাপক শ্যামা প্রসাদ ভট্টাচার্য।

এ-সময় উপস্থিত ছিলেন- মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সহ-সভাপতি প্রলয় সিংহ, উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক স্বপন কুমার দাস, নিখিল চন্দ্র সাহা, প্রেমানন্দ সাহা, সমীর চন্দ্র দাস, নিতাই সরকার, অমল চন্দ্র সাহা, সুদেশ দেবনাথ, স্বপন ভট্টাচার্য, রঞ্জিত দেবনাথ, টিটুল সাহা, কমল চন্দ খোকন, জয়ন্ত দেবনাথ বাপ্পা এবং শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সভাপতি নয়ন দেবনাথ, সাবেক সভাপতি পরিমল চন্দ্র পাল, সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার নাগ কানাই, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার দাস (সঞ্জু), সিনিয়র সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার, সদস্য সুব্রত চক্রবর্তী (বাবু), দেবব্রত চক্রবর্তী (দ্বীপ), সুজন মোদক, হরিদাস, শ্রী কেশব চক্রবর্তী এবং অফিস সহকারী সুদ্বীপ পালসহ মহেশাঙ্গণ লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘ ও লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সদস্যবৃন্দ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত হাজার হাজার দর্শণ্যার্থী।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *