“বৈধ’ ব্যবসার আড়ালে অবৈধ, অপরাধমূলক তৎপরতা চালিয়েই তারা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক :  এনাম দম্পতির বিরুদ্ধে  দুদকের অনুসন্ধান শুরু 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

!!  অপরাধলব্ধ অর্থে গড়ে তুলেছেন অন্তত:৭টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মেডিকেল সনদ বিক্রি করে দু’হাতে লুটছেন অর্থ। হুন্ডি ও জাল-জালিয়াতির কারণে যখনই তারা কোনো বিপদে পড়েন তখন দ্বারস্থ হতেন আ’লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। ছুটে যান ডা: এইচবিএম ইকবাল কিংবা বিতর্কিত ব্যবসায়ী নূর আলীর কাছে। অফিসে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ এলাকার যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান হান্নানের সহযোগিতা নেন। ফলে শেখ হাসিনা রেজিমের পুরো সময় জুড়ে তিনি হুন্ডি ও জাল মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট বাণিজ্য চালিয়েছেন নির্বিঘেœ। এ সময় তিনি দু’হাতে কামিয়েছেন অর্থ। নামে- বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট। যার ঠিকানা: ক-১১। রোড-১৩, কালাচাঁদপুর, গুলশান-১২১২, ঢাকা। বাড়ির নাম ‘শিশির’ । প্লট নং-২০/১/৪, ব্লক-জি, রোড। সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান রোড, বসুন্ধরা আবাসিক, ঢাকা। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় (বাংলাদেশ প্রতিদিন) পত্রিকা অফিসের বিপরীতে কিনেছেন ফ্ল্যাট। ২০১৮ সালে শাওন নামের কর্মীর কাছ থেকে নামমাত্র অর্থে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়েছেন-মর্মে অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউস্থ ৩৪, আউয়াল সেন্টারের ১৫ তলায় কমার্শিয়াল স্পেস। উত্তরায় ২টি বাড়ি। বাড়ি-১৯, রোড-৭, সেক্টর-৪। জসীম উদ্দিন সার্কেল, উত্তরা, ঢাকা। এটিতে অটবির শো-রুম হিসেবে ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে রয়েছে আরেকটি বাড়ি। রাজধানীর ক-১১, রোড-১৩, কালাচাঁদপুর, গুলশান-১২১২-এ রয়েছে বাড়ি। রাজধানীর বসুন্ধরা সংলগ্ন ৩শ’ ফিট এলাকায় রয়েছে ৩০ কাঠার বাণিজ্যিক প্লট। রাজধানীর বনানীতে ১০ কাঠার প্লটের ওপর বাড়ি। লক্ষ্মীপুর সদরে দালালবাজার এলাকায় রয়েছে তার বিপুল বেনামী সম্পত্তি। গ্রামের বাড়ি রংপুরের মাহীগঞ্জ দেওয়ানটুলিতে পৈত্রিক ভিটায় ভবন। নিজ এলাকায় নামে- বেনামে বিপুল সম্পদতো রয়েছেই  !!


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক  : মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রফতানি করেন তারা। রয়েছে এয়ার টিকিটিং বিজনেসের অফিস। প্রবাসে চাকরি প্রত্যাশীদের ‘মেডিকেল চেক-আপ’র ব্যবসাও রয়েছে দৃশ্যত। কিন্তু মূল যে ‘কাজ’ সেটির কোনো অফিস নেই। নেই দৃশ্যমান কোনো কাজবাজ।


বিজ্ঞাপন

দিনে-দুপুরে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগায়ই সেটি চলছে সেটি। বাহ্যত: জীবীকা নির্বাহ এবং সহায়-সম্পত্তি অর্জনের মতো মৌলিক নাগরিক অধিকারকে সামনে রেখেই চলছে বেআইনি,অবৈধ ও ভয়াবহ সেই কাজ-কারবার। হ্যাঁ। হুন্ডি করছেন তারা। করছেন অর্থ পাচার। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স হুন্ডির মাধ্যমে দেশে আনছেন তারা।

জমা হচ্ছে ‘কোম্পানি’র অ্যাকাউন্টে। হুন্ডিতে আসা সেই অর্থ অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সঙ্গে পৌঁছে দিচ্ছেন প্রবাসীদের স্বজনদের ঠিকানায়। প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার সমান্তরাল নিজেরাই গড়ে তুলেছেন লেনদেনের ‘নিজস্ব চ্যানেল’। গুরুতর অপরাধমূলক এই কার্যক্রম তারা পরিচালনা করছেন দীর্ঘদিন ধরে, অত্যন্ত সাবলীলভাবে। ‘বৈধ’ ব্যবসার আড়ালে অবৈধ, অপরাধমূলক তৎপরতা চালিয়েই তারা এখন কোটি কোটি টাকার ওমালিক। বিস্তৃত করছেন অবৈধ সম্পদ-সা¤্রাজ্য। আর যাদের বিষয়ে এসব তথ্যের অবতারণা তারা আর কেউ নন। ‘নোমান এসোসিয়েটস লি:’ (আর.এল-৮৫৪), ‘স্মার্ট কেয়ার করপোরেশন’ এবং ‘এনাম ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’ সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিক এনাম আহমেদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী শিশির রহমান।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানায়, অস্বচ্ছ, অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে ‘বিএফআইইউ’ এ দুই ব্যক্তি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর নজরদারি করছিলো। বিষয়টি ‘খতিয়ে দেখা’র জন্য সম্প্রতি এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠায়। সদ্য বিদায়ী মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহর কমিশন এনাম আহমেদ চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিষয়ে গোপন অনুসন্ধান অনুমোদন করেন। এ প্রেক্ষিতে দুদকের মানিলন্ডারিং বিভাগ একজন সহকারি পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম করে দেয়।এ টিম নেমেছে অনুসন্ধানে।

সূত্রমতে, বিএফআইইউ’র তাদের প্রতিবেদনে এনাম-শিশির দম্পতির ব্যক্তিগত এবং প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত অ্যাকাউন্ট নম্বর উল্লেখ করে এসবে বিভিন্ন সময় সম্পাদিত লেনদেনের তথ্য দেয়।

অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে :  (৷1)Noman Associates Ltd. Account Number: 104 111 0008 2318 Primier Bank PLC, Branch: Banani

(2) Ishtiyaq Medical Center, Account number: 104 111 000 79122 Primier Bank PLC, Branch: Banani
(3)Enam Ahmed Chowdhury RFCD –USD Account Number: 104 157 000 03713 Primer Bank PLC, Branch: Banani
(4) Smart Medical Centre, Account Number: 104 111 000 82447, Primier Bank PLC, Branch: Banani
(5) Nazowa Medical Centre , Account Number: 105 111 000 82542, Primier Bank PLC, Branch: Banani
(6) Noman Associates Ltd, Account Number: 150 720 450 675 1001 (Closed),Brac Bank PLC, Branch: Banani (7)
Enam Tours & Travles, Account Number: 150 720 422 497 2001 (Closed), Brac Bank PLC, Branch: Banani (8) Enam Tours & Travles, Account Number: 026 33 100881 (Closed), Standard Bank PLC, Branch: Banani.
(9) Noman Associates Ltd. Account Number: 2045067510002 Brac Bank PLC, Branch: Banani,
(10) Enam Tours & Travles ,Account Number: 1503992933001City Bank PLC, Branch: Basundhara|

সূত্রমতে, এসব অ্যাকাউন্টের দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডির টাকা রাখা হচ্ছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকের গুলশান শাখায় ‘ নোমান এসোসিয়েট লি:’ এবং ‘স্মার্ট কেয়ার করপোরেশন’ নামক অ্যাকাউন্ট দু’টিতে এনাম আহমেদের ট্রানজেকশন লিমিট মাত্র ৭/৮ কোটি টাকা। অথচ তার অধিকাংশ লেনদেনই লিমিট অতিক্রম করে যায়। উত্তোলনকৃত টাকা কোন্ খাতে খরচ করেন-তার কোনো হিসেবে তার কাছে নেই। খরচের উপযুক্ত খাত কিংবা ভাউচার দেখাতে পারবেন না। মূলত: এ টাকাই হুন্ডির টাকা। টাকাগুলো উত্তোলন করে তিনি বিশ্বস্ত কর্মচারিদের মাধ্যমে প্রবাসীদের স্বজনদের নিরাপদ ঠিকানায়।

চলতিবছর আগস্টেও তার সিটি ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখার অ্যাকাউন্টে (নং- ১৫০৩৯৯২৯৩৩০০১) দুই কোটি টাকা স্থিতি ছিলো। এ টাকা তার মেডিকেল সেন্টারের আয় বলে দাবি করলেও আয়কর নথিতে (টিআইএন নং- ৪৭৮২ ৭২৪২ ৮৬২০) প্রদর্শন করেন নি। শুধু তাই নয়-অপরাধলব্ধ আয়ের কোনো অর্থই তিনি ট্যাক্স ফাইলে দেখান না। কয়েক বছর আগে রাজধানীর ৩শ’ ফিট সংলগ্ন প্রায় ২৪ কাঠা আয়তনের প্লটটি কেনেন সম্পূর্ণ কালো টাকায়। কোন্ উৎস থেকে তিনি এ অর্থ উপার্জন করলেন, ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ নেই। সম্পত্তিটির অস্তিত্বই ট্যাক্স ফাইলে গোপন রাখা হয়েছে।

শুধু হুন্ডি ব্যবসাই নয়-এই অপরাধলব্ধ অর্থে গড়ে তুলেছেন অন্তত:৭টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মেডিকেল সনদ বিক্রি করে দু’হাতে লুটছেন অর্থ। হুন্ডি ও জাল-জালিয়াতির কারণে যখনই তারা কোনো বিপদে পড়েন তখন দ্বারস্থ হতেন আ’লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। ছুটে যান ডা: এইচবিএম ইকবাল কিংবা বিতর্কিত ব্যবসায়ী নূর আলীর কাছে। অফিসে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ এলাকার যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান হান্নানের সহযোগিতা নেন। ফলে শেখ হাসিনা রেজিমের পুরো সময় জুড়ে তিনি হুন্ডি ও জাল মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট বাণিজ্য চালিয়েছেন নির্বিঘেœ। এ সময় তিনি দু’হাতে কামিয়েছেন অর্থ। নামে- বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

অবৈধ সম্পদের তালিকায় রয়েছে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট। যার ঠিকানা: ক-১১। রোড-১৩, কালাচাঁদপুর, গুলশান-১২১২, ঢাকা। বাড়ির নাম ‘শিশির’ । প্লট নং-২০/১/৪, ব্লক-জি, রোড। সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান রোড, বসুন্ধরা আবাসিক, ঢাকা। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় (বাংলাদেশ প্রতিদিন) পত্রিকা অফিসের বিপরীতে কিনেছেন ফ্ল্যাট। ২০১৮ সালে শাওন নামের কর্মীর কাছ থেকে নামমাত্র অর্থে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়েছেন-মর্মে অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউস্থ ৩৪, আউয়াল সেন্টারের ১৫ তলায় কমার্শিয়াল স্পেস। উত্তরায় ২টি বাড়ি। বাড়ি-১৯, রোড-৭, সেক্টর-৪। জসীম উদ্দিন সার্কেল, উত্তরা, ঢাকা। এটিতে অটবির শো-রুম হিসেবে ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে রয়েছে আরেকটি বাড়ি। রাজধানীর ক-১১, রোড-১৩, কালাচাঁদপুর, গুলশান-১২১২-এ রয়েছে বাড়ি। রাজধানীর বসুন্ধরা সংলগ্ন ৩শ’ ফিট এলাকায় রয়েছে ৩০ কাঠার বাণিজ্যিক প্লট। রাজধানীর বনানীতে ১০ কাঠার প্লটের ওপর বাড়ি। লক্ষ্মীপুর সদরে দালালবাজার এলাকায় রয়েছে তার বিপুল বেনামী সম্পত্তি। গ্রামের বাড়ি রংপুরের মাহীগঞ্জ দেওয়ানটুলিতে পৈত্রিক ভিটায় ভবন। নিজ এলাকায় নামে- বেনামে বিপুল সম্পদতো রয়েছেই।

এদিকে অনুসন্ধান সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় দুদক সচিব খুরশিদা ইয়াসমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এসে থাকলে কমিশন নিশ্চয়ই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজনবোধ করলে অনুসন্ধান কর্মকর্তা আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যদিও মানিলন্ডারিং শাখা এ বিষয়ে কনসার্ন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনাম আহমেদ চৌধুরীর সাথে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে  টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যম কর্মী কে   বলেন যে, আপনার মুখেই বিষয়টি মাত্র জানতে পারলাম। দুদক যদি এটির অনুসন্ধান করে, কোনো অসুবিধা নেই। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চিঠিপত্র পাইনি। পেলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *