বিশেষ প্রতিবেদক : প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক গ্রেড-১, ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হক নিয়মিত চাকুরী শেষে আগামী ৩০/১২/২০২৪ ইং তারিখে অবসরে যাবেন। মন্ত্রণালয় ইতোমধো সে মর্মে প্রজ্ঞাপন জারী করেছে। প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রায় সকল পর্যায়ের কর্মকতাদের ইচ্ছা ছিল অভিজ্ঞ ডায়নামিক ডিজি হিসাবে পরিচিত ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হককে সরকার পরবর্তী ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিক।
সেজন্য প্রায় সকল পর্যায়ের সিনিয়র কর্মকতারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফরিদা আক্তারের সংগে দেখা করে তাদের মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টাও তাৎক্ষনিক তাদের সাথে সহমত প্রকাশ করেন এবং বর্তমান ডিজি যে একজন যোগ্য, কর্মঠ ও দক্ষ কর্মকর্তা তা স্বীকার করেন। অথচ: বর্তমান ডিজিকে অবসরজনিত কারণে ডা: আবু সুফিয়ান নামক এক কর্মকতাকে ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বর্তমান গ্রেডেশন অনুযায়ী দ্বিতীয়। তিনি বিগত সরকারের পুরো সময়টাই অধিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। তিনি সাবেক আওয়ামীপন্থী ডিজিদের আজ্ঞাবহ কর্মকতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করায় অধিদপ্তরের বাইরে বদলী হতে হয়নি। এই ডা: আবু সুফিয়ান ই অধিদপ্তরে মুজিব কর্ণার নির্মাণের উদ্যোক্তা এবং অর্থ প্রদানকারী। তিনি সর্বাধিক দুনীতিবাজ কর্মকতা হিসাবে পরিচিত। তিনি একটি কারিগরী প্রকল্পের পিডির দায়িত্ব পালন কালে সমুদয় (৪ কোটি ) টাকাই আত্মসাৎ করেছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হক ( জসিম) ১৯৮৮-৮৯ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুল হক হলের ছাত্র দলের সাধারন সম্পাদক এবং ১৯৯০ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৮৭ সালে ডিভিএম এ প্রথম শ্রেনী প্রাপ্ত এবং ১৯৮৯ তে এমএসসিতেও ভাল রেজাল্ট করেন। তিনি বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কেন্দ্রীয় পশুহাসপাতালে চাকুরীতে যোগদান করেন । পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপির রাজনীতি করার জন্য তাকে চট্রগ্রামের পারবর্ত্য এলাকায় বদলী করা হয় এবং বিগত প্রায় ১৪ বসরেরও অধিক সময়ে ঢাকার বাইরে চাকুরী করেন। তবে তিনি যেখানেই চাকুরী করেছেন সেখানেই সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি ঐ সময়েও বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেছেন।
২০২১ সালে যখন বাজারে ডিম, মুরগী, গরু, ছাগলের মাংসের দাম বৃদ্ধি এবং বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকার হিমশিম খাচ্ছিল তখন তৎকালীন মন্ত্রী একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ কর্মকতা হিসাবে ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হককে পরিচালক উৎপাদন হিসাবে ঢাকায় বদলী করে আনেন।
পরিচালক উৎপাদন হিসাবে যোগদানের পর তিনি উদ্ধর্তন কর্মকতাদের সাথে পরামর্শ ক্রমে নিজস্ব পরিকল্পনায় খুব অল্প সময়ের মধো বাজার নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হন। তিনি পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিন হতে ট্রাকের মাধ্যমে ন্যয্য মূল্েয ডিম, দুধ, খাসী ও গরুর মাংস বিক্রির মাধ্েয বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রন করেন। এতে অনেক মুনাফা লোভী খামারী মালিকদের কুনজরে পড়েন ।
যারা আজও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা করে বেড়াচ্ছেন । তিনি ডিজির দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই জামাত / বিএনপিপন্থী ভুক্তভোগী শতাধিক কর্মকতাকে তাদের সুবিধা মোতাবেক পদায়ন করেছেন। তাঁরই একক প্রচেষ্টায় পদোন্নতি বঞ্চিত একাধিক কর্মকতাকে ডিপিসি/ এসএসবির মাধ্যমে পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছেন। যা অধিদপ্তরের সকলেই অবহিত আছেন।
একাধিক সুত্রমতে, বর্তমান ডিজি জুলাই/ আগষ্ট এর আন্দোলন কালে আন্দোলনকারীদের এবং আন্দোলনে নিহত/ আহতদের আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তিনি বিগত ৪ঠা জুলাই আওয়ামী সরকারের কথিত শান্তি মিছিলে বিভাগীয় প্রধান হিসাবে যোগদান করলেও বিএনপি/ জামাতপন্থী কোন কর্মকতাকে যোগদানে বাধ্য করেননি। উপরন্তু তাদেরকে দুরে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন যা অধিদপ্তরে কর্মরত বিএনপি/ জামাতপন্থী কর্মকতারা সকলেই স্বীকার করেন। আর এজন্য ৫ই আগষ্ট এর পটপরিবর্তনের পর সকল অধিদপ্তর / দপ্তরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা তো ঘটেইনি উপরন্ত মহাপরিচালকের রুমে বসে সকলে মিষ্টি খেয়েছিলেন।
সুত্রটি আরো জানায়,বর্তমান উপদেষ্টাই ডিজির কাজে খুশী হয়ে তাকে গ্রেড -১ পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য এসএসবিতে প্রস্তাব প্রেরন করেন এবং ডিজি গ্রেড -১ পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। বর্তমানে অধিদপ্তরের সকল পর্যায়ের কর্মকতা-কর্মচারীদের দাবী- প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান ডিজিকে ২ বসরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দান করা হোক। এ বিষয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুস এর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।