বাহুবল প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের আলাপুর গ্রামের অলি মিয়া (২৬) নামে এক যুবককে অপহরণের ৩দিন পর পুটিজুরী ইউনিয়নের নোয়াঐ গ্রাম থেকে উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়। এর পর পরই ভিক্টিমের চাচা লাল মিয়া বাদী হয়ে জড়িত ৫জনকে আসামী করে বাহুবল থানায় এজাহার দেন।

ভিক্টিম অলি মিয়া পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। এজাহার পেয়ে ৩ আসামীকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু এঘটনা জানাজানি হলে আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য থানায় তদবিরে আসেন বিএনপি নেতা সুজনসহ কয়েকজন। আসামীরা হলেন- নোয়াঐ গ্রামের রফান আলী (৪০), মকদ্দুছ মিয়া (৫০), নিজাম উদ্দিন (৪৫), ছোট মিয়া (৪০) ও বর্তমান ইউপি মেম্বার সোনাই মিয়া (৫০)।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে স্থানীয় মুদাহরপুর গ্রামের মুসলিম মিয়ার কাছ থেকে নির্মাণ সংক্রান্ত কাজের বায়না বাবদ নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি আসার উদ্দেশ্যে নোয়াঐ গ্রামের নিকট পশ্চিমে পৌছামাত্রই আসামীরা তাকে অস্ত্রের মুখে আটক করে ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট লুটে নিয়ে তাকে রাতেই রফান আলীর নির্জন বাড়িতে মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে আটক করে রাখে।
এরই মাঝে অলি মিয়াকে না পেয়ে তার পরিবার থানায় নিখোজের অভিযোগ দিয়ে রাখেন। কিন্তু আসামীরা অবস্থা বেগতিক দেখে নিজেদের রক্ষা করতে ভিক্টিম অলি মিয়াকে পুটিজুরী তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে বাহুবল থানা পুলিশ অলি মিয়াসহ ৩ আসামীকে বাহুবল থানায় নিয়ে আসেন।
সেখানে অলি মিয়ার প্রতি আসামীদের কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে পরিবারের জিম্মায় দেয় পুলিশ। এর পর পরই ভিক্টিমের চাচা লাল মিয়া বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণের লিখিত অভিযোগ দেন। তাদের ছাড়িয়ে নিতে বিএনপি নেতা সুজন থানায় এসআই সনত বাবুর সাথে যোগাযোগ করলে আসামীদের ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কিন্তু বাদী পক্ষের অনিহার কারণে দীর্ঘক্ষণ অতিবাহিত হয়। এক পর্যায়ে ভিক্টিম পক্ষ এসআইয়ের চাপের কাছে হেরে যান। ভিক্টিম অলি মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান, এসআই সনত দেব ফোন করে থানায় যেতে বললে তিনি বাড়ি চলে গেছেন। আমার তো আর থানায় যাবার দরকার নেই। এ কথা বলার সাথে সাথেই এসআই সনত তাকে ধরে আনতে বেশি সময় লাগবে বলে হুমকি দেন।
এ ঘটনায় বাহুবলের সচেতন মহলের মাঝে কয়েকটি প্রশ্নের অবতারণা হয়। ভিক্টিম অলি মিয়াকে কারা ৩তিন অপহরণ করে আটকে রাখে? অপহরণের আসামীদের ছেড়ে দিল কেন? অপহরণের অপরাধ কি আপোসযোগ্য নাকি অপোস অযোগ্য অপরাধ?
পুলিশ তদবিরে নত হল কেন? এ নিয়ে শনিবার থানার ভেতরে সামাজিক বিচারের তারিখ ধার্য্য হয়েছে। তাহলে থানা কি আপোস অযোগ্য অপরাধের সামাজিক বিচার করতে পারে? এসব প্রশ্নের উত্তর থানা পুলিশ কিভাবে দেবে বাহুবলবাসীকে। এই প্রত্যাশাই করছেন অনেকে।
আবার এমন কিছু রসিক ব্যক্তি বলেই ফেললেন- আমরা সাড়ে ১৫ বছরের পর আবারো কোন পথে যাচ্ছি? এ বিষয়ে মুঠোফোনে এসআই সনত দেবের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য না দিয়ে থানায় গিয়ে দেখা করতে বলেন। এ বিষয়ে থানার ওসি জাহিদুল ইসলামের কাছে জানতে তিনি তাৎক্ষণিক বক্তব্য না দিয়ে পরে জানাবেন বলে ফোন কেটে দেন।