নড়াইলের মুর্তিমান আতংক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হেলালের ক্যাশিয়ার ও সাবেক সাংসদ কবিরুল হক মুক্তির আমলনামা !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক :   নড়াইল জেলার এক ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীর নাম বি এম কবিরুল হক মুক্তি। তার পিতার নামঃ মৃত এখলাছ উদ্দীন বিশ্বাস, গ্রাম: বেন্দারচর, ডাকঘর: কালিয়া, উপজেলা: কালিয়া, জেলা: নড়াইল। ২০০৯ সাল থেকে ০৫/০৮/২৪ তারিখ পর্যন্ত তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে এবং তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে হামিদপুর ইউনিয়নে দলীয় চেয়ারম্যান নাহিদসহ প্রায় ৫০ জন দলনেতাকর্মী নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

১৯৮৪ সালে বি এম কবিরুল হক মুক্তির বাবা সামাজিক ও বংশগত দ্বন্দে নির্মমভাবে নিহত হন। নিহতের পূর্বে কালিয়া বিএনপির নেতা নওয়াবের পিতাসহ ৩ জনকে হত্যার মূল আসামি হয়। একলাস বিশ্বাস আওয়ামী লীগ ছেড়ে বাকশালের রাজনীতি শুরু করে এবং গ্রাম্য কোন্দলে মারা যান।


বিজ্ঞাপন

একলাস বিশ্বাস মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা শোকসভায় গেলে মুক্তি বিশ্বাস পরিবারের ইঙ্গিতে শেখ হাসিনার হাত থেকে মাইকের মাউথ কেড়ে নেয় এবং নেত্রীর সঙ্গে চরম বেয়াদবি করে। এরপর মুক্তি বিশ্বাস পিতা হত্যার সুষ্ঠ বিচারের জন্য তৎকালীন সামরিক শাসক জে: এরশাদের দলে (জাতীয় পার্টি) যোগদান করে এবং তার বংশের লোকদের ফাঁসির কারাদন্ড থেকে রক্ষা করে।

এরশাদ সরকারের পতনের সাথে সাথেই টুকু বিশ্বাস ও মুক্তি বিশ্বাসরা আওয়ামী লীগে মিশে যায়। সুচতুর মুক্তি বিশ্বাস একদিকে বাকশাল নেতা আব্দুর রাজ্জাক অন্যদিকে শেখ হেলালের পায়ের নিকট বসে থাকা শুরু করেন। ১৯৯২ সালে বাকশাল আওয়ামী লীগে একীভূত হলে মুক্তি বিশ্বাস একদিকে রাজ্জাক কাকা অন্যদিকে শেখ হেলালের তোষামোদী করতে থাকে।

এ সময়ে মুক্তি বিশ্বাস ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় নেতাদের বাসায় এসে পিতার মৃত্যুর জন্য কান্নাকাটি করে অন্যদিকে পিতার হত্যাকারী বিএনপির নবাব, খলিলদের সাথে গোপন সমঝোতা করে চলতে থাকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বড় ভাই টুকু বিশ্বাসকে সরিয়ে মুক্তি বিশ্বাস কালিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। পৌরসভার চেয়ারম্যান হবার পর মুক্তি বিশ্বাসকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

পৌরসভার টেন্ডারবাজী, কাজ না করে বিল তুলে নেওয়া, কালিয়া পৌরসভার বিভিন লোকদের জিম্মি করে টাকা আদায় চলতে থাকে। ২০০৭ সালের ২২ শে জানুয়ারীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পৌরসভার মেয়র পদ থেকে মুক্তি বিশ্বাস দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়।

১/১১ এর প্রেক্ষাপটে নির্বাচন বাতিল হলে ২০০৮ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ও প্রতিক নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয় মুক্তি বিশ্বাস। তার রাজনৈতিক গুরু শেখ হেলালের প্রত্যক্ষ মদদে ও বিএনপি জামাতের ৩০% লোকের মুক্তি বিশ্বাসের পক্ষে ভোট দেয়ায় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। মেয়র পদ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সাংবিধানিক সংকটে পড়ে। পরে ডঃ শাহদীন মালিককে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শেখ হেলালের তদ্বিরে এমপি পদ রক্ষা করে।

২০০৯ সালে এমপি হবার পর থেকে নড়াইল জেলার রোডস এন্ড হাইওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিসের টেন্ডার, স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বদলী বাণিজ্য টি আর কাবিখার গম, চাল বিক্রি, উপজেলা চেয়ারম্যান পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি ক্যাডার বাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজি করা, স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির ডিও প্রদানে ঘুষ গ্রহন করে শতশত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অধিকারী হয়। বিগত ১৫ বছর ধরে শেখ হেলালের ক্যাশিয়ার হিসেবে অস্ত্র ও সোনা চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগষ্টের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।

তার সম্পদের খতিয়ান যথাক্রমে,  নড়াইল কালিয়ার বেন্দার চরের পৈত্তিক বাড়ীতে দ্বিতল ভবন নির্মাণ।  কালিয়া ডাকবাংলো সংলগ্ন ১ একর জমি ক্রয়।  নিরালা ১নং রোডে খুলনায় দ্বিতল বাড়ী।  খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে ৫ কাঠার ২টি প্লট।  রাজউকের ঝিলমিল প্রক্লপে ০৫ কাঠার ১টি প্লট।  আলাদাতপুর মৌজায় নড়াইল সদরে ১৫ শতক জমি ক্রয়।  ধানমন্ডী গুলশান ও বারিধারায় নামে বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট।  সলটলেক কলিকাতায় ৩০০০ স্কোয়ার বর্গফুটের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট।  অস্ট্রোলিয়ার নিজ শ্যালকের নামে সিডনীতে একাধিক বাড়ী। ১০। ২০০৯-২০২৪ পর্যন্ত আপন শালা আব্দুল মুকিত লাভলু ও তারিক হাসানের মাধ্যমে মুক্তি বিশ্বাসের একচ্ছত্র ঠিকাদারী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ। ১১। শালা আব্দুল মুকিত লাভলুর নামে কালিয়ায় মুক্তি বিশ্বাসের পেট্রোল পাম্প। ১২। মুক্তি বিশ্বাসের বউ চন্দনার নামে বেনামে ব্যাংকে শত কোটি টাকার এফডি আর রয়েছে। স্ত্রী চন্দনার প্রায় কোটি টাকার ডাইমন্ড ও গোল্ডের কালেকশন আছে!


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *