নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সকল সমস্যা সমাধানের প্রথম স্টেপ। যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন যেনো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেনো নিরপেক্ষভাবে কাজ করে সে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও আমাদের আপত্তি নেই। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপি’রা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন। বর্তমান সরকার তাদের দলের জন্য কি ভুমিকা নেবেন তাও পরিস্কার হওয়া দরকার। একতরফা নির্বাচন করে কারোরই লাভ হবে না।

একতরফা নির্বাচন হলে আবারো গন্ডগোল হবে, এর একটা স্থায়ী সমাধান দরকার। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাঁধা দিচ্ছেনা, বিচারের সাথে নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। আরেক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ, আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয় কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। এই সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে। তাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন সংস্কারের প্রয়োজন নেই। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে এই সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনদিনই কার্যকর হবে না। সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারনে তারা কতবড় গর্তে পড়বে তা তারা বুঝতে পারছে না। সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে, আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি এবং জাতীয় পার্টির ৭০ ভাগ নেতা-কর্মী নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, আমাকে নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো আমি রাজি হইনি। কিন্তু ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সকল দলই অংশ নিয়েছিলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তো দেশের সকল রাজনৈতিক দলই অংশ নিয়েছিলো। আমরাও সবার সাথে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের স্পেশাল কারণে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আমাদের নির্বাচনে যেতে হয়েছে, এটা বেআইনী কাজ নয়। এতে দোসর বলা যায় না, আমার দল যদি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় আমি নির্বাচন করতে পারি। আমি তো কোন আইন ভঙ্গ করিনি। নির্বাচনের আগে ও পরে তৎকালীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছি। আমার চেয়ে কঠোর সমালোচনা কেউ করেনি। নির্বাচন সঠিক হয়নি এর বিশদ বর্ননা দিয়ে বক্তৃতা করেছি, কলাম লিখেছি। সকল রেকর্ড আছে। গ্যাস, বিদ্যুত, পদ্মাসেতু ও উন্নয়ণের নামে দুর্ণীতি ও লুটপাটের কঠোর সমালোচনা আমার চেয়ে কেউ বেশি করেনি।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, নাসরিন জাহান রতনা, সৈযদ দিদার বখত, আলমগীর সিকদার লোটন, লিয়াকত হোসেন খোকা, শেরীফা কাদের, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল ইসলাম জহির, মনিরুল ইসলাম মিলন, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ আরিফুর রহমান খান, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, ইকবাল হোসেন তাপস।

জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, পঞ্চগড় জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ, ঠাকুরগাঁও জেলা সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রাজী স্বপন চেওৗধুরী, দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আহমেদ শফি রুবেল, লালমনিরহাট জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান, নীলফামারী জেলা সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ পারভেজ, কুড়িগ্রাম জেলার সদস্য সচিব এসকে বাবু, ভোলা জেলা আহ্বায়ক মোঃ কেফায়েতউল্ল্যাহ নজিব, সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি শেখ আজহার হোসেন, বরিশাল মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম হাবুল, নওগাঁ জেলা সভাপতি এ্যাড. তোফাজ্জল হোসেন, খুলনা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, গাইবান্ধা জেলা সভাপতি মোঃ সারোয়ার হোসেন শাহীন, সুনামগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব এ্যাড. নাজমুল হুদা হিমেল, রাজশাহী জেলা আহ্বায়ক সামচ্ছুদ্দিন আহমেদ রিন্টু, রাজশাহী মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, পটুয়াখালী জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, যশোর জেলা সদস্য সচিব মুফতি ফিরোজ শাহ, সিলেট জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, বগুড়া জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান সরকার স্বপন, বরগুনা জেলা আহ্বায়ক এ্যাড. আব্দুল লতিফ ফরাজী, মৌলভী বাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহমুদুর রহমান, নড়াইল জেলা সভাপতি এ্যাড. ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, সিলেট জেলা আহ্বাযক সাব্বীর আহমেদ, ঝালকাঠি জেলা সভাপতি এ্যাড. আনোয়ার হোসেন আনু, চুয়াডাঙ্গা জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রবিউল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ জালাল উদ্দিন, পিরোজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ, নাটোর জেলা সাধারণ সম্পাদক রকিব উদ্দিন কমল, চাপাইনবাবগঞ্জ আহ্বায়ক কামরুল হুদা নওশাদ, চাপাইনবাবগঞ্জ সদস্য সচিব মোস্তফাজিুর রহমান, পাবনা জেলা সভাপতি কাদের খান কদর, জয়পুরহাট জেলা সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, মাগুরা জেলা সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম খান, বরিশাল জেলা সদস্য সচিব এ্যাড. এমএ জলিল, ঝিনাইদহ জেলা সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বাচ্চু। দো’আ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় ওলামা পার্টির আহ্বায়ক ড. ইরফান বীন তুরাব আলী।