জামালপুরে আ’লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে হিজড়াকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ : এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

জামালপুর জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফা আক্তার ময়ুরীর সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের আরও অনেকের সাথে তোলা বিভিন্ন সময়ে তোলা ছবি।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিনিধি (জামালপুর)  : জামালপুর মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরীর হিজড়ার বিরুদ্ধে মাদারগঞ্জে বিন্দি @ বিদ্যুৎ (২৪) নামের হিজড়াকে অপহরণ করে নির্যাতন এর অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

বিন্দি @ বিদ্যুৎ হিজড়ার ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় মাদারগঞ্জে হিজড়াদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে বিন্দি অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গুরুত্বর অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে ।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে ,  জামালপুর জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফা আক্তার ময়ুরী দীর্ঘদিন ধরে মাদারগঞ্জ হিজড়াদের সর্দারনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ময়ুরী জামালপুর শহরের সাহাপুর এলাকার মরহুম আব্দুর রাজ্জাকের এর মেয়ে। গত ১৫ মে ছাত্র শিশুর গণহত্যার আরেক সহযোগী অভিযোগ এনে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরীর দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবীতে মাদারগঞ্জ তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায় ও ছাত্র সমাজের আয়োজনে মানব বন্ধন করা হয় ।


বিজ্ঞাপন

এই মানব বন্ধনকে কেন্দ্র করে  গত ২৬ জুন রাত ২ টায় কালাবাঘা এলাকার কালার বাড়ী মোড় থেকে বিন্দি বিদ্যুৎ হিজড়াকে অপহরণ করে  মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরে নিয়ে যায় আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী।  বিক্রমপুরের একটি বাড়ীর তৃতীয় তলায় বিন্দিকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।

পাশাপাশি পায়ুপথে গরম ডিম দেওয়া হয়।  এ ছাড়াও দেওয়া হয় শরীরে ইলেকট্রিক শর্ট।   পরে বিন্দিরকে খবর দিয়ে ডেকে নিয়ে ৩ টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া ও টিপ সহি নেওয়া হয়।  এদিকে কেড়ে নেয় সাড়ে চার লক্ষ টাকার স্বর্ণ ।  এ ঘটনায় দীর্ঘদিন বিছানায় পরে থাকার পর গত ১৭ জুলাই জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ এ মামলা দায়ের করে বিন্দি৷ মামলাটি পিবিআই পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেন বিচারক। বিন্দি মাদারগঞ্জ উপজেলার চর গাবের গ্রাম এলাকার আব্দুল আলিম এর মেয়ে।

বিন্দি @ বিদ্যুৎ হিজড়া অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে শয্যাশায়ী।

 

স্থানীয় হিজড়াদের অভিযোগ, আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক  হওয়ার সুবাদে স্থানীয় সকল প্রশাসন কে ম্যানেজ করে সরকারি প্লট, সরকারি বরাদ্দ, সমাজ সেবার সহায়তায় নিজ কমিউনিটির সদস্যদের কাছ থেকে টাকা লোপাট, চাকুরী দেয়ার নামে প্রতারণা ,মামলা থেকে রেহাই ও তদবির করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।  এ ছাড়াও হিজড়া ওপর চালাতো অমানবিক নির্যাতন।  তারা আরো জানান,  আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ ভাবে বিপুল পরিমান আয়ের উৎস থাকায় তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কয়েক কোটি টাকার মালিক সহ নামে-বেনামে রয়েছে অসংখ্য জমি ও ব্যাংক ব্যালেন্স।  হিজড়াদের দাবী, ময়ুরী হিজড়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তারা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিবেন।

বিন্দি @ বিদ্যুৎ হিজড়ার ওপর অমানবিক নির্যাতনের কিছু দৃশ্য।

 

এদিকে মাদারগঞ্জের বিন্দি @ বিদ্যুৎ জানান,  ময়ুরী হিজড়াদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করতো। পাশাপাশি চাদা নিতো।  আমাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেছে।  পরে আমার বোনকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৩ টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টিপ সহি নিয়ে রেখেছে।  এ ছাড়াও কোথাও চিকিৎসা নিতে দেয়নি।   আমি আমার বোনের সহায়তায় জামালপুরে আসার পর কোর্টে মামলা করেছি।  আমি উপদেষ্টা মহোদয়, প্রশাসন এবং মাদারগঞ্জ এর জনগনের কাছে এর বিচার চাই৷  এখনো ময়ুরী হিজড়া ক্ষতি করার জন্য বিভিন্ন পায়তারা করে আসছে। আমি এবং মাদারগঞ্জের হিজড়ারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।  বাচার জন্য বিপুল টাকা খরচ করে আসতেছে ময়ুরী। তার খুটির জোর কোথায়?

এ দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শুক্রবার দুপুর ১২ টায় আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী জানান, এগুলা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার৷  বিন্দি মাদারগঞ্জ এর সর্দানি হতে চায়৷  আমাকে আরো অনেক সাংবাদিকরা কল দিয়েছিল৷  আমি জামালপুরে এসে সবাইকে আলাদা আলাদা করে ডেকে কথা বলব।  তিনি আরো জানান,  মহিলা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতাম বলে এরা এখন এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে৷  অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এডিয়ে যান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *