রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, (ঝালকাঠি) : ঝালকাঠির রাজাপুরে একই সময় ও একই স্থানে বিএনপি ও যুবদলের দুই গ্রুপ পৃথক সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, “দু’পক্ষই সমাবেশের বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়েছে, তবে কাউকেই লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি। একই সময়ে একই স্থানে সমাবেশ ডাকায় সংঘর্ষের সম্ভাবনা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।”

জানা গেছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ ১৩ আগস্ট বিকেল ৩টায় ওই স্থানে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের। আমন্ত্রণপত্রে স্বাক্ষর করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর হোসেন। এই গ্রুপটি বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের বিরোধী হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে, একই সময়ে উপজেলা যুবদলও সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তারা রফিকুল ইসলাম জামালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এ সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন ও সদস্যসচিব আনিচুর রহমানের। তবে রবিউল হোসেন তুহিন দাবি করেন, রাজাপুর যুবদলের এ আয়োজন সম্পর্কে তিনি অবগত নন। উপজেলা যুবদল সদস্যসচিব সৈয়দ নাজমুল হক জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় দীর্ঘদিন ধরেই এ সমাবেশের পরিকল্পনা ছিল, যা বৃষ্টির কারণে পিছিয়েছে এবং এক সপ্তাহ আগে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির অভিযোগ, যুবদল ইচ্ছাকৃতভাবে একই সময় ও স্থানে সমাবেশ ডেকে তাদের কর্মসূচি ভণ্ডুলের চেষ্টা করছে। অপরদিকে যুবদলের দাবি, বিএনপি অযথা অভিযোগ তুলে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এবং সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতেই দুই পক্ষ মোটরসাইকেল শোডাউন ও মহড়া চালায়, যা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকে সমাবেশের দিন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন জানান, পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সম্ভাবনায় ইউএনও’র নিকট থেকে ১৪৪ ধারা জারির আবেদন করা হয়।
ইউএনও’র আদেশ অনুযায়ী, মার্কেট চত্বরে সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ, ২০০ মিটারের মধ্যে পাঁচ বা ততোধিক লোকের একত্রে চলাচল এবং লাঠি বা অস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া কেউ এই আদেশ অমান্য করতে পারবে না।