আখাউড়া-কসবা সড়কের  সেতু দেবে যান চলাচল বন্ধ  :  ভোগান্তিতে যাত্রীরা

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি  :  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-কসবা আঞ্চলিক সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ নানা প্রকারের যানবাহন দিয়ে নিত্যদিন চলাচল করছে। এরইমধ্যে গত দুই মাসের উপর ধরে উপজেলার মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কাকিনা খালের উপর নির্মিত  সেতুটি দেবে ও মাঝখানে বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় ওই পথে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

পায়ে হেটে চলাচল করতে একটি বাঁশের সাকু তৈরী করা হয়েছে। তবে বেশীভাগ লোকজন বাঁশের সাকু দিয়ে চলাচল না করে দেবে যাওয়া সেতুর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে তারা চলাচল করছে। তবে বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর যে অবস্থা রয়েছে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর  উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার ফলে সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এই সেতুটি নির্মাণের দাবি জানান।

একাধিক স্থানীয় লোকজন জানায়, আখাউড়-কসবা এই দুই উপজেলার মানুষের চলাচলের জন্য এই সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন নানা প্রকারের যানবাহন দিয়ে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। কিন্তু এই সড়কের মোগড়া বাজার পার হয়ে মনিয়ন্দ প্রবেশ মুখ এলাকার কাকিনা সেতটিু দেবে ও ফাটল  দেখা দেওয়ায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।  এ অবস্থার ফলে বিকল্প পথে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে তাদের যাতায়ত করা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন

অটো রিকশা চালক মো: আবু মিয়া বলেন, আমরা আখাউড়া,মোগড়া- ইমামবাড়িও তার আশপাশে অটো রিকশা চলাচল করে থাকি। কিন্তু সেতুটি দেবে যাওয়ায় ইমামবাড়ির দিকে যেতে পারছি না। আমাদের আয় রোজগারও অনেক কমে এসেছে।


বিজ্ঞাপন

মো: বাবুল মিয়া বলেন কাকিনা সেতুটি  মাঝের অংশ দেবে যাওয়ায় কারণে প্রায় তিন মাস ধরে সকল প্রকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আখাউড়া-কসবা যাতায়ত করতে নিচে ৭-৮ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে আমাদের খরচের পরিমাণ ও কয়েকগুন বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে ভোগান্তি ও। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে  ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সেতুর নির্মাণের দাবি করছি।

স্কুল ছাত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন সেতু পার হয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। সেতুর উপরে উঠলেই ভয় লাগে। তবু বাধ্য হয়ে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত সেতুটি নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কমানা করছি।
সিএনজি চালক মো: মহসিন বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে গত দুই মাস আগে এই সেতুটি দেবে যায়। এরপর থেকে সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তাছাড়া সেতুর মধ্যে রয়েছে ফাঁটল। যে কোন সময় ধ্বসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বর্তমানে যাত্রীরা সেতুর এক পাশে নেমে হেটে পার হয়ে অপর পাশে গিয়ে যানবাহনে উঠছে। আগে দুরদুরান্তে যাওয়া যেতো এখন যাওয়া যায় না। এতে আমাদের আয় কমে গেছে।

যাত্রী কবির মিয়া বলেন, কসবা আখাউড়ার এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়কের কাকিনা সেতুটি দেবে যাওয়ায় পথচারীদের দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে রোগী নিয়ে যাতায়তে কষ্টের যেন শেষ নেই।

যাত্রী মো: সোহাগ বলেন, কসবা-থেকে আখাউড়ায় আসতে এই সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার  কারণে আমাদের দুইবার যানবাহন  বদলাতে হয়। তবে সাথে মালামাল কিংবা অসুস্থ রোগী থাকলে খুবই কষ্ট করতে হয়। তাছাড়া বিকল্প পথে আসতে হলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়। সময়ও বেশী লাগে। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে কষ্ট করে এই পথে চলাচল করছি।

ব্যবসায়ী মো: বকুল মিয়া বলেন, আমি মোগড়া বাজারে ব্যবসা করছি। মালামাল আনতে প্রায় সময় কসবা যাওয়া হয়। আগে সিএনজিতে বসলে এক টানে আসা যেতো। এখন সেতুর সামনে এসে নেমে গিয়ে মালামাল নিয়ে সেতুর এই পাশে গিয়ে পুনরায় আকেটি গাড়িতে উঠতে হচ্ছে। এ অবস্থায় মালামাল নিয়ে আসা যাওয়া করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।

তাছাড়া ভাড়াও দিতে হচ্ছে বেশী। মো: নাজমুল বলেন সেতুটি দেবে যাওয়ার আমাদের কষ্টের শেষ নেই। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় ভাড়া দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। বিকল্প হিসাবে প্রায় ৩ কি:মি ঘুরে যাতায়ত করতে হয়।

আখাউড়া উপজেলা প্রকোশলী মো: আমিনুল ইসলাম সুমন বলেন, আখাউড়া-কসবা সড়ক পথের উপজেলার মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কাকিনা খালের উপর নির্মিত সেতুটি দেবে যাওয়ার কারণে নতুন সেতু নির্মাণ করতে ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কুমিল্লা-চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রজেক্টের আওতায় সয়েল টেষ্ট ও সার্ভে শেষ হয়েছে।

প্রায় ৫ কোটি টাকার একটি বাজেট করে আমাদের অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ৩০ মিটার দৈর্ঘের সিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। আশা করছি দ্রুত এ কাজটি করতে পারব।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *