নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটকের প্রস্তাব প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) দিয়েছিল বলে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) তৎকালীন প্রধান মোহাম্মদ হারুন রশীদকে সমন্বয়কদের আটকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি এই মামলায় দোষ স্বীকার করে নিয়ে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়েছেন। আজ তিনি এই মামলার ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিচ্ছেন।

জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সারা দেশে সেনা মোতায়েন করা হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ধানমন্ডির বাসায় কোর কমিটির বৈঠক হতো। বৈঠকে তাঁদের আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হতো।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এই কোর কমিটির বৈঠকে তিনি, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব টিপু সুলতান, অতিরিক্ত সচিব রেজা মোস্তফা, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন রশীদ, র্যাবের মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানেরা উপস্থিত থাকতেন।
কোর কমিটির একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয় বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, ডিজিএফআই এই প্রস্তাব দেয়। তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি রাজি হন। আটকের দায়িত্ব ডিবিপ্রধান হারুনকে দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাঁদের আটক করে। ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে।
জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাঁদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে নিয়ে এসে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি প্রদানে বাধ্য করা হ