নিজস্ব প্রতিনিধি (নড়াইল) : নড়াইলের সদর উপজেলার তপনভাগ গ্রামে ইব্রাহিম মোল্যা নামে এক ব্যক্তিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শেখহাটি ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগীর স্ত্রী ইরানী খাতুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, সোমবার ভোররাতে ৭–৮ জন লোক ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। দরজা খুলতেই ইব্রাহিমকে মামলার প্রয়োজনে ডিবি অফিসে যেতে হবে বলে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। পরে নড়াইল ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, ডিবি পুলিশ তাকে আটক করেনি।
ইরানী খাতুন অভিযোগ করেন, তার স্বামী নড়াইল সদর থানার একটি হত্যা মামলার এজাহারকারী ও চার্জশিটভুক্ত প্রধান সাক্ষী। ওই মামলার আসামিপক্ষের ইউসুফ, রসুল, আক্তার মোক্তার, কাওয়ুদ, অদুত, রাজুসহ আরো অনেকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। তার আশঙ্কা, আসামিপক্ষই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ডিবি পরিচয়ে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন,আমার স্বামীকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে যেকোনো সময় ক্ষতি করা হতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে তার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন চাই।

সাংবাদিক সম্মেলন শেষে পরিবারের সদস্য, গ্রামবাসীর আয়োজনে শেখহাটি বাজার চৌরাস্তা এলাকায় মানববন্ধন হয়। ঘণ্টা ব্যাপ্পী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, শেখহাটি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি বাবর আলী মোল্যা, শেখহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণত সম্পাদক আবু জাফর মুরাদ হোসেন, মো. ফজরে করিম, কহিনুর বেগম, রুহুল আমিন প্রমুখ।
মানববন্ধনে শেখহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণত সম্পাদক আবু জাফর মুরাদ হোসেন বলেন, ইব্রাহিম মোল্য জলমহলে সরকারি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করত।বিরোধী একটা পক্ষ তার বাবাকে এই জল মহলে চাষাবাদকে কেন্দ্র করে হত্যা করেছিল।
এখানে একটি পক্ষ সরকারের কাছে জমি দাবি করে আসছে। এ নিয়ে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত মামলা হয়েছে।উচ্চ আদালতের রায়ে যারা জলমহলের মালিকানা দাবি করে তারা হেরে যায়।হেরে যাওয়া পর ও মামলা চলমান।
সরকার জলমহল নিয়ম অনুযায়ী ইজারা দেয়।ইজারা মালিক মাছ মারতে গেলে প্রতিপক্ষ তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এই ইব্রাহিম ওই হত্যা মামলার বাদি।পরবর্তীতে ওই মামলার এক নাম্বার সাক্ষী সে।আজ মামলার সাক্ষীর দিন ছিল।
গত সোমবার রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পেরেছি পুলিশ তাকে নেয় নি। এ নিয়ে পরিবার ও আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।ইব্রাহিম একজন শান্ত সৃষ্টি মানুষ।আমরা তাকে যেন জীবিত অবস্থায় দ্রুত ফেরত পাই। প্রশাসনের কাছে সেই দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউসুফ শেখের সাথে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, ডিবি পরিচয়ে শেখহাটি তপনভাগ থেকে একজনকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।এঘঠনায় গতকাল সন্ধ্যায় একটি অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।