ডলফিন রক্ষায় সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে লাল ফ্ল্যাগ, মাছ ধরা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নইন আবু নাঈম তালুকদার (শরণখোলা)  : ডলফিন রক্ষায় মাছসহ সকল প্রকার আহরণ বন্ধে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য ঘোষিত খাল ও নদীতে স্থাপন করা হয়েছে লাল পতাকা।


বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) পূর্ব সুন্দরবনের ডলফিন অভয়ারণ্যে এলাকা ঢাংমারী খালের ঘাগড়ামারী টহল ফাঁড়ি থেকে পশুর নদীর পশ্চিম পাড় এবং করমজল হয়ে জোংড়া টহল ফাঁড়ির ছোট জোংড়া খাল পর্যন্ত অনেকগুলো ফ্ল্যাগ দেখা যায়। ওই লাল পতাকায় লেখা রয়েছে, ‘মাছ ধরা নিষেধ’ ও ‘ডলফিন অভয়ারণ্য’।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূলত ডলফিনের নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করার স্বার্থেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল ও নদীতে বিপুল সংখ্যক ইরাবতী ও গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিন বসবাস করে। এরা নদী ও সাগরের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু জেলে অভয়ারণ্যের ভেতরে অবৈধভাবে মাছ ধরার কারণে ডলফিনের আবাসস্থল ও প্রজনন মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়ে।


বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বন বিভাগ অভয়ারণ্যের বিভিন্ন স্থানে এসব লাল ফ্ল্যাগ স্থাপন করে। কর্মকর্তারা জানান, ফ্ল্যাগের মাধ্যমে জেলেদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হবে। একই সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে টহল জোরদার করে অভয়ারণ্যের ভেতরে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ করা হবে।


বিজ্ঞাপন

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে মোট ৪০ রকমের (প্রজাতি-উপপ্রজাতি মিলিয়ে) ডলফিন রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবনের নদীতে ৪টি প্রজাতির ডলফিন জাতীয় প্রাণী দেখা যায়। ইন্দোপ্যাসিফিক হামব্যাক ডলফিন শীতের মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িতে এসে পড়ে। এবং ইরাবতী ডলফিন সারা বছর সুন্দরবনের নদ-নদীতে অনেক দেখা যায়। আর শুশুক বা গাঙ্গেয় ডলফিন সুন্দরবনের পূর্বাংশে বেশি দেখা যায়। আর একটি ক্ষুদ্র ডলফিন রিভার পরপয়েজ, শুধু বড় নদীগুলোতে থাকে। তাই ডলফিন রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই আংশ হিসেবে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন ডলফিন অভয়ারণ্যে ‘মাছ ধরা নিষেধ’ ও ‘ডলফিন অভয়ারণ্য’ লেখা সম্বলিত লাল ফ্ল্যাগ লাগানো হয়েছে। ফ্ল্যাগগুলো স্থাপন করায় জেলেরা অভয়ারণ্যে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবে। আমরাও জোর দিয়ে জেলেদেরকে অভয়ারণ্যে মাছ না ধরতে কড়াকড়িভাবে নিষেধ করছি এবং যারা নিষেধ অমান্য করবে তাদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব অংশে প্রায় ৩১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ডলফিন অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এ অভয়ারণ্যেই বাংলাদেশের সর্বাধিক সংখ্যক ডলফিন বসবাস করছে।

ইয়ুথ ক্লাব শণখোলা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন,”আমি আমাদের সুন্দরবনের ডলফিন রক্ষায় কাজ করা সকল বনকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। ডলফিন আমাদের নদী ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের দায়িত্ব তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আশা করি, সবাই মিলে ডলফিনদের জন্য একটি সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করতে পারব।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *