করোনা পরীক্ষায় পদে পদে ভোগান্তি

জাতীয় স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা পরীক্ষা করতে গেলে পড়তে হচ্ছে অব্যবস্থাপনা ও বিড়ম্বনায়। নির্ধারিত পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী আসলেও পরীক্ষা করারও সুযোগ পান হাতেগোনা কয়েকজন। কেউ কেউ একাধিক দিন চেষ্টা করেও করোনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। ফলে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে করেনা পরীক্ষা করতে আসা ব্যক্তিদের।
অভিযোগ রয়েছে, করোনা পরীক্ষায় ও নমুনা সংগ্রহে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। হেল্পলাইনে ফোন করে সাড়া পেতে লাগে দীর্ঘ সময়। কখনো নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় না। নমুনার ফলাফল পেতেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালগুলোতে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। আইইডিসিআারে হটলাইনে সারাদেশ থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ ফোন করে। লাইনগুলো এ কারণে ব্যস্ত থাকে। ফলে টেলিফোনে পেতে কিছুটা সময় লাগে। তবে ভোগান্তি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, করোনা পরীক্ষার মূল ফটকের সামনে দীর্ঘ লাইন। করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে আসা লোকের লাইন বেড়ে দাঁড়িয়েছে মূল সড়কের পর্যন্ত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কল্লা টেস্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
রাজধানীর আজিমপুর থেকে পরীক্ষা করতে এসেছেন হেদায়েতুল্লাহ। তিনি বলেন, প্রায় তিন ঘণ্টা এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি। আজ পরীক্ষা করাতে পারবো কিনা এখনো নিশ্চিত না।
রাজধানীতে একটি বেসরকারি কোম্পানির অধীনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন আব্দুর রহিম। বেশ কিছুদিন সর্দি জ্বর ও গলা ব্যথায় আক্রান্ত। তিনি এসেছেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষা করাতে। তিনি বলেন, শুনলাম এখানে মাত্র আড়াইশো কিট দিয়ে পরীক্ষা করছে। এত লোকের জন্য আড়াইশো কিট পর্যাপ্ত নয়। কীটের সংখ্যা না বাড়ালে আগামীতে বিপদ হতে পারে।
করোনা পরীক্ষার কার্যক্রমের ধীরগতির অভিযোগ করছেন বেশিরভাগ মানুষ। পরীক্ষা করাতে আসা বেশিরভাগ ব্যক্তিরা জানান, খুব সকালে এসো অনেকে পরীক্ষা করাতে না পেরে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ৩/৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মুল ফটকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ভাইরোলজি বিভাগ চেয়ারম্যান অধ্যাপ ডা. সাইফুল্লাহ বলেন, আশা করছি খুব শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিছুদিনের মধ্যে আরো ৪টি বুথ হবে। এছাড়া এই রোগটাকে মডেল হিসেবে করে যদি রেপ্লিকেট করা হয় আশা করা যায় সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভোগান্তি কমাতে আগে থেকে অনলাইনে নির্দিষ্ট রোগীদের টোকেন দেয়ার পরিকল্পনা চলছে। তবে কবে নাগাদ এটি চালু হবে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি কেউ।
সর্বশেষ করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫ জনে। এদিকে নতুন করে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭৭ জনের।


বিজ্ঞাপন