সকল মামলার রায় বাংলায় লেখার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

Uncategorized

নিজস্ব প্রতিবেদক: আদালতের রায় সবার বোঝার জন্য ইংরেজির পাশাপাশি সম্ভব হলে বাংলায় লেখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে বিচারকরা ইংরেজিতে রায় লিখে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। হুট করে বাংলায় রায় লেখার কথা বলাটাও ঠিক হবে না। তবে ট্রান্সলেটর নিয়োগ দিয়ে তা বাংলায় রূপান্তর করে তা প্রচারেরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, সারাদেশের আদালতে ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯০৮টি মামলা বিচারাধীন। এসব মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দেয়ার উপায় বের করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কিছু করার প্রয়োজন হলে তা করা হবে কিন্তু এতগুলো মামলা এভাবে পড়ে থাকুক তা চাই না। খুব অল্প সময়ে অল্প খরচে ভোগান্তিমুক্ত বিচার পেতে পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সরকার প্রধান আরও বলেন, খুব অল্প সময়ে, অল্প খরচে ভোগান্তিমুক্ত বিচার প্রাপ্তিটা মানুষের অধিকার। যদি দ্রুত সময়ে, অল্প খরচে বিচারকাজ শেষ করতে পারেন তাহলে বিচার বিভাগের ওপরই মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়বে। যদিও আমাদের আস্থা-বিশ্বাস আছে, তারপরও আমি বলবো এ বিষয়ে সবাইকে একটু বিশেষ নজর দিতে।
তিনি বলেন, আমাদের বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা, দুই ভাই-ভাবিসহ আত্মীয়-স্বজনদের হত্যা করা হয়েছিল। তার বিচার তো করেইনি, ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের পথ বন্ধ করেছিল। বিচার চাওয়ার অধিকারও ছিল না আমাদের। আমি, আমার ছোট বোন রেহানা বিচার চাইতে পারি নাই। রেহানার পাসপোর্ট দেয়নি। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ। সেটা রিনিউ করে দেয়নি। আমাদের কিন্তু বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। বিচার চাইতে পারিনি।
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার তার দায়িত্ব পালন করতে সব সময় প্রস্তুত- মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশেষ করে ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে, আমরা যেহেতু আইন সভার সদস্য, সেখানে আইন প্রণয়ন বা আইন সংস্কার বা যেখানে যা করার দরকার সেগুলো সব আমরা করতে প্রস্তুত। সরকার হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সে দায়িত্বও আমরা সব সময় পালন করতে প্রস্তুত। যেন বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার পায়, দেশের মানুষ ভালো থাকে, মানুষ স্বস্তিতে থাকে, শান্তিতে থাকে, নিরাপদে থাকে, উন্নত জীবন পায়। সব কারগারে ভার্চুয়াল কোর্ট ভবন নির্মাণ করা উচিত বলেও অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
ভিডিও কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকার জেলা জজশীপের বিচারকরা, মহানগর জজশীপের বিচারকসহ সকল ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবী নেতারা ও সাধারণ আইনজীবীরা।


বিজ্ঞাপন