নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি আগে ভ্যাকসিন নিতে চাইলে তাদের যেন আগে ভ্যাকসিন দেয়া হয় সে বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের আগে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
ভ্যাকসিন নিয়ে লুটপাট হচ্ছে বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম করোনা মহামারিকে প্রধানমন্ত্রী বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যেভাবে মোকাবিলা করেছেন সেটি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে, বিশ্বসভায় এটি প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি হেলথ অরগানাইজেশনে প্রশংসিত হয়েছে। ব্লুমবার্গের মতে করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান উপমহাদেশে সবার উপরে। পুরো পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম।’
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) মনে করেছিল এই করোনা মহামারি সরকার সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারবে না। যখন সেটি হয়নি তারা প্রথম থেকে আশঙ্কা বা ধরণা করেছিল এমনকি হয়ত প্রার্থনাও করেছিল যে করোনায় যেন ব্যাপক লোক ক্ষয় হয় এবং দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, কিন্তু তা হয়নি। এতে তারা প্রচ- হতাশ হয়েছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গুজব রটিয়েছিল একটি ভুল সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন আসছে না। কিন্তু সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন আসছে। এমনকি আমরা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাচ্ছি, ভারত সরকারের উপহার হিসেবে। যখন সবকিছুতে ব্যর্থ হচ্ছে তখন ভ্যাকসিন নিয়ে অন্য কথা। লুটপাটের দল তো বিএনপি, সেজন্য সবকিছুতে লুটপাট দেখার চেষ্টা করে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভ্যাকসিন সরকার একটি নীতিমালার ভিত্তিতে প্রয়োগ করবে। যারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার মহামারির ক্ষেত্রে তারা নিশ্চয়ই প্রথমে পাওয়ার অধিকার রাখে। এই ব্যাপারে সরকার চিন্তা-ভাবনা করে যাদেরকে আগে দেয়া প্রয়োজন তাদেরকে আগে দেয়া হবে। এবং বিএনপি যদি আগে ভ্যাকসিন নিতে চায় আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে পারি বিএনপিকে যেন আগে ভ্যাকসিন দেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। এটি যে খুব ব্যাপক তা নয়। তবে যারা দলে থেকেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অতীতেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এখনো নেয়া হবে। আর যারা দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অতীতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, তাদের দলীয় পদবি কেড়ে নেয়া হয়েছিল। এখনো দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আলাপ আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পৌরসভার প্রথম ধাপে বিএনপি দুইটিতে এবং দ্বিতীয় ধাপে চারটিতে জয়লাভ করেছে। অনেক জায়গায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে আমাদের বিজয়ী প্রার্থীর তুলনায় বিএনপি আসন সংখ্যা কম পেয়েছে, সে অনুযায়ী বলাই যায় আমাদের সংগঠন অত্যন্ত মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং ব্যাপক জনসমর্থন আছে। এবং ভোটের হিসাব নেয়া হলেও দেখা গেছে নৌকা মার্কায় ব্যাপক ভোট পড়েছে, যার সঙ্গে বিএনপির ভোটের কোনো তুলনা হয় না।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক দলের রাজনীতি চর্চার পরিবেশ নেই বলে মির্জা ফখরুলের এক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব তিনি যে দল করেন, সেই দলের যে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি আছে, আগে সেটি নিয়ে একটু কথা বলুক। যে দেশে নাই একজন শাস্তিপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আরেকজন শাস্তিপ্রাপ্ত কয়েদি, সাত সমুদ্রের ওপার থেকে যেটি বলে সেটিই হয় এবং সেভাবেই তাদের দলের সিদ্ধান্ত হয়। কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি তাদের দলেই আছে, আমাদের দলে নেই। আমাদের দলে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি থাকলে কাদের মির্জা কথা বলতে পারতেন না এবং বললে ব্যবস্থা নেয়া হতো, কিন্তু হয়নি। অথচ তাদের দলে মেজর হাফিজ একটু তাদের সমালোচনা করেছেন সেজন্য তাকে যেই ভাষায় শোকজ করা হয়েছে সেই দলের মহাসচিবের এই রাজনীতির কথা বলার নৈতিক অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।’