ওয়াসার পিপিআই প্রকল্প লুটে সম্পদের পাহাড় সামসুজ্জামানের

অপরাধ অর্থনীতি জাতীয় রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩১ অক্টোবর-২০১৮ বিলুপ্ত ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: পরিচালিত ঢাকা ওয়াসার সাতটি রাজস্ব জোনের (রাজস্ব জোন-৩,৪,৫,৬,৮,৯ ও ১০) সমন্বয়ে গঠিত পিপিআই প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কর্মচারী সমবায় সমিতির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ওয়াসার পাম্প অপারেটর মো. সামসুজ্জামান দীর্ঘ ২২বছর পিপিআই প্রকল্পে লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। পিপিআই বিলুপ্তের পর সংরক্ষিত ও উদ্বৃত্ত অর্থ তারা যোগসাজস করে আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পিপিআই প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ,ক্ষমতার অপব্যবহার ও আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ তদন্ত পুর্বক সামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকে ২৯ জানুয়ারী-১৯ তারিখে ঢাকা ওয়াসার একজন সিবিএ নেতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১ এপ্রিল এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানাগেছে। অন্যদিকে ৩০ এপ্রিল ঢাকা ওয়াসার এমডি’র স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পিপিআই কর্তৃপক্ষের কাছে ২২বছরের আয়-ব্যয়, পরিসম্পদ ও দায়ের তথ্য প্রেরনের জন্যে আদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্ত এখন পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব দাখিল করেন নি।পত্রে বলা হয়েছে ২০১০-১১ অর্থ বছর থেকে ১৮-১৯ অর্থ বছর পর্যন্ত ৪৪৫ কোটি টাকা টাকা ওয়াসা থেকে পিপিআই প্রকল্পের জনতা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার কর্পোরেট শাখার চলতি হিসাব নং-২০০০২৬৩৪৬ এ দেয়া হয়েছে। এই হিসাব থেকে নিয়মিত লাইফলাইন শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লি: এর এক্সিম ব্যাংকের চলতি হিসাব নং-০৮৮১১১০০০১৬৮৪১ একাউন্টে এবং বনলতা কর্মদক্ষতা উন্নয়ন শ্রমজীবী সমিতির এনবিএল একাউন্টে টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে বলে পত্রে দাবি করা হয়েছে।স্থানান্তরিত টাকা পিপিআই প্রকল্পের পরিচালনা কমিটিতে দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকা মো. সামসুজ্জামান ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আত্মসাৎ করেছেন বলে ওয়াসার সাধারণ কর্মচারীগণ মনে করেন।
ওয়াসার সিবিএ নেতা ও পিপিআই’র বিলুপ্তির প্রায় পূর্ব পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত¦ পালনকারি মরহুম হাফিজ উদ্দীনের ভাই হওয়ায় মো. সামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারতেন না জোনের রাজস্ব কর্মকর্তা।
ওয়াসার মডস জোন-২ এর পাম্প অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন মো. সামসুজ্জামান। কিন্ত তিনি অবৈধভাবে রাজস্ব সাইট পরিচালনা করতেন। পুরো ২ নম্বর রাজস্ব জোন তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। ভিআইপি সাইট প্রদান, বদলি সবই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। সম্প্রতি তাকে সায়েদাবাদ জোনে বদলি করা হয়েছে। সেখানেও তিনি রাজস্ব সাইট পরিচালনা করেন। পাম্প অপারেটরের কাজ না করে রাজস্ব সাইট পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে এবং পিপিআই লুটে তিনি এখন ধনকুবের। ৩৫ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারির বাড়ি, গাড়ি, ফ্লাট, প্লট কোন কিছুর অভাব নেই। ঢাকার আজিমপুরে বহুতল বাড়ি, ঢাকা শহরে একাধিক ফ্লাট ও প্লট কিনেছেন। নিজ এলাকা গাজীপুরের শ্রীপুরে ইটভাটা, পোল্ট্রি ফার্ম ও প্রচুর ভ’সম্পদ রয়েছে।
সম্পদের বেশির ভাগই তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনের নামে কেনা। নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে কোটি কোটি টাকা জমা রেখেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। তার পরিবারের সদস্য ও আত্বীয়জনদের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করলেই সত্যতা মিলবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করেন।
পিপিআই প্রকল্পের ২২ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদান ও আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সামসুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বেতন বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. এর সদস্যগণ।


বিজ্ঞাপন