বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয় একটি ইতিহাস

রাজনীতি সারাদেশ

যশোর প্রতিনিধি : জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয় বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অংশ। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানী শোষন, জুলুম-নির্যাতন এবং দুঃশাসনের হাত থেকে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেছিলেন। যে সংগঠনটি ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলনে ব্যাপক ভুমিকা পালন করেছে। সর্বোপরি ১৯৮৯-এর স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অটল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই সংগঠনেরই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছেন মণিরামপুরের সন্তান লেখক ভট্টাচার্য্যকে। স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর বছরে এ মঞ্চে দাড়িয়ে ও মণিরামপুর অর্থাৎ যশোরের সন্তান হিসেবে আমি শ্রদ্ধার সাথে বলতে চাই আমার দাদা পিযুষ ভট্টাচার্য্য, আমি স্বপন ভট্টাচার্য্য (নিজে), লেখক ভট্টাচার্য্য, তন্ময় দেবনাথ, সাধন বিশ্বাসকে রাজনীতিতে জননেত্রী যে উপহার প্রদান গর্বিত করেছেন-সেটা অপ্রতুল। সে কারণে আমরা জননেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশসহ গর্বের সাথে আবেগ-আপ্লুত হয়েছি।
সোমবার বিকেলে মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য’র সংবর্ধনা প্রদাণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য (এমপি)। মণিরামপুরস্থ্য জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মুরাদুজ্জামান মুরাদ’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি আরও বলেন, অতীতের সকল সময় থেকে ছাত্রলীগ এখন শক্তিশালী। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী বঙ্গবন্ধু যেমন ছাত্রলীগকে ৬ দফার প্রচার-প্রচারণের দায়িত্ব দিলে-তারা অকুতোভয় সৈনিকের ন্যায় শহরে, গ্রাম-গঞ্জে ৬ দফা প্রচার করে, তার বানী সাধারন মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল। যে কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আন্দোলনের তীব্রতা জাগ্রত হয়েছিল। ফলশ্রুুতিতেই দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। দেশের মানুষ তথা মুক্তিযোদ্ধারা ছিনিয়ে এনেছিল একটি স্বাধীন দেশের পতাকা এবং বাংলাদেশ নামের একটি মানচিত্র। সুতরাং আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে নতুন করে শপথ নিয়ে সকল অপশক্তিকে পরাজিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ-সমাপ্ত করতে ছাত্রলীগকে মুখ্য ভুমিকা পালন করতে হবে। এ সময়ে মর্হুমুহ করতালি আর জয়বাংলা-জয়বঙ্গবন্ধু স্লোগানে মুখরিত হয় এলাকা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মোদের নেতা শেখ মুজিব। কে বলেছে মুজিব নাই- মুজিব সারা বাংলায়। এমই গগন বিদারী প্রভৃতি শ্লোগানের মধ্যে সংবর্ধিত অতিথি ও প্রধান বক্তার বক্তব্যে শুরু হয়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব সময় ঐক্যবদ্ধ। দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর। পকিস্তানের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছিল। সুতরাং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন যেন ভুলন্ঠিত না হয়, সেদিকে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্শীবাদ নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের জন্য সর্বোচ্চ দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারন করে ছাত্রলীগের অতীত আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য কাজ করে যাবার শপথ গ্রহণ করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সেদিন যে অকুতভয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা অস্ত্রে দেশের জন্য শুধু বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর আমারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ দেশ গড়ার কারিগর জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে জীবনবাজি রেখে সার্বিক সহযোগিতা করবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্জ্ব অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, ১৯৭১ সালের পরাজিত শত্রু ও দেশীয় ষড়যন্ত্রকারিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিলো। এ নৃশংস হত্যাকান্ডের মধ্যে দিয়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামী লীগকে ইতিহাসের পাতা থেকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ ঘাতকরাই ইতিহাসের আস্তা কুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। নতুন করে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন সেটা সফল হবে না। এজন্যে বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব নিতে হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ১৯৭৫ সালের পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারন করে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়তে ভিশন-২০২১ এবং মিশন-২০৪১’এর চিন্তা-চেতনা মাথায় নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। ছাত্রলীগ হোক তারই সহযাত্রী।
উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফজলুর রহমান, জামাল হোসেন ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রভাষক মামুন-অর-রশিদ জুয়েল’র যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাধন বিশ্বাস, উপগ্রন্থগারিক সম্পাদক তন্ময় দেবনাথ সহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি শুভ্রদেব হালদার বাপ্পী, রানা হামিদ, সাগর হোসেন সোহাগ, খালেদ হাসান নয়ন, ফরিদা পারভীন, জেসমিন শান্ত, আনন্দ সাহা পার্থ, দেবাশিষ শিকদার সিদ্ধার্থ, যুগ্ম-সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি, আব্দুল জব্বার রাজ, শামস-ই-রোমান, সহ-সম্পাদক শেখ রেজওয়ান আলী, রফিকুল ইসলাম বাধন, নাজমুল সিদ্দিকী নাজ, মানব-সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, ধর্ম-সম্পাদক তুহিন রেজা, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ প্রমূখ।


বিজ্ঞাপন