লকডাউনে ফেসবুকের ব্যবহার বেড়েছে ৬০-৭০ শতাংশ

জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান লকডাউনে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ফেসবুক ব্রাউজ পরিমাণ বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এ হার ৬০ থেকে ৭০ ভাগের বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাইরাল ভিডিও দেখার প্রবণতা বেশি বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ইউটিউব দেখার পরিমাণ বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে বর্তমানে দেশে ২৫০০ থেকে ২৭০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে ১৬০০ জিবিপিএস হলো বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল)। ২৫ এপ্রিল ও ১ মে থেকে বিএসসিসিএল আরও ৩১ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি শুরু করবে। ব্যান্ডউইথের চাহিদার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসসিসিএল। আর অবশিষ্ট ৯০০ থেকে ১০০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আছে ভারত থেকে আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল) অপারেটরগুলোর মাধ্যমে।
জানতে চাইলে বিএসসিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান মঙ্গলবার বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি শুরু করবো। এছাড়া ১মে থেকে ২১ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ (আইপি ট্রানজিট) বিক্রি শুরু হবে। দেশে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথের চাহিদা আছে। বেশ কিছুদিন আগেই আমরা চাহিদাপত্র পেয়েছি। সে সময় ব্যান্ডউইথ বাড়ানো সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত তারিখ থেকে পারা যাবে। তিনি জানান, গত শনিবার (১৭ এপ্রিল) গুগলের সঙ্গে একটি সার্কিট চালু হয়েছে। শিগগিরই সিঙ্গাপুরের হ্যারিকেন ইলেকট্রিকের সঙ্গে দুটো সার্কিট চালু হবে। ফলে আগামীতে কোনও ধরণের সমস্যা থাকবে না।
অন্যদিকে আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, লকডাউনে আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথের ব্যবহার তেমন বাড়েনি, যা কিছু বেড়েছিল প্রথম লকডাউনের সময়। ব্যবহারের হার আগের মতোই আছে। তবে ক্যাশিং ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। তিনি জানান, ফেসবুক দেখার হার আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। অন্যদিকে ইউটিউব দেখার হার বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।
ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের হার অন্যান্য লকডাউনের তুলনায় বেশি না বাড়ার কারণ জানতে চাইলে আমিনুল হাকিম বলেন, ব্যান্ডউইথের ব্যবহার যা বাড়ার তা গত বছরই বেড়েছে। গত বছরের মার্চের আগে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ছিল ১০৫০ থেকে ১১০০ জিবিপিএস’র মতো। লকডাউন শুরু হলে তা ১৭০০-১৭৫০ জিবিপিএসে পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে তা ২০০০ জিবিপিএস ছাড়িয়ে যায়, যা বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৭০০ জিবিপিএস। এবার বেশি ব্যান্ডউইথের ব্যবহার না বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এখন মূলত রোজার সময়। এছাড়া অনেক অফিস বন্ধ। ফলে বাসা-বাড়িতে যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো গড়ে এখনও তাই-ই হচ্ছে।
এ বছর প্রথমবারের মতো লকডাউন শুরু হয় ৫ এপ্রিল। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বেড়ে যায় প্রায় ২০০ জিবিপিএস। লকডাউনে করপোরেট সেগমেন্টে ইন্টারনেটের ব্যবহার তেমন না বাড়লেও হোম ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যায়। হঠাৎই আবার ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু হওয়ায় এই চাপ বাড়ে।
ইন্টারনেট গেটওয়ে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইআইজি) লেভেল থ্রি ক্যারিয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইআইজি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জুনায়েদ বলেন, হঠাৎ করে দেশের মোট চাহিদার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ বেড়ে গেলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সাপোর্ট দিতে পারি। এখনও চাহিদা আমাদের সক্ষমতার মধ্যেই আছে।


বিজ্ঞাপন