আঙ্গুর এর উপকারীতা ও ঔষধি গুন

স্বাস্থ্য

আজকের দেশ রিপোর্ট : আঙ্গুর যার বৈজ্ঞানিক নাম Vitis vinifera. আঙ্গুর বা দ্রাক্ষা (ইংরেজি Grape) এক প্রকারের ফল যা লতা জাতীয় দ্রাক্ষালতা গাছে ফলে থাকে। দ্রাক্ষালতা গাছটি Vitaceae পরিবারের অন্তর্গত। ৬ হতে ৩০০টি পর্যন্ত আঙুর এক সাথে একই থোকায় ধরে থাকে। এর রঙ কালো, নীল, সোনালী, সবুজ, বেগুনি-লাল, বা সাদা হতে পারে। পাকা আঙুর সরাসরি খাওয়া হয়, বা এটি দিয়ে রস, জেলি, মদ, বা আঙুর-বীজের তেল তৈরি করা হয়।


বিজ্ঞাপন

আঙুরকে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। বন্য আঙুরলতা অনেক ক্ষেত্রে পরগাছা হিসাবে অন্য গাছকে গ্রাস করে ফেলে।


বিজ্ঞাপন

স্বল্প পরিসরে আঙ্গুর চাষের জন্য বাড়তি জায়গার প্রয়োজন হয় না। বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় যে স্থানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রৌদ্র থাকে অথচ পানি দাঁড়ায় না এমন জায়গা নির্বাচন করে আঙ্গুর চাষ করা যায়। যদি বাড়ির আশেপাশে বা আঙ্গিনায় জায়গা না থাকে বিশেষ করে শহর অঞ্চলে তারা বাড়ির ছাদে টবে আঙ্গুর চাষ করতে পারেন। আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ অনেক। আমাদের দেশে রোগীর পথ্য হিসেবে আঙ্গুর ব্যাপক ব্যবহৃত হয়৷ এতে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফরফরাস, লৌহ, খনিজ, পটাশিয়াম, থিয়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন-এ, বি, সি উপাদান রয়েছে৷ তাছাড়া প্রতি কেজি আঙ্গুর থেকে প্রায় ৪৫০ ক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়৷

আঙ্গুর এর উপকারিতাঃ

অকাল বার্ধক্য রোধ করে :
আঙ্গুরে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা আপনার বার্ধক্য রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আঙ্গুরের বীজ ও খোসায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অতএব দিনে একবার হলেও এক থোকা আঙ্গুর খেতে ভুলবেন না।

হার্ট সুস্থ রাখে :
আপনি কি আপনার হার্ট নিয়ে ভীষণ চিন্তিত? তাহলে রাতের খাবারের সময় এক গ্লাস আঙ্গুরের জুস খেতে পারেন। দেখবেন এতে আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে :
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে আঙ্গুরের জুস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা এতে রয়েছে অর্গানিক এসিড, সেলুলাস ও চিনি যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়ক।

নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন :
যারা রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্যহীনতায় ভোগেন তাদের জন্য আঙ্গুরের জুস খুবই উপকারী। আঙ্গুরে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস বিদ্যমান থাকে, যা নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে।

ক্যান্সার রোধ করে :
আঙ্গুরের জুসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামিটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, যা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করে। এই প্রদাহ ক্যান্সার রোগ জন্মের প্রধান কারণ। এ ছাড়া আঙ্গুর মাইগ্রেনের সমস্যা রোধ করে।

ভুলে যাওয়া রোগ নিরাময় :
অনেকে ছোট ছোট বিষয়গুলো দ্রুত ভুলে যান। আবার কোনো কথা বেমালুম স্মৃতি থেকে মুছে যায়। এটি আসলে এক ধরনের রোগ। এই রোগটি নিরাময়ে আঙ্গুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

হজমে সহায়তা করে :
দাওয়াত খেয়ে এসে অস্বস্তি লাগলে খেতে পারেন আঙ্গুর। এটি হজমের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি পেটের পীড়াও দূর করে।

চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে :
চোখ ভালো রাখতে কার্যকর এই ফল। বয়সজনিত কারণে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ভালো ওষুধ হল এই আঙ্গুর।

স্তন ক্যান্সার নির্মূল :
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন এমন নারীরা খেতে পারেন আঙ্গুর। গবেষণায় দেখা গেছে আঙ্গুরের উপাদানগুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম।

কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা :
আঙ্গুরের উপাদানগুলেঅ ক্ষতিকারক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে কিডনির রোগব্যাধির বিরুদ্ধেও লড়াই করে।

ত্বকের সুরক্ষায় :
আঙ্গুরে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে থাকা ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।

চুলের যত্নে :
একটু অযত্নেই চুল খুশকিতে ভরে যায় এমন অনেকেই আছেন। এছাড়া চুলের আগা ফেটে গিয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে, ধূসর রঙের হয়ে যায় এবং পরিশেষে চুল ঝরতে থাকে। এইসব সমস্যার সমাধানে খেতে পারেন আঙ্গুর।