এবারও টেন্ডার ছাড়াই নৌঘাট ইজারা

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয়

মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাবে সরকার


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : গতবছরের ন্যায় এবারও টেন্ডার ছাড়াই প্রায় চার শতাধিক নৌঘাট, পয়েন্ট, খাল-টোল ইজারা নবায়নের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলমান থাকায় টেন্ডার ছাড়াই দেশের চারশ’র বেশি লঞ্চ ও ফেরিঘাট বা পয়েন্ট ইজারা দিতে শনিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এবছরও টেন্ডার ছাড়াই এসব ঘাট ইজারা হওয়ায় সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
এর আগের বছরও একই প্রক্রিয়ায় ঘাট ইজারা নবায়ন করা হয়। যদিও এ লক্ষ্যে ইজারা নীতিমালা সংশোধন করেছে সংস্থাটি। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, মহামারী বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে টেন্ডারের মতো প্রতিযোগিতা ছাড়াই বর্তমান ইজারাদাররা পরবর্তী অর্থবছরের জন্য নৌঘাট ইজারা নিতে পারবেন। আর এতে করে একাধিক টেন্ডার নাপরায় উচ্চ মূল্যের কোনো প্রতিযোগিতা হয়নি। ফলে রাজস্বও স্থিরছিল একই জায়গায়।
টেন্ডার পদ্ধতি তুলে দেয়ার ভালো-মন্দ দুই দিক রয়েছে বলে মনে করছেন ইজারাদাররা। একাধিক ইজারাদার বলেন, আগে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে বেশি দর দিত, সে-ই ঘাট পেত। এবারও প্রতিযোগিতা না থাকায় বিদ্যমান ইজারাদাররা সহজেই ঘাট নিতে পারবেন। অপরদিকে দেশের অনেক অঞ্চলে ইজারাদার ও বিআইডব্লিউটিএর এক শ্রেণির কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট করে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম দরেই টেন্ডারের মাধ্যমে ঘাট ইজারা নিতেন, সেই সুযোগও বন্ধ হল।
এক্ষেত্রে প্রাক্কলিত দরে ঘাট নবায়ন করতে হবে। এছাড়া যেসব ইজারাদার ঘাট বা পয়েন্ট নিয়ে মামলা করেছেন, তারা তা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার করলে এ সুবিধা পাবেন। বিআইডব্লিউটিএ’র বোর্ড সভায় সংশোধিত নীতিমালা ও প্রাক্কলিত মূল্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যদিও প্রাক্কলিত মূল্য অনেক বাড়ানো হয়।
বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ৪৩২টি ঘাট ও পয়েন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি ঘাট বা পয়েন্ট নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। সদরঘাটসহ কয়েকটি ঘাটে সংস্থাটির কর্মচারীদের দিয়ে সরাসরি চার্জ বা ফি আদায় করা হয়।
বাকি চারশ’র বেশি ঘাট ও পয়েন্ট ইজারাদার রয়েছে। সূত্র আরো জানিয়েছে, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঘাট ইজারা দেয়ার বিধান ছিল। এতে ইজারাদাররা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বেশি দরে ঘাট ইজারা নিতেন।
জানা গেছে, ইজারা নীতিমালার ৪(ঙ) এ নতুন বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মহামারী বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিবেচনায় ওই সময়ের জন্য পূর্ববর্তী ইজারাদারদের থেকে আবেদনের মাধ্যমে ইজারা দেয়া যাবে।
যেসব ইজারাদার ঘাট বা পয়েন্ট নিয়ে মামলা করেছেন তারা ওই মামলা প্রত্যাহার করার অঙ্গীকার করে নবায়নের আবেদন করতে পারবেন। আর যেসব ঘাট নবায়ন হবে না, সেই ঘাটগুলো উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়।
বন্দর ও পরিবহন বিভাগ পরিচালক কাজী ওয়াকিল নওয়াজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে আরো জানা গেছে, ঘাট, পয়েন্ট, খাল-টোল স্টেশন ইজারার সম্মতি পত্র/ নোটিফিকেশন অব এওয়ার্ড প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে ইজারাদার কর্তৃক প্রকৃত ইজারা মূল্যের অবশিষ্ট ৭৫% অর্থ এককালীন সংশ্লিষ্ট বন্দর দপ্তরে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে আর্নেষ্টমানি বাবদ জমাকৃত অর্থ কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।