বিনোদন প্রতিবেদক : চিত্র নায়িকা পরি মনির উত্থান যেন বাংলা সিনেমার গল্প কে ও হার মানিয়েছে, এফডিসিতে ৬ টা গরু কুরবানি দেওয়া বিলাল বহুল গাড়ি, বাড়ি ও ফ্ল্যাট, রাজকীয় জীবন যাপন নামি দামি ব্রান্ডের মদের বাহার, পোশাক পরিচ্ছেদের চমৎকার চমক সব মিলিয়ে হিসেব মেলে না পরি মনির আয় ব্যায়ের।
গতকাল ৪ আগস্ট বুধবার বিপুল পরিমাণ মাদক সহ ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এবং ওই দিন রাতে বনানীর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতারে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে।
এদিন পরীমনি ও পিয়াসার গডফাদার হিসাবে পরিচিত কথিত চলচিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ওরফে রাজকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নজরুলের মোবাইল ফোনে অসংখ্য তরুণীর পর্নো ভিডিও পাওয়া গেছে।
সূত্র বলছে, চিত্রনায়িকা পরীমনির উত্থান সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। হতদরিদ্র ঘরের মেয়ে সামসুন্নাহার ঢাকায় এসে পরীমনি নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
অভিনয়ের তেমন কিছু জানা না থাকলেও একের পর এক সিনেমায় প্রধান চরিত্রে ডাক পড়ে তার।
বছর খানেকের মধ্যে পরীমনি ২০টির বেশি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হন। নায়িকা হিসাবে রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি। অঢেল টাকা আর অভিজাত জীবন যেন স্বেচ্ছায় ধরা দেয় তার হাতে।
দামি গাড়ি, কোটি টাকার ফ্ল্যাট, মূল্যবান অলঙ্কার কি নেই তার। অথচ তার সমসাময়িক নায়িকাদের অনেকে বাসা ভাড়া দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
সূত্র বলছে, সিনেমা শুটিংয়ের আড়ালে পরী মূলত প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ হতেই বেশি পছন্দ করতেন।
রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেলে তাকে লাস্যময়ী ভঙ্গিতে দেখা যায়। প্রায় প্রতিদিনই গভীর রাত পর্যন্ত পার্টি শেষে মদ্যপ অবস্থায় বের হতেন তিনি।
এছাড়া পরী ধূমপানে অভ্যস্ত (চেইন স্মোকার)। তার ফ্ল্যাটে বিদেশি সিগারেট ও মদের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।
বলা যায় ছোটখাটো বার। তার ফ্ল্যাট থেকে রাশিয়ান ভদকা, জিন, টাকিলা, হুইস্কি ও বহু মূল্যবান রেড ওয়াইন উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র বলছে, কয়েকটি ব্যাংকে পরীর মোটা অঙ্কের টাকা রয়েছে। যার বেশিরভাগই তিনি পেয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে। টাকার নেশা তাকে ছাড়ে না। একপর্যায়ে নাম লেখান পর্নোগ্রাফির নিষিদ্ধ জগতে।
এজন্য পরী তার ঘনিষ্ঠ মডেলদের মাধ্যমে একটি চক্র গড়ে তোলেন। উঠতি মডেল এবং চিত্রনায়িকাদের পর্নোছবি তুলে পাঠানো হতো কথিত হাই-প্রোফাইলদের কাছে। তার মাধ্যমে অনেকে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হন।
পরীর ঘনিষ্ঠদের তালিকায় আছেন- পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিবিদসহ অনেক প্রভাবশালীর নাম। এদের কেউ কেউ দেশের বাইরে পরীর সঙ্গে ঘুরতে যান।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তাকে হ্যারিয়ার গাড়ি উপহার দেন।
চেয়ারম্যানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া পরীর বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
জানা যায়, পরীকে গ্ল্যামার জগতে নিয়ে আসেন কথিত সিনে প্রযোজক নজরুল ওরফে রাজ নামের এক ব্যবসায়ী।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নজরুল নিজের জেলার পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
স্বল্পশিক্ষিত নজরুল নিজেকে প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার একান্ত সচিব (পিএস) বলেও পরিচয় দেন।
তিনিই প্রথম পরীমনিকে ঢাকায় এনে চলচ্চিত্রে ভেড়ানোর চেষ্টা করেন। সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন তার কাছেই থাকতেন পরী।