খনন যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে দুই সেতু!

সারাদেশ

মোস্তাফিজুর রহমান,সরিষাবাড়ী : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে ঝিনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।এতে বালুদস্যুদের দাপটে হুমকির মুখে পড়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেলি সেতু ও কৃষ্টপুর সেতু।নেই কোন অনুমোদিত বালুমহাল ।নদী থেকে বালু উত্তোলনে নেই প্রশাসনের অনুমতিও। তারপরেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাসের পর মাস উপজেলার ঝিনাই নদীর একাধিক স্থান থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন।অপরদিকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই হচ্ছেন ভূমিহীন।প্রশাসনের নাকের ডগায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ দল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।এ বালু বিক্রি করে কেউ কেউ রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। এ কারণে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে রেলি সেতু ও কৃষ্টপুর সেতুসহ নদী তীরবর্তী ঘর-বাড়ি ও আবাদী জমি।বালু উত্তোলনের প্রত্যেকটি পয়েন্টই নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।এদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।এ ব্যাপারে সরকারের ভূমি বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নজরদারীর পাশাপাশি যথাযথ ভূমিকা রাখা অতি জরুরী হয়ে পড়েছে।মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তারা সেখান থেকে আসার পরেই আবার শুরু হয় অবাধে বালু উত্তোলন।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের রেলিব্রীজ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে ১ টি খনন যন্ত্র, উওর পার্শ্বে শাহীন কর্তৃক পরিচালিত ১টি খনন যন্ত্র, বড়বাড়ীয়া ছানোয়ার হোসেন ছানু কর্তৃক পরিচালিত ১টি খনন যন্ত্র
, সৈয়দপুর বশির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্বে বাবলু কর্তৃক পরিচালিত ১টি খনন যন্ত্র, ফারুক কর্তৃক পরিচালিত ১টি খনন যন্ত্র ও কৃষ্টপুর ব্রীজ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে শাহজাহান কর্তৃক পরিচালিত
১টি খনন যন্ত্র দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ধুম পড়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মানুযায়ী নদীর তীর থেকে ২ হাজার ৫০০ ফুট মাঝ থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না তারা।নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত খনন যন্ত্র দিয়ে যত্রতত্র গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।এতে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সময়ে-অসময়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে রাস্তা বেড়িবাধ, ব্রীজ ও শতশত একর আবাদী জমিসহ বসতভিটা।ওই সব এলাকার বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পাচ্ছেনা । প্রতি হাজার (সিএফটি হিসেবে) উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করছে দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকায়।আর নদী তীরবর্তী জমির ভুয়া মালিক সেজে প্রতি হাজার বালু
(সরাসরি নদী থেকে) ১ হাজার থেকে ১৫ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।এতে তারা কোটিপতি হলেও বাস্তুহারা হচ্ছে ভুক্তভোগীরা।অপরদিকে ওই বালু পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে দিনরাত চলছে জমি চাষের জন্য খাঁজকাটা চাকাযুক্ত অসংখ্য ট্রাক্টর।ট্রাক্টরের চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে পাকা রাস্তার পিচ, পাথর ও ইটসহ অন্যান্য উপকরণ। মাটির রাস্তার তো কথাই নেই। আর অল্পদিনের মধ্যেই অচল হচ্ছে কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো।
এ ব্যাপারে বালু উত্তোলন কারী সিন্ডিকেটের নেতা শাহজাহান,ছানোয়ার ও বাবলু একই সুরে বলেন,আমরা নদী থেকে বালু উত্তোলন করেছি এতে কারো কিছু আসে যায় না। কার জমি ভেঙ্গেছে এটা আমাদের দেখার বিষয় না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, বিষয়টি আমি দেখছি।


বিজ্ঞাপন