‘শুটিং সেটে কেমন ছিলেন পরীমনি’ বললেন নির্মাতারা

বিনোদন

বিনোদন প্রতিবেদক : চলচ্চিত্র নায়িকা পরি মনি সম্পর্কে নির্মাতারা বললেন শুটিং সেটে কেমন ছিল পরি। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী জানা গেছে, প্রায় ছয় বছরের ক্যারিয়ারে অনেক অনালোচিত সিনেমায় অভিনয় করেও ততধিক আলোচিত পরীমনি। তাকে বলা হয় এই সময়ের ঢাকাই সিনেমার ‘গ্ল্যামার গার্ল’।


বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি মাদক মামলায় জড়িয়ে টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হন এই চিত্রনায়িকা। নন্দিত-নিন্দিত দু’ভাবেই তিনি পরিচিত। তাকে নিয়ে মুখরোচক অনেক কিছুই অন্তর্জালে ভেসে বেড়ায়।


বিজ্ঞাপন

এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে- কর্মক্ষেত্রে কেমন ছিলেন এই নায়িকা? অর্থাৎ পরীমনির লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের যে জগৎ সেখানে নির্মাতাদের চোখে তিনি কেমন ছিলেন?


বিজ্ঞাপন

চলচ্চিত্রে পরীমনির ক্যারিয়ার শুরু হয় শাহ আলম মন্ডল পরিচালিত ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ সিনেমার মাধ্যমে।

পরীমনি প্রসঙ্গে এই নির্মাতা বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারেও প্রথম সিনেমা ছিল এটি। আমি যতদূর দেখেছি সে ভালোভাবেই কাজ করেছে। কখনও খারাপ কিছু দেখেনি। তার মধ্যে উগ্রতা চোখে পড়েনি।’

তবে গত তিন বছর পরীমনির সঙ্গে যোগাযোগ নেই শাহ আলম মন্ডলের। কেন নেই? উত্তরে এই নির্মাতা বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে যখন দেখেছি সে আমার কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না, তখন নিজেই সরে এসেছি।’ ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমার পরিচালক সব সময়ই প্রাধান্য পায় চিত্রশিল্পীদের কাছে।

সে ক্ষেত্রে শাহ আলম মন্ডলের আলাদা গুরুত্ব পরীমনির কাছে থাকা উচিত ছিল কিনা প্রশ্নের উত্তরে এই নির্মাতা বলেন, ‘আসলে তেমন কিছু নয়। যখন কাজ করেছি তখন ব্যবহার ভালোই পেয়েছি।

পরে আর তেমন যোগাযোগ রাখিনি। তখন সে নেশায় আসক্ত ছিলো কিনা আমি জানি না। তাছাড়া নেগেটিভ কোনো কিছুই ভালো না। সিনেমার ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

‘ভালোবাসা সীমাহীন’ সিনেমার শুটিং চলাকালেই ‘রানা প্লাজা’য় যুক্ত হন পরীমনি। এই সিনেমার নির্মাতা নজরুল ইসলাম খান। পরী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘রানা প্লাজা’ সিনেমার জন্য নতুন মেয়ে চাচ্ছিলাম। এর মধ্যেই পরীমনির সঙ্গে পরিচয় হয়।

প্রথমে ভেবেছিলাম সে হয়তো পারবে না। এ জন্য আরেকজন নায়িকা রেডিও করে রেখেছিলাম। কিন্তু প্রথম শটই ওকে হয়। অনেক পরিশ্রমি ও মেধাবী একজন শিল্পী পরীমনি।

আমি কখনও ওর মধ্যে খারাপ কিছু পাইনি। ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়েও সে শুটিং করেছে। কখনও না বলেনি। কাজের প্রতি সিরিয়াস ছিল। আমাকে দেখলে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতো। সত্যি বলতে ওর মতো ভদ্র, মার্জিত শিল্পী আমি কমই দেখেছি।’

পরীমনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার বিচার কাজ চলছে। কেন এমন হলো বুঝে উঠতে পারছেন না নজরুল ইসলাম খান।

তবে তার ভাষ্য হলো ‘পরীমনি ক্ষতি করে থাকলে সেটা রাষ্ট্র দেখবে। প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। তবে আমি চাই পরী ফিরে এসে কাজ শুরু করুক। ওর মতো শিল্পী সিনেমায় দরকার।

’ পরীমনির ক্যারিয়ারে আলোচিত সিনেমা ‘অন্তরজ্বালা’। এই সিনেমার নির্মাতা মালেক আফসারি বলেন, ‘আমার সঙ্গে শুধু পরী না সব শিল্পীরাই সিনসিয়ার থাকে।

ব্যাসিকেলি শিল্পীরা যখন কাজ করতে আসে তখনই বুঝে যায় ইউনিট কেমন। তারা যদি দেখে টোটাল ইউনিট খুব সিরিয়াস তখন তারাও সিরিয়াস হয়ে যায়। পরী কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।’

‘ফেইসবুকে পরীমনির বিকিনি পরা ছবি দেখে আমি আমার নাম উল্লেখ না করে একটি পোষ্ট দেই। সেখানে লিখেছিলাম, আমাদের এটা ইসলাম কান্ট্রি। তাই নায়িকাদের আরো হুঁশিয়ার হয়ে চলা উচিত।

বিষয়টা পরী বুঝতে পেরে সেও নাম উল্লেখ না করে ফেইসবুকে পোষ্ট দেয়- আপনি সিনেমার পরিচালক আছেন সিনেমা পরিচালনা করেন। আমাকে ডারেকশন দিতে আসিয়েন না। এরপর আমি পোস্টটা ডিলিট করে দেই।’ বলেন আফসারি।

এ ঘটনার পরও দুজনের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় ছিল উল্লেখ করে জনপ্রিয় এই নির্মাতা বলেন, ‘বোট ক্লাবে এত রাতে যাওয়ার পরেও তার পক্ষ নিয়ে কথা বলেছি। কারণ তার কান্নাকাটি দেখে খারাপ লেগেছে। মনে হয়েছে যে ওর উপর অন্যায় হয়েছে।

সে এমন একজন সেলিব্রেটি দেখেন কোর্টে তার পক্ষে কে লড়বে এটা নিয়ে ঝগড়া। আদালত লোকে লোকারণ্য। সিনেমায় করোনায় যে প্রভাব, তার কাছে এই প্রভাব তুচ্ছ।’

পরীমনির আরেকটি আলোচিত সিনেমা ‘স্বপ্নজাল’। এই সিনেমায় তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।

সিনেমার নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আমরা প্রফেশনালি কাজ করেছি। আমি তাকে নিয়ে ঠিকঠাকভাবে কাজ করতে পেরেছি। টাইমলি সেটে আসা নিয়ে শিল্পীদের সঙ্গে জটিলতা হয়। পরীর ক্ষেত্রে তা পাইনি। সে টাইমলি সেটে আসতো। তাকে নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে এট লিস্ট কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।’