জনগণের সচেতনতার অভাব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ দুরূহ করে তুলছে : ঢাদসিক মেয়র

রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক : জনগণের সচেতনতার অভাব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম দুরূহ করে তুলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।


বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৮ অগাস্ট) দুপুরে নগরীর ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে অনুদান প্রদান কার্যক্রম শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ কথা বলেন।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা এডিস মশার উৎসস্থলগুলো ধ্বংস করছি। কিন্তু পুরো শ্রাবণ মাস জুড়ে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় এখনো পানি জমছে। আমাদের যদি এক বাসায় তিনবার যেতে হয় তাহলে কাজটি অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু তিনি যদি সচেতন হন, তাহলে কাজটি আমাদের জন্য কার্যকর হয়। এখন জনগণ যদি সচেতন না হয় তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম দুরূহ করে তোলে।”

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গণমাধ্যমে ডেঙ্গু রোগীর যে তথ্য দিচ্ছে এবং করপোরেশনের মতো সংস্থাগুলোকে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তাতে তথ্যের ঘাটতি, অসম্পূর্ণতা ও বিভ্রাট রয়েছে – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে তালিকা পাচ্ছি, সেটা ধরে ডেঙ্গু রোগীদের বাসায় বাসায় যাচ্ছি । এছাড়াও বিভিন্নভাবে আমাদের কাছে যে তথ্যগুলো আসে, আমরা সেখানেও এডিস মশার বিস্তার রোধে উৎস নিধন করছি, প্রজননস্থলগুলো-আধারগুলো ধ্বংস করছি। কিন্তু তথ্যগুলো যদি পরিপূর্ণ হয়, তথ্যে বিভ্রাট না থাকে এবং তথ্যগুলো যদি সঠিকভাবে পায়, তবে কাজটি আরও সহজ হয়ে যাবে। আমরা যদি সঠিক তথ্য পায় তাহলে আরও কার্যকরভাবে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।”

অনেক সময় ভুল তথ্যের কারণে এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণ দুরূহ হয়ে যায়, বিলম্বিত হয় জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমি সকলের কাছে নিবেদন করব, আমাদেরকে সঠিক তথ্য দেবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ছাড়াও আমি সকলের কাছে নিবেদন করছি, আপনারা যে সকল তথ্য পাবেন আমাদেরকে সরাসরি জানাবেন। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বাত্মকভাবে কাজ করে চলেছি। আমরা সঠিক তথ্য পাওয়া মাত্রই আমরা সেখানে ব্যবস্থা নিতে পারব। উৎসস্থল নিধন ছাড়া এডিস মশার বিস্তার রোধ করা সম্ভব না। সারা বিশ্বেই এটা স্বীকৃত, পরীক্ষিত। আমরা সেই কাজটাই করছি কিন্তু কাজটি কার্যকরভাবে করার জন্য পর্যাপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদান অত্যাবশ্যকীয়।”

এ সময় ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস জানান, “আমরা প্রত্যেকদিনই আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টায় যে সকল রোগী সনাক্ত হয়, হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের ঠিকানাগুলো আমরা নিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা লক্ষ করি যে, এখানে বিভিন্নভাবে আংশিক তথ্য দেওয়া হয়। অনেক ঠিকানা সঠিক না, ঠিকানায় পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়না। সুতরাং আমাদের খুব বেগ পেতে হয়।”

এর আগে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউচর এলাকায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে ১১৬ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের মাঝে সাড়ে ৪ হাজার টাকা শিক্ষা বৃত্তি এবং ১৮৬ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করেন।

এছাড়াও নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাংলাদেশ মাঠের উদ্বোধন করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ হাজী সেলিম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিধ মো. সিরাজুল ইসলাম, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনোয়ার ইকবাল, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলমগীর, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নুরে আলম, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন , ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাইদুল ইসলাম এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।