আজকের দেশ ডেস্ক : ওসমান সিদ্দিকী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটদের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন নীতিনির্ধারক। কিন্তু তার আসল পরিচয় হলো তিনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী স্বাধীনতাবিরোধী ওসমান ফারুকের ভাই।
তার নেতৃত্বে বাংলাদেশবিরোধী একটি শক্ত লবি তৈরি হয়েছে মার্কিন প্রশাসনে। আর এই লবিকে অর্থ যোগাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ওসমান সিদ্দিকী ডেমোক্রেট দলের একজন অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ফিজিতে ২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। এখন তিনি বাইডেন প্রশাসনের একজন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শক। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান।
তার ভাই ওসমান ফারুক ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্ত শুরু হলে ওসমান ফারুক পালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানে তিনি বসবাস করছেন।
একাধিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, ওসমান সিদ্দিকী শুরু থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী একজন ব্যক্তি হিসেবে কাজ করছেন এবং জো বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর তিনি প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন এবং এই প্রভাবকে তিনি বাংলাদেশ বিরোধিতায় কাজে লাগান। জো বাইডেনের নেতৃত্বে ডেমোক্রেটরা ক্ষমতায় আসার পরপরই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হয়েছে।
ওসমান সিদ্দিকীর কারণেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, ওসমান সিদ্দিকীর জন্যই ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে ওসমান সিদ্দিকী একা নয়, দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মীর কাশেমের পুত্র ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক গং এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের একটি শক্ত খুঁটি তৈরি হয়েছে। এই খুঁটিটি মার্কিন প্রশাসনের ভিতরে নিবিড় ভাবে কাজ করছে। এই প্রশাসন প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ মার্কিন প্রশাসনের কাছে দিচ্ছে।
যেহেতু এখন ওসমান সিদ্দিকী অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়েছেন বাইডেন প্রশাসনে, সেজন্য তিনি এই অভিযোগগুলোকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এই অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
দেখা যাচ্ছে যে, যে অভিযোগে ৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেই অভিযোগটি মনগড়া করা এবং এখন পর্যন্ত প্রমাণিত নয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সাথে এটি সাংঘর্ষিক। মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে বলা হচ্ছে যে, যদি সরকার কোন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে বা দণ্ডিত করে তাহলে তার বিরুদ্ধেই মার্কিন প্রশাসন এরকম ব্যবস্থা নিতে পারে।
কিন্তু এখানে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তারা সবাই র্যাবের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন। কাজেই তারা ক্রসফায়ার করবেন বা তারা সরকারের নির্দেশনা দিবেন এটা চিন্তারও বাইরে অবাস্তব একটি কল্পনা।
তাই এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক, সরকারকে চাপে ফেলা। যে কারণে গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, ঠিক একই কারণে এই সাতজনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এবং বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশ সম্পর্কে যে অপপ্রচার করে সেই অপপ্রচারের পালে হাওয়া দিতেই এ নিষেধাজ্ঞা বলে অনেকে মনে করছেন।
আর ওসমান সিদ্দিকী সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি বাংলাদেশেবিরোধী তৎপরতার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করবেন বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছেন।