যশোরে লাভলী হীজড়ার খুনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন সহ ৪ জন গ্রেফতার হত্যাকাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার

অন্যান্য এইমাত্র

সুমন হোসেন ঃ যশোরে লাভলী হীজড়া খুনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ এবং যশোর জেলা ডিবি পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, ৪ জন গ্রেফতার সহ হত্যাকাণ্ডে ব্যাবহার করা অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে,
শনিবার ৮ জানুয়ারি, সকাল অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় কোতয়ালী থানাধীন ৮নং দেয়াড়া মডেল ইউপিস্থ নারাঙ্গালী সাকিনে যশোর-ছুটিপুরগামী পাকা রাস্তার উপর তৃতীয় লিঙ্গের জনৈক আঃ কাদের @ লাভলী (৩০), পিতামৃত- আঃ করিম বিশ্বাস, সাং-ধর্মতলা ফারুকের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-
কোতয়ালী, জেলা-যশোরকে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারীরা গতিরোধ করে গুলি করে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এলোপাতাড়ি শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দ্বারা আঘাত করে গলায় পোচ মেরে রক্তাক্ত করে মটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।

যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম দিক নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর তত্বাবধানে ডিবি’র এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে ডিবি ও কোতয়ালী থানা পুলিশের এসআই খান মাইদুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটা যৌথ চৌকস টিম কোতয়ালী থানাধীন হাশিমপুর, দোগাছিয়া, ঝাউদিয়া, নারাঙ্গালী, ধর্মতলা এলাকায় রবিবার ৯ জানুয়ারি, রাত ১ টা ৩০ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে হত্যায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তাদের নিকট থেকে হত্যাকাজে ব্যবহৃত ১টি বার্মিজ চাকু, ১টি বিদেশী পিস্তল, মোট ৫ রাউন্ড গুলি, ১টি করাত কুড়াল, ৩ রাউন্ড গুলির বুলেট ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা হত্যার দায় স্বীকার করে জানায় যে, হিজড়া সম্প্রদায়কে পরিচালনা করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আকাংখা, পূর্ব বিরোধের জের ও অন্যান্য আর্থিক লাভবানের জন্য উপরোক্ত ধৃত ও পলাতক আসামী জিয়াউর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামী পরস্পর যোগসাজসে হিজড়া লাভলীকে হত্যা করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা করে গতকাল শনিবার ৮ জানুয়ারি, সকাল অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় লাভলীর ইজিবাইককে গতিরোধ করে আসামী শাকিল পারভেজ ও মেহেদী হাসান তাদের ব্যবহৃত পিস্তল দ্বারা গুলি করে ।
কিন্তু গুলি মিস ফায়ার হলে আসামী শাকিলের হাতে থাকা বার্মিজ চাকু দ্বারা মুখমন্ডলের বিভিন্ন জায়গায় ও গলায় পোচ দিয়ে রক্তাক্ত করে মটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।

অস্ত্রগুলি উদ্ধার ও হত্যা সংক্রান্তে কোতয়ালী থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়।

এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম বাদী হয়ে অস্ত্রগুলি উদ্ধার সংক্রান্তে মামলা দায়ের করেন এবং ভিকটিম লাভলীর ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-২৭, তাং- ৯ জানুয়ারি,২০২২ ইং, ধারা-১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯এ, (২) কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-২৮, তাং-৯ জানুয়ারি,২০২২ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানা যথাক্রমে, মোঃ শাকিল পারভেজ (২১), পিতা- জিয়াউর রহমান, মাতা- হালিমা বেগম, সাং-দোগাছিয়া
মোঃ মেহেদী হাসান (১৯), পিতা-মোঃ শাহাজুল বিশ্বাস, মাতা-রহিমা বেগম, সাং-ঝাউদিয়া, উভয়থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর নাজমা @ তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) নাজমা (৩৫), পিতা- শেখ মুজিবর, মাতা- খতজা বেগম, স্বামী- জিয়াউর রহমান, সাং-খোলাডাঙ্গা গাবতলা স্কুলের পিছনে রোজিনার বোনের বাসার ভাড়াটিয়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর স্থায়ী ঠিকানা-সাং-কালিকাপুর, থানা-মতলব, জেল-চাঁদপুর, এবং
সেলিম @ তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সেলিনা (৪৫), পিতা- মৃত লাল মিয়া, স্বামী-সুজন হোসেন, সাং- খোলাডাঙ্গা গাবতলা স্কুলের পাশে, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর।

উদ্ধারকৃত আলামত সমুহ যথাক্রমে,
১টি বার্মিজ চাকু, ১টি বিদেশী পিস্তল,
মোট ৫ রাউন্ড গুলি, ১টি করাত কুড়াল,৩ রাউন্ড গুলির বুলেট এবং
২ টি মোবাইল ফোন। গ্রেফতার কৃতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।