অভয়নগরের সুন্দলী ইউপি মেম্বার উত্তম সরকার হত্যার মুল শ্যুটার সহ ৩ জন

অন্যান্য এইমাত্র

সুমন হোসেন ঃ ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি, সন্ধ্যা রাত সাড়ে ৮ টার সময় অভয়নগর থানাধীন ৩নং সুন্দলী ইউনিয়ের হরিশপুর সাকিনে হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মাঠে সুন্দলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকারকে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারীরা গুলি করে হত্যা করে ফেলে চলে যায়।


বিজ্ঞাপন

এই ঘটনা সংক্রান্তে অভয়নগর থানার মামলা নং-০৭, তাং-১১/০১/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

মামলাটি ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম দ্রুত সময়ে রহস্য উদঘাটনের জন্য মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

জেলার পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ডিবি’র অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ইতোপূর্বে হত্যার সাথে জড়িত ০৫ জন চরমপন্থী সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের হেফাজত হইতে অস্ত্রগুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য, সিম মোবাইল, মটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমান এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ও এসআই ইদ্রিসুর রহমানদের সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম গত ৩১ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫ টা থেকে ১ জানুয়ারি, ভোর সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত অভয়নগর, মনিরামপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ও মুল শ্যুটার অজয় বিশ্বাস ও সাধন বিশ্বাসদ্বয়সহ আরো ৩ চরমপন্থি সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের হেফাজত থেকে উত্তম সরকারকে গুলি করে হত্যাকাজে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলি উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধৃত ও পলাতক আসামীগণ একটি সংঘবদ্ধ কথিত “নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট” পার্টির সক্রিয় সদস্য।

তারা পরস্পর যোগসাজসে তাদের দলীয় ছদ্মনাম ব্যবহার করে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সমুহে বিভিন্ন এলাকায় তাদের হেফাজতে থাকা অবৈধ অস্ত্রগুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য ইত্যাদি ব্যবহার করে হত্যা, চাঁদাবাজি সংঘটন করে থাকে মর্মে জানা যায়।

আরো জানা যায়, তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় তারা সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে নতুন দল গঠন করে অত্র জেলার অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুরসহ আশপাশ জেলা সমুহে বিভিন্ন মাছের ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও হত্যাকান্ড সংঘটন করে থাকে মর্মে তথ্য প্রমান পাওয়া যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় ধৃত আসামী ও পলাতক আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে গত ১০ জানুয়ারি, সন্ধ্যা রাত সাড়ে ৭ টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে যেকোন সময় অভয়নগর থানাধীন হরিশপুর সাকিনে হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মাঠে সুন্দলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য উত্তম সরকারের নিকট চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে হত্যাকারীরা মোবাইল ফোনে স্বীকৃতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট চাঁদাদাবী করে বলে জানা যায়।

গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। অবৈধ অস্ত্রগুলি উদ্ধার সংক্রান্তে এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন।

মনিরামপুর থানার মামলা নং-০১, তাং-০১/০২/২০২২ খ্রিঃ, ধারা- দি আর্মস এ্যাক্টস্ ১৮৭৮ এর ১৯ এ/১৯(এফ)।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানা যথাক্রমে, অজয় বিশ্বাস (১৯), পিতা-সহদেব বিশ্বাস, সাং-পাঁচকড়ি, থানা-মনিরামপুর, সাধন বিশ্বাস (২১), পিতা-প্রফুল্য বিশ্বাস, সাং-কচুয়া, থানা-অভয়নগর, ৩। পলাশ পাড়ে (৩২), পিতা-নির্মল পাড়ে, পাঁচকাটিয়া, থানা-মনিরামপুর, সর্বজেলা-যশোর।

ইতোপূর্বে গ্রেফতার হয়েছে ইকরামুল গোলদার @ ছদ্মনাম জুয়েল (১৯), পিতা-মোঃ ইসাহাক গোলদার, মাতা-রাশিদা বেগম, সাং-রুদাঘর উত্তরপাড়া, থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা, প্রজিৎ বিশ্বাস @ বুলেট (৪৬), পিতা-মৃত নিতাই বিশ্বাস, মাতা-মৃত. ভদ্দরী বিশ্বাস সুন্দলী পূর্বপাড়া, থানা-অভয়নগর, জেলা-যশোর, পল্লব বিশ্বাস @ ছদ্মনাম সুদীপ্ত (২৪), পিতা-পরিতোষ বিশ্বাস, মাতা-অর্চনা বিশ্বাস, সাং-সুজাতপুর, থানা-মনিরামপুর, জেলা-যশোর,
প্রশান্ত মন্ডল (৩৮), পিতামৃত- শিব পদ মন্ডল, মাতা-মৃত ঊষা রানী মন্ডল, সাং-দক্ষিন কদমতলা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-
সাতক্ষীরা অস্থায়ী ঠিকানা-রিফাত অটো রাইচ মিলের পাশে মিল মালিকের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, চুকনগর, থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা (ভাসমান) ( পূর্বে আত্মসমর্পন করেছিল) বিজন কুমার মন্ডল @ বিনোদ (৪২), পিতা-মৃত বিষ্ণুপদ মন্ডল, সাং-দিঘলিয়া, থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা। ( পূর্বে আত্ম সমর্পন করেছিল)

উদ্ধারকৃত আলামত সমুহের বিবরণ যথাক্রমে, ২টি পাইপ গান, এবং ২ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজসহ ৩ রাউন্ড গুলির খোসা।
গ্রেফতার কৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।