র‌্যাব-১ এর অভিযানে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের ৩ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার সয় ৩ জন নারী ভিকটিম উদ্ধার

অন্যান্য এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বর্তমানে দেশে মানব পাচারের মত ঘৃন্যতম অপরাধ থেমে নেই। মানব পাচারকারী চক্রের টার্গেট দরিদ্র মানুষ। পাচারকারীরা বিদেশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সহজ সরল এই মানুষগুলোকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। পাচারকারীদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে এসব মানুষ। যার অধিকাংশই নারী। এসকল নারীদেরকে বিদেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বিভিন্ন পেশায় চাকুরীর কথা বলা হলেও তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টি, দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে।


বিজ্ঞাপন

এই পর্যন্ত র‌্যাব-১ আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের বিদেশী নাগরিকসহ অসংখ্য মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এসকল মানব পাচারকারী চক্রের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে এবং সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কিছু এলাকায় মানব পাচারকারী চক্রের তথ্য পাওয়া যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি, আনুমানিক রাত ৮ টায় র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির ঢাকা বিমানবন্দর থানাধীন মনোলোভা রেস্টুরেন্ট এর বিপরীত পার্শ্বে পাকা রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে।

উক্ত অভিযান পরিচালনা কালে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ আজিজুল হক (৫৬), পিতা-মৃত সাহেব মিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, মোঃ মোছলেম উদ্দিন @ রফিক (৫০), পিতা- মৃত ফরিদ মিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম এবং মোঃ কাউছার (৪৫), পিতা- মৃত আব্দুল, জেলা- ঢাকাদের’কে গ্রেফতার করে।

এসময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে ৩ টি পাসপোর্ট, ৩ টি মোবাইল ফোন, নগদ ২৭,০০০ টাকা ও ৩ জন নারী ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার কৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্তমানে দুবাই এ অবস্থানরত মহিউদ্দিন (৩৭), জেলা- চট্টগ্রাম এবং শিল্পী (৩৫) এর পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এই ঘৃণ্য অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। মহিউদ্দিন এর সাথে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের যোগসাজসের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পলাতক আসামী নূর নবী @রানা (৩৫), জেলা-নোয়াখালী এবং মনজুর হোসেন (৩৩), জেলা-ঢাকা মানব পাচারকারী চক্রের এ দেশীয় মূলহোতা।

মোঃ আজিজুল হক এই মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সমন্বয়ক। ধৃত আসামী আজিজুল হকের মাধ্যমে মহিউদ্দিন ভিকটিমদের বিদেশে যাওয়ার খরচের টাকা প্রেরণ করত। পলাতক আসামী তাহমিনা বেগম (৪৮) এবং গ্রেফতার কৃত আসামী রফিক ও কাউছার কমবয়সী সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করতো ।

এরপর বিভিন্ন কোম্পানী ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এই প্রতারক চক্র মেয়েদেরকে বিদেশ গমনে প্রলুব্ধ করে এবং কোন তরুনী বিদেশ গমনে রাজী না হলে বহুবিধ হুমকি প্রদান করে। এছাড়াও এই মানব পাচারকারী চক্র প্রবাসে গমনে ইচ্ছুক বহুবিধ পুরুষ ভিকটিম হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

গ্রেফতার কৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, অদ্যাবধি তারা প্রায় ৮০ জন নারীকে এভাবে বিদেশ পাচার করেছে। র‌্যাব এই দুর্ভাগা নারীদেরকে উদ্ধারে এবং অন্যান্য অপরাধীদেরকে গ্রেফতারে সচেষ্ট রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।