নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ গত ১০ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানাধীন রোজ উড হোটেলের ৮০২ নং কক্ষে একজন অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে নগরীর হালিশহর থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
মামলাটি তদন্তকালে রোজ উড হোটেলের রেজিষ্টার, আসামী কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ, হোটেল রুমে প্রাপ্ত আলামত পর্যালোচনা করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতা আশরাফুল ইসলাম প্রঃ সুজন (২৬)কে শনাক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) জনাব মোঃ আব্দুল ওয়ারীশ এর নির্দেশনায় অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শরীফ উদ্দিন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ রবিবার ১৪ ফেব্রুয়ারি, রাত ২ টার সময় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা হতে আশরাফুল ইসলাম প্রঃ সুজন কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল ইসলাম প্রঃ সুজন মামলার ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করে। জানায় যে, সে মা বাবার সাথে উত্তরায় নিজ বাড়ীতে বসবাস করে এবং উত্তরা ল্যাবএইড হাসপাতালে রিপোর্ট ডেলিভারী সেকশনে চাকুরি করে। ভিকটিম তার গ্রামের বাড়ীর প্রতিবেশী। ভিকটিম তার স্বামী ও ০৩ সন্তানের সাথে বন্দর থানা এলাকার কলসী দিঘীর পাড়ে বসবাস করত।
ভিকটিমের স্বামী ভিকটিমকে বিভিন্ন কারণে সন্দেহ করায় ভিকটিমের সাথে তার স্বামীর দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং ভিকটিম গত ১ বছর যাবৎ তার ০৩ সন্তান নিয়ে হালিশহর বাবার বাড়ীতে বসবাস করে আসছে।
একই এলাকার সুবাদে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয় এবং গত দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি ভিকটিমের সাথে অন্য কোন ব্যক্তির সম্পর্ক তৈরী হয়েছে মর্মে সে ভিকটিমকে সন্দেহ করত।
ভিকটিমের সাথে তার মনোমালিন্যের কারণে তার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং সে ভিকটিমকে খুন করার পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে ঘটনার দিন সকালে রোজ উড হোটেলে উপস্থিত হয়।
বিকালে সে ভিকটিমকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রুমে নেয় এবং ভিকটিমকে ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত পানীয় পান করতে দেয়। ভিকটিম ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত পানীয় পান করার ফলে কিছুটা অচেতন হওয়ার পরপরই ছুরি দিয়ে গলা ও পেটে আঘাত করে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে।
নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সূত্রে উল্লেখিত কু-লেস মামলাটির রহস্য উদঘাটন, অভিযুক্ত ও ভিকটিমের পরিচয় শনাক্তকরণ এবং গ্রেফতার সম্ভব হয়। মামলাটির তদন্ত অব্যাহত আছে।