গোয়াইনঘাট সীমান্তের চোরাচালানের স্বর্গ রাজ্য অদৃশ্য কারণে নিরব কর্তৃপক্ষ!

অন্যান্য এইমাত্র সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা যখন চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য। প্রতিদিন অন্তত কয়েক লক্ষ টাকারভারতীয় চোরাইপণ্য ঢুকছে এই সীমান্ত পথে। গোয়াইনঘাট উপজেলা অন্ততম কয়েকটি চোরাচালান রোডে প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা


বিজ্ঞাপন

বাহিনীর নিয়োজিত সোর্সের মাধ্যমে লক্ষ, লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।

এক কথায় গোয়াইনঘাট সীমান্তের চোরাচালান রাজ্য এক অদৃশ্য কারণে নিরব রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে, গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রত্যকটি সীমান্ত এলাকায় রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প।

তবুও সীমান্তে জুড়াবানের পানির মত ভারতীয় পণ্য প্রবেশ করলেও দায় সারা ভূমিকায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট বাহিনী গুলো। অভিযোগ রয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকাজুড়ে প্রতিদিন প্রায় লক্ষ, লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

এসকল পণ্য প্রবেশের পথে নির্দিষ্ট হারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নির্ধারিত সোর্সম্যান বাহিনীর কাছে দিতে হয় চাঁদা।

এছাড়া কোনো কোনো দিন মামলার জন্য সিষ্টেম লাইন দিয়ে চলছে চোরাচালান ব্যবসা। আর ইতোমধ্যেই রয়েছে চোরাচালান বাণিজ্য নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন তারা।

যার জন্য প্রতিনিয়ত এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

প্রতিদিন সীমান্ত এলাকায় মহড়া দিতে থাকে এই চোরাকারবারীর বাহিনীর সদস্যরা। যার ফলে স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে জীবন-যাপন করছেন।

অপরদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার মধ্যে চেরাচালানের অন্যতম নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে- সিলেট রোড, গোয়াইনঘাট-সারিঘাট রোড, তামাবিল-সিলেট রোড, গোয়াইনঘাট-সালুটিকর রোড ও কোম্পানীগঞ্জ রোড। অন্যান্য এলাকারতুলনায় এই উপজেলায় সুযোগ সুবিধা ভাল।

২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে আ বর্ডারের জিরো পয়েন্টএলাকায় বিনা বাঁধায় ঢুকতে পারে যে গাড়ী সমুহ। নির্ধারিত টাকা সোর্সদের নিকট পরিশোধ করার পর পর কয়েক মিনিটের মধ্যে গোয়াইনঘাট সীমান্তের প্রতাপপুর, লামা পুঞ্জি,পুরাতন সংগ্রাম পুঞ্জি, জিরো পয়েন্ট, লালমাটি, গুচ্ছ গ্ৰাম, সোনাটিলা, তামাবিল,‌ স্থলবন্দর তালতলা, আমস্বপ্ন মিত্রি মহলসহ সীমান্ত ফাঁড়ির আশাপাশের অর্ধশাতাধিক এলাকা দিয়ে অনায়সে আসছে চোরাই পণ্য।

সুযোগ সুবিধা ভাল থাকায় গোয়াইনঘাট উপজেলার এই রোড গুলোদিয়ে অন্তত লক্ষ লক্ষ টাকার ভারতীয় মটর সাইকেল, মোবাইল হ্যান্ড সেট, শাড়ী,শতশত,গরু, মহিষ, কসমেট্রিক্স, হরলিক্স, ইয়াবা, ফেন্সিড্রিল, বিভিন্ন ব্যান্ডের অফিসার চয়েস মদ,আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, সুপারী আর বাংলাদেশ হতে ভারতে পাচার হচ্ছে কম্বল জ্যাকেট, মটরশুটি, মটর ঢাল।

সীমান্তে বসাবাসরত সাধারণ নাগরীকরা জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত সোর্সম্যানদের নেতৃত্বে তাদের সোর্সদের মাধ্যমে প্রতিদিন লক্ষ, লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

সীমান্ত বাসিন্ধারা আরও জানান- কিছু কিছু সময় অনেক চোরাকারবারী নিদিষ্ট সোর্সদের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ না করলে ঐ চোরাকারবারীর নিয়ে আসা পণ্য আটক করে লোক দেখানো হয়।

অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলা দিতে চোরাকারবারীদের সাথে সিষ্টেম চুক্তি মাধ্যমে কিছু সংখ্যাক গরু মহিষ এবং হাতে গুনা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে জনসাধারণের আইওয়াশ করছে বলে জানান।

এলাকাবাসী আরও বলেন, মেজর সিনহা রাশেদ হত্যাকান্ডের পর পর চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিস্থিতি গোলাটে হওয়ায় চোরাকারবারী চক্রের সদস্যদের সিলেটের সিমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আগমন ঘটে।

বিগত কয়েকমাস হতে গোয়াইনঘাট সীমান্ত এলাকা গুলোতে অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলছে চোরাকারবার। হঠাৎ করে গত কয়েকমাসে গোয়াইনঘাট সীমান্ত হয়ে উঠেছে চোরাকারবারী চক্রের স্বর্গ রাজ্য হিসাবে।

আঙ্গুল ফলে কলাগাছে পরিণত হয়ে উঠছে হাতে গুনা কয়েকজন চোরাকারবারী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গোয়াইনঘাট সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বশীলরা কখনো কখনো অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান ভারতীয় পণ্য আটক করলেও কিন্তু অদৃশ্য কারণে তারা সাংবাদিকদের তথ্য দিতে অপারগত প্রকাশ করেন।

এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সিলেটের বিজিবি ক্যাম্পের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের প্রতি আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সাংবাদিক মহল।

কিন্তু রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও সীমান্তের রাজা চোরাচালান চক্রের গড়ফাদা ,দের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

সীমান্ত এলাকায ত্রাসের চোরাকারবারী রামরাজত্ব কায়েম করছে। তাদের রয়েছে অবৈধ সম্পত্তি।

সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানকারীদের নেতৃত্ব দিয়ে চলছে,এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

সরকারি, সংস্থার কোন নজর নেই এদের উপর। তাদের এমন অবৈধ কান্ড দেখে অবাক গোয়াইনঘাট উপজেলাবাসী।

চোরাচালান চক্রের গডফাদার দের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী বলে মনে করছেন উপজেলার সচেতন মহল।