২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত খুলনার ভদ্রা সেতুর পিলার দেবে যাওয়ার অভিযোগ

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র সারাদেশ

সড়ক ও জনপথ বিভাগের মৌলভীবাজার ও শরীয়তপুরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ


বিজ্ঞাপন

!! দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে গতকাল মঙ্গলবার ১০টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৩ টি অভিযান পরিচালনা করা সহ ৭ টি দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে !!

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট এ আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় অবস্থিত ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত চটচটিয়া-শিবনগর সেতুতে নিম্নমানের ইট সিমেন্ট ব্যবহার এবং সেতু কাজ শেষ না হতেই একটি পিলার দেবে যাওয়া সংক্রান্ত অভিযোগে বুধবার ২৩ মার্চ দুদক জেলা কার্যালয়, খুলনার সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ-এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে দুদক টিম সেতুটির কাজের বিভিন্ন অংশ সরেজমিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে। উক্ত সেতুর নির্মাণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঠিকাদারের অনুকূলে মোট ২৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার কাজের ওয়ার্ক-অর্ডার দেয়া হয়।

সেতুটির অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং ইতোমধ্য উক্ত কাজের রানিং বিল হিসেবে ২৭ কোটি টাকার পরিশোধ করা হয়েছে। নির্মিত সেতুর চটচটিয়া অংশের ২য় পিলারটি অন্যান্য পিলার থেকে বেশ কিছুটা দেবে গেছে মর্মে অভিযানকালে প্রতীয়মান হয়।

এলাকাবাসী জানান, সেতুটি নির্মাণ করার কিছুদিন পরেই ২য় পিলারটি দেবে যায়। তারা জানান, এই খরস্রোতা নদীর উপর দেবে যাওয়া সেতুতে চলাচল করা জান-মালের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষতিকর।

তবে, নির্মিত সেতুটির পিলার পরিমাণ দেবে গেছে এবং নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর মতামত গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখপূর্বক এবং উক্ত কাজে কোনরুপ অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছে কি-না; তা পর্যালোচনা করে দুদক টিম পরবর্তীতে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, শরীয়তপুর এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশ করে সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, ফরিদপুর এর উপ-পরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে গতকাল অপর একটি এনফর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে অভিযোগে উল্লেখিত রাস্তা সংস্কার কাজের টেন্ডার ডকুমেন্টসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়।

এছাড়া, উক্ত রাস্তার মেরামত কাজে ব্যবহারিত নির্মাণ সামগ্রী এবং নির্মাণকাজের গুণগত মান সরেজমিন পরিদর্শন ও যাচাই করা হয়।

উক্ত রাস্তার কাজের টেন্ডার সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত পরবর্তীতে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে কিনা; তা পর্যালোচনাপূর্বক শীঘ্রই কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে এবং বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুদক জেলা কার্যালয়, হবিগঞ্জ এর উপপরিচালক (সংযুক্ত) জনাব এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে আজ অপর একটি অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বিজয়া বাজার হতে কাপনা পাহাড় পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়।

এসময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ, মৌলভীবাজার-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, মৌলভীবাজার পৌরসভার এসএই এবং ঠিকাদারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বিজয়া বাজার হতে কাপনা পাহাড় পর্যন্ত ৭ কি:মি দীর্ঘ রাস্তার মধ্যে আড়াই কি:মি: রাস্তার বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এবং কোন কোন অংশ ভেঙ্গে যাওয়া মেরামত করা হয়েছে মর্মে দেখা যায়।

অপরদিকে কুলাউড়া জেলার ব্রাক্ষণবাজার হতে শমসেরনগর, কমলগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার ৪টি অংশের পুন:নির্মাণ কাজ ২৬.০৪.২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী এবং কাজের গুনগত মান নিশ্চিতপূর্বক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেছে দুদক টিম।

এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ৭টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।