সামরিক সহায়তায় বঙ্গবন্ধু ২ স্যাটেলাইট

Uncategorized জাতীয়

কুটনৈতিক বিশ্লেষক ঃ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট –১ স্যাটালাইট কক্ষপথে প্রেরণের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ স্যাটালাইট কক্ষপথে পাঠানো নিয়ে রুশ প্রজাতন্ত্র এবং বাংলাদেশ একই সাথে কাজ করছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে সংকট থাকলেও রাশিয়ার ভাষায় এ প্রজেক্ট নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কিছু নেই

বিএস-১ মুলত ষ্টেশনারী স্যাটালাইট এবং এর কাজ ছিল যোগাযোগব্যবস্থাকে উন্নত করা।ইতিমধ্যে হুন্ডুরাস, তুরস্ক, ফিলিপাইন্স,ঘানা,ক্যামেরুন,দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু টেলিভিশন চ্যানেল বিএস-১ ব্যবহার করছে।দেশের ভিতর থেকে বিএস১ এর আয় ১১ কোটির বেশী।
একই সাথে অন্যান্য দেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলের ক্লিন ফিড দিতে বাধ্য করা,ব্যাংকিং এবং এটিএম নেটওয়ার্ক,দেশের সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ এবং মিলিটারি ইনফরমেশন আদানপ্রদানে ব্যবহৃত হয়।যার জন্য পূর্বে সিংগাপুর ভিত্তিক স্যাটেলাইট এর উপর নির্ভর করতে হত।

বিশ্বের অন্যান্য অংশের স্যাটেলাইট এর সাথে যোগাযোগ করে মিডিল ইস্টের কিছু দেশেও সার্ভিস প্রদান করার চেষ্টা করছে বিএস-১।
এছাড়া নেপাল এবং মিয়ানমার বিএস-১ এর ট্রান্সপন্ডার নিয়ে আলাপ আলোচনা চালাচ্ছে।২০৩০ সাল নাগাদ বিএস-১ থেকে পূর্ণ পরিমাণ লাভ আসতে শুরু করবে।
২০২৭ নাগাদ লাভের মুখ দেখবার কথা থাকলেও স্যাটেলাইট সেবায় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হওয়ায় এ মার্কেটের প্রফিট মার্জিন কমেছে।তবে বেশ কিছু দেশের মিডিয়ায় বিএস-১ এর সেবা দেবার এডভারটাইজ করছে বাংলাদেশ

বিএস-১ এর যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় করতে বিএস-২ কে লো আর্থ অবজারভেটরি স্যাটেলাইট হিসেবে নির্মাণ করা হবে।এটি মুলত ভুমি থেকে ৫০০-১০০০ কিমি উপরে থাকবে।

যা আমাদের ঝড়,জলোচ্ছ্বাস, ভুমির ম্যাপিং,মেরিটাইম সিকিউরিটি এবং বর্ডার সিকিউরিটি প্রদান করবে।মুল কথা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে সামরিক এবং যোগাযোগ উভয় ক্ষেত্রেই একই সাথে কাজ করবে বিএস-১ এবং বিএস-২..বিএস-২ মুলত প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সীমান্ত আর দেশের অভ্যন্তরীণ ডাটা সংগ্রহ এবং সিকিউরিটির স্বার্থে ব্যবহৃত হবে।

ইতোমধ্যে আমরা সিংগাপুর ভিত্তিক স্যাটেলাইট থেকে এ সেবা নেই,তবে সীমান্ত এলাকা কিংবা দেশের সমুদ্রসীমায় নজরদারী করবার কোন সক্ষমতা আমাদের নেই।

বিএস ২ কে ডাটা এবং সিকিউরিটি উভয় সক্ষমতা নিয়ে কাজ করার মত করেই ডিজাইন করা হবে।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানী লিমিটেড এবং গ্লাভকসমস যা মুলত রাশান স্টেট স্পেস কর্পোরেশনের সাবসিডিয়ারি উভয় পক্ষেই ৪৩৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই হয়েছে।

১৫ টি ছোট স্যাটালাইটের ফাংশনালিটির বদলে বিএস-২ মুলত ৬ টি বৃহৎ স্যাটালাইটের ফাংশনালিটি প্রদান করবে।একই সাথে জলোচ্ছ্বাস, ঝড়,বন্যার সিভিলিয়ান ইনফরমেশন পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে প্রদান করবে।

উল্লেখ্য,পাশ্ববর্তী দেশ মিলিটারি ইনফরমেশন সংগ্রহকারী স্যাটেলাইট প্রেরণ করলে তা নিয়ে ভারত এবং মিয়ানমারের মতামত ভিন্ন হতে পারে।বিএস-১ মহাকাশে প্রেরনের পর মিয়ানমার নিজেদের একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণের জন্য জাপানের সহায়তা চেয়েছিল।অন্যদিকে ভারত সার্ক স্যাটেলাইট এর ২ টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে দিয়েছে।

যদিও ইসরো বেশ আগেই মিলিটারি এবং কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করেছে,তবে বন্ধুপ্রতীম দেশের মিলিটারি ক্যাপেবল স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ নিয়ে ভারতের নেটিজেনদের মতামত কেমন হবে তা সময়ই বলে দেবে।

বিএস-২ স্যাটেলাইট,রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র সহ বিভিন্ন প্রজেক্টের জন্য রাশিয়া-বাংলাদেশ কারেন্সী সোয়াপ নিয়েও কাজ করছে।যদিও বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার মিলিটারি সক্ষমতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বেশ অস্বস্তি রয়েছে।ইতিমধ্যে,রাশিয়া থেকে যাতে সামরিক সরঞ্জাম বাংলাদেশ না কিনে তার জন্য বাংলাদেশকে ”সতর্ক” করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও বাংলাদেশ এটিকে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের মতামত হিসেবেই বিবেচনা করছে।


বিজ্ঞাপন