নিজেস্ব প্রতিনিধি ঃ ১৩ জুন বিকাল ৫ টায় এয়ারপোর্ট থানাধীণ দোয়ারিকা মধ্য ফেরিঘাট ভাই ভাই স্টোর“ নামক রড, সিমেন্টের দোকানের সামনে পাকা রাস্তায় বরিশাল জেলা বাবুগঞ্জ থানাধীন রাজকর এলাকার কাজী আব্দুল কাদের এর ছেলে কাজী কামালের একটা অটোগাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ-সংক্রান্তে ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোসাঃ তানিয়া (২৬) গত ১৭ জুন বিএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় ৪ জন অজ্ঞাতনামাদের অভিযুক্ত করে একটি এজাহার দায়ের করেন। ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোসাঃ তানিয়া এজাহারে জানান ,তাঁর স্বামী মোঃ কাজী কামাল প্রতিদিনের ন্যায় ইং ১৩ জুন সকাল ৮ টায় অটোগাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। ঐ দিন বিকাল ৪ টায় এয়ারপোর্ট থানাধীন বকুলতলা মনির মিয়ার ইটের ভাটার সামনে আসলে অজ্ঞাত নামা ১জন ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আসামী ধরার কথা বলে অটোগাড়িতে উঠে এবং এয়ারপোর্ট মোড়ে যাওয়ার জন্য বললে, যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আইনের ভয় দেখিয়ে এয়ারপোর্ট মোড়ে নিয়ে গেলে সেখানে মটরসাইকেল সহ দাড়ানো অজ্ঞাতনামা আরেকজনকে দেখে।
অটোগাড়িতে থাকা ডিবি পুলিশ পরিচয় প্রদানকারী প্যাসেঞ্জার অটোগাড়িতে বসে মটরসাইকেল আরোহীর সাথে কথা বলে এবং আসামী ধরবে বলে এয়ারপোর্ট থানাধীন দোয়ারিকা ফেরীঘাটের দিকে যেতে বলে। পরবর্তীতে দোয়ারিকা ফেরীঘাটের দিকে রওয়ানা করলে অজ্ঞাতনামা মটরসাইকেল আরোহী ব্যক্তিও অটোগাড়ির পিছনে পিছনে আসে।
বিকাল ৫ টায় এয়ারপোর্ট থানাধীণ দোয়ারিকা মধ্য ফেরিঘাট ভাই ভাই স্টোর“ নামক রড, সিমেন্টের দোকোনের সামনে পাকা রাস্তায় পৌছালে ডিবি পুলিশ পরিচয় দানকারী ব্যক্তি গাড়ি থামাতে বলে গাড়ি থেকে নেমে সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত আরোও অজ্ঞাতনামা ২জন ব্যক্তির সাথে কথা বলতে থাকে এবং কিছুক্ষনের মধ্যে অজ্ঞাতনামা মটরসাইকেল আরোহী তাদের সাথে যোগ দেয়।
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আসামী ধরার জন্য আসছে মর্মে জানায় এবং নিজেদের মধ্যে হালকা নাস্তা করার কথা বলে । অজ্ঞাতনামা মটরসাইকেল আরোহী এক প্যাকেট বিস্কুট ও ১টি মাম পানির বোতল এনে খেতে বললে, ” ভুক্তভোগী কিছুক্ষন আগে ভাত খেয়ে এসেছে এবং এখন আর কিছু খাবে না জানালে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাতনামাদের জোর অনুরোধে সরল বিশ্বাসে বিস্কুট ও পানি খাওয়ার পরে মাথা হালকা ঝিম ঝিম ও ঘুম ঘুম ভাব আসে। অজ্ঞাতনামা ডিবি পরিচয়ের ব্যক্তিরা তাকে খারাপ উদ্দেশ্যে খাবারের সাথে কিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য দিয়েছে মর্মে বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী কামাল অটোগাড়ি স্ট্যার্ট দিতে চাইলে অজ্ঞাত ডিবি পরিচয় দানকারীরা অটো গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নিতে ধস্তাধস্তি ও ঘুষি মেরে অটোগাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলিয়া দেয়ায় ভুক্তভোগীর ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন দৌড়ে আসলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাহাদের মটরসাইকেল ফেলে দ্রুত অটোগাড়ি ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। আন্তঃজেলা চোরচক্রের বর্ণিত প্রায় একই ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ডজনেরও অধিক মামলা রয়েছে এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে এই চক্র একেরপর এক ভুক্তভোগীদের স্বপ্ন ছিনিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি অধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বিএমপি মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম সহ সহকারী পুলিশ কমিশনার এয়ারপোর্ট থানা বিএমপি সাদ্দাম হোসাইন, অফিসার ইনচার্জ এয়ারপোর্ট থানা বিএমপি কমলেশ চন্দ্র হালদার সহ থানার চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা সহ নিরলসভাবে মাঠে নামেন। তারই ধারাবাহিকতায়, এসআই মোঃ সাইদুল হক এর নেতৃত্বে, মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রায়হান সহ সঙ্গীয় চৌকস টিম বিভিন্ন স্পটে অভিযান পরিচালনা করে মোঃ সাখায়েত মুন্সি (৪০), পিতা-মোঃ ছাকেম মুন্সী, মাতা-মোছাঃ রহিমা বেগম, সাং-খান্দারপাড় মুন্সীবাড়ির পার্শে লস্করবাড়ী সংলগ্ন, ডাকঘর-খান্দারপাড়, খান্দারপাড় ইউপি, থানা-মোকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, এ/পি-১-হুগলাডাঙ্গা সাহেদ মেম্বার বাড়ী সংলগ্ন, ০৮ নং ওয়ার্ড, গাউরা ইউপি, থানা-ভাংগা, জেলা-ফরিদপুর, এ/পি-২-গোয়ালচামট, বেতুয়াবাড়ী সড়ক, ১ নং সড়ক, পাপ্পুর দোকান সংলগ্ন, লিয়াকত তহশিলদার এর বাড়ীর প্বার্শে ৮ নং ওয়ার্ড, গোয়ালচামট ইউপি, থানা-ফরিদপুর সদর, জেলা-ফরিদপুর, মোঃ জহির হাসান মোল্লা (৩৫), পিতা-মৃত আমজেদ মোল্লা, মাতা-সিরিয়া বেগম, সাং-উত্তর চন্ডীবর্ধী, মোল্লাবাড়ী ১ নং ওয়ার্ড বল্লগ্ধী ইউপি, থানা-সালতা, জেলা-ফরিদপুর, মোঃ সোহেল হাওলাদার (৪০), পিতা-মৃত সিদ্দিক হাওলাদার, মাতা-কহিনুর বেগম, সাং-শিমুলবাগ (মিজান মঞ্জিল) ৩ নং ওয়ার্ড, থানা-পটুয়াখালী সদর, জেলা-পটুয়াখালী , এ/পি-বাজার রোড (মইন বাবুর কাচারী), ০৮ নং ওয়ার্ড, থানা-কোতয়ালী, জেলা-বরিশাল, মোঃ আমিরুল ইসলাম (৪০), পিতা-মৃত নওশের আলী বিশ্বাস, মাতা-আছিরুন্নেছে
এবং মোঃ মহসীন শেখ (৪৮), পিতা-মৃত বোধয় শেখ, মাতা-মৃত বাগানী বেগম, (০৪-০৫) উভয় সাং-উত্তর বিশ্বাস পাড়া, বিনোদপুর, শফিকুলের দোকানের সংলগ্ন, ০১ নং ওয়ার্ড, বিনোদপুর ইউপি, থানা-মোহাম্মাদপুর, জেলা-মাগুরাদেরকে বিভিন্ন স্পটে একাধিক অভিযান করে চোরাই, ছিনতাইয়ের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল সহ আটক করেন। এর মধ্যে ১ ও ২ নং অভিযুক্তদ্বয়কে ১৭ জুন, সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলা ভাঙ্গা সদর থানাধীন ভাঙ্গা বাজার থেকে , ৩ নং অভিযুক্তকে ১৭ জুন, দুপুরে বরিশালের বিএমপি কোতয়ালী থানাধীন খেয়াঘাট থেকে এবং ৪ ও ৫ নং অভিযুক্তদ্বয়কে ১৮ জুন, রাতে মাগুড়া জেলার মোহাম্মাদপুর থানাধীন বিনোদপুর বাজার থেকে আটক করা হয়। চক্রের ফরিদপুরের ১ নং অভিযুক্ত সাখায়েত মুন্সি (৪০) এই চক্রের গ্যাং লিডার, ২ নং অভিযুক্ত জহির হাসান মোল্লা (৩৫) বিভিন্ন সময়ে নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা পরিচয়ে টার্গেটকৃত গাড়িতে উঠেন,
৩ নং অভিযুক্ত বরিশালের সোহেল হাওলাদার (৪০) গাড়ি মেকানিক চোরাই, ছিনতাই টিমের গাড়ি মেরামত ও যন্ত্রাংশ আলাদা করার কাজ করে থাকে এবং মাগুরার ৪ নং অভিযুক্ত আসামিকে একাধিক বার গ্রেফতার করা হয়।