কক্সবাজারে চলন্ত বাসে রোহিঙ্গা তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টা মামলার প্রধান ২ আসামী বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কক্সবাজারের চকরিয়ায় চলন্ত বাসে এক রোহিঙ্গা তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণচেষ্টা মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত প্রধান দুই আসামী বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে ভুক্তভোগী ভিকটিম একজন রোহিঙ্গা নাগরিক ও কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ১ নম্বর বøকের বাসিন্দা।

সে গত ৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার কুতুপালং (ক্যাম্প-১) আশ্রয়শিবির থেকে পালিয়ে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম শহরে আসে।

সেখানে কাজ না পেয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার রুটের একটি বাস যোগে পুনরায় কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে বাসের ভাড়া দিতে না পারায় ঐ বাসের সুপারভাইজার দুপুরের দিকে তাকে চকরিয়া পৌরসভার বাস টার্মিনালে নামিয়ে দেয়। বাস থেকে নেমে তরুণী টার্মিনালের এক পাশে দাড়িয়ে থাকে।

ঐদিন দুপুর ৩ টার দিকে অন্য একটি পরিবহনের সহকারী বাসচালক ফারুক তাকে কোথায় যাবেন জিজ্ঞাসা করলে তখন ভুক্তভোগী তরুণী উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে যাবে বলে জানায়।

তরুনীর কথা মতে সহকারী বাসচালক ফারুক তাদের বাসে করে তাকে উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে পৌঁছে দিবে বলে একটি খালি বাসে উঠায়। পরবর্তীতে উক্ত বাস করে তরুণীকে চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালী ব্রিজ এলাকায় নিয়ে চালক-সুপারভাইজার ও হেলপার মিলে বাসের ভিতর দলবদ্ধ ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

এ সময় ওই তরুণী চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে তখন বাসের চালক ও সুপারভাইজার পালিয়ে যায় এবং বাসের হেলপারকে স্থানীয় লোকজন আটক করে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী ভিকটিম রোহিঙ্গা তরুণী বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় উল্লেখিত বাসের ড্রাইভার, সুপারভাইজার ও হেলপারসহ সর্বমোট জনকে আসামী করে দলবদ্ধ ধর্ষণ চেষ্ঠার একটি মামলা দায়ে করে, যার নং-২৩, তারিখ ১১ ফেব্রæয়ারি ২০২২ খ্রিঃ, ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-০৩) এর ১০/৩০।

মামলা রুজু হওয়ার সময় ৩নং আসামী মোঃ ফারুক’কে স্থানীয় জনগণ আটক করতঃ চকোরিয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করলেও উক্ত মামলার এজাহারনামীয় প্রধান দুই আসামী বাসের ড্রাইভার এবং সুপারভাইজার পলাতক ছিল। বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অবগত হওয়ার পর থেকে পলাতক দুই আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রাখে।
গোয়েন্দা নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার পলাতক দুই আসামী “বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার” কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন ডুলাহাজরা ও ভাটাখলী এলাকায় অবস্থান করছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার ২৪ জুন আনুমানিক ২ টা ৩০ মিনিটের সময় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযান পরিচালনা কালে আসামী মাহবুব (৩২), পিতা-আমির উদ্দিন, সাং- রিংভং, থানা- চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার এবং শাহ এমরান (৩৫), পিতা- জান শরীফ, সাং- রাজঘাট, থানা-লোহাগারা, জেলা- চট্টগ্রামদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় উল্লেখিত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ১ ও ২নং পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। গ্রেফতার কৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *