নড়াইলে গরু চুরির মিথ্যা অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, মাথা নেড়া করে সাজানো চুরির মামলা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানার অভিযোগ

Uncategorized আইন ও আদালত

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলে গরু চুরির দায়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনসহ মাথা নেড়া করে জেল খানায় পাঠানোর পরেও খান্ত হননি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত’রা জেল থেকে বের হবার পরে আবারও চুরির দায়ে অনিয়ম ভাবে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা বলে অভিযুক্ত ৭ জনকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং এ জরিমানার টাকা ২৪ ঘন্টার মধ্যে না দিলে মামলা দিয়ে আবারও জেল খাটানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন অভিযুক্ত’রা। জানা যায়,নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের চাকই গ্রামের ইখতিয়ার উদ্দিন গাজী’র ছেলে মাসুম গাজী’র বাড়ি থেকে গত (১৫ জুন) রাতে একটি গরু চুরি করে একই ইউনিয়নের চাকই গ্রামের ইসরাফিল বিশ্বাস এর ছেলে রাব্বি বিশ্বাস সহ চাকই,বাশুয়াড়ী,মরিচা ও অভয়নগরের শুভনাড়া ইউনিয়ন এবং বাঘুটিয়া ইউনিয়নে অভিযুক্ত’রা। পরে গত (২৩ জুন) নোয়াপাড়া থেকে অভিযুক্ত গরু চুরির মুল হোতা রাব্বিকে আটক করেন গরুর মালিকসহ তার স্বজন’রা। অভিযুক্ত’রা হলেন,রাব্বি বিশ্বাস (২৩) পিতা,মৃত- ইসরাফিল বিশ্বাস,গ্রাম চাকই,জরিমানা ৭৫ হাজার টাকা,তানভীর বিশ্বাস (১৭) পিতা,মোঃ দেলোয়ার বিশ্বাস,গ্রাম চাকই,জরিমানা ৭৫ হাজার টাকা,রকিবুল গাজী (৩৫) পিতা,মৃত-রুমিয়ার গাজী,জরিমানা ৫০ হাজার টাকা,শিমুল বিশ্বাস (২৪) পিতা,আতিয়ার বিশ্বাস,গ্রাম চাকই জরিমানা ৫০ হাজার টাকা,কালু বিশ্বাস (২১) পিতা,মৃত- তকিবার বিশ্বাস,গ্রাম,চাকই জরিমানা ৪০ হাজার টাকা,হিরোক (৪০) গ্রাম,বাশুড়ী,জরিমানা ৩০ হাজার টাকা,লিঠোন (৩০) গ্রাম,মরিচা,জরিমানা ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এ চেয়ারম্যান সহ তার সন্ত্রাসী বাহীনি বলে সাংবাদিকদের জানান,অভিযুক্ত’রা। এদিকে,যোঁর পূর্বক চেয়ারম্যানের দাবিকৃত,জরিমানার টাকা দিয়েছেন,রকিবুল গাজী (৩৫) পিতা,মৃত-রুমিয়ার গাজী,জরিমানার ৫০ হাজার টাকা ও মুদি-দোকানদার শিমুল বিশ্বাস (২৪) পিতা,আতিয়ার বিশ্বাস,গ্রাম চাকই জরিমানা ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এদিকে,সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,গরু চুরির অপরাধে ৭ জন চোঁরকে অভিযুক্ত করে গত (২৩ জুন) বুধবার চেয়ারম্যান হেমায়েত,ফারুক,মাসুম গাজী,হাফিজ,রুখালী ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বারসহ মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম ভাবে অমানুষিক নির্যাতন সহ অভিযুক্ত ৭ জনের মাথার চুল কেটে নেড়া করে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে চুরির অপরাধে ৭জনকে মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোঃ মুরছালিন,কোর্টে চালান করে দেন।
পরবর্তিতে অভিযুক্তদের স্বজন’রা কোর্ট থেকে জামিনে ছাড়িয়ে বাড়িতে আনলে,আবারও বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হিমায়েত হোসেন ফারুক অভিযুক্তদের তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাড়ি থেকে জোঁর পূর্বক ধরে আনে বিছালী ইউনিয়ন পরিষদে। এসময় ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন,মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মুরছালিন,চেয়ারম্যান হেমায়েত ও তার সন্ত্রাসী বাহীনি। এসময় চেয়ারম্যান ও মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মুরছালিনসহ সকলে বসে ৭ জনকে বিভিন্ন অংকের মোট ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ২৪ ঘন্টার মধ্য জরিমানার টাকা পরিষধ না করলে মাদক মামলা সহ বিভিন্ন রকম মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দিবে বলে হুমকিসহ ভয়ভিতি দেখায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী’রা। নিরঅপরাধ চাকই মোল্লার হাট বাজারের মুদি দোকানদার শিমুল বিশ্বাস অত্র প্রতিবেদককে কান্না জনীত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন,আমি দোকানদারী করে সংসার চালাই ,আমি কোন চুরি করিনি এ চুরির সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। গ্রামের রাব্বি বিশ্বাস,কালু ও তানভীর আমার দোকানে মাঝে মাঝেই আসতো বলে আমাকে ইউনিয়ন বাসির সামনে চোঁর বলে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন সহ মাথার চুল কেটে দেয় এবং চোঁর সাজিয়ে আমাকে পুলিশে দেয়। পরে আমার পরিবারের লোক আমাকে জামিনে বের করে আনে এবং আমাকে চেয়ারম্যান ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিনা দোশে। আমি গরিব মানুষ এই দোকানদারী করে সংসার চালাই তার পরেও আমার কাছ থেকে যোঁর করে জরিমানা আদায় করে নেয়চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাকি ৬ জন বলেন,শিমুল এই চুরির বিষয়ে কিছু জানেনা,সে নিরঅপরাধ বলে জানান। নাম পরিচয় জানাতে অনিচ্ছুক একাধীক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন,চেয়ারম্যানের এমন নেক্কার জনক ঘটনায় ইউনিয়ন বাসি মর্মাহত ও লজ্জিত,চেয়ারম্যান টাকার জন্য এমন অমানুষীক নির্যাতন, মাথা নেড়া করে দেয়া,পুলিশে দেয়ার পরে আবার মোটা অংকের জরিমানা করায় চেয়ারম্যান এর বিচার দাবি করেন বলেও জানান। এ বিষয়ে বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যা হেমায়েত হোসেন ফারুক মুঠোফোনে জানান,চোঁর চক্রকে কলরেকোডিং এর মাধ্যমে শনাক্ত করে রাব্বি বিশ্বাসকে নোয়াপাড়া থেকে ধরে নিয়ে আসে গরুর মালিক’রা,পরে ইউনিয়নের গণ্যমান্য বেক্তিদের সাথে নিয়ে এবং চোঁরদের পরিবারের সদস্যদের সামনে ইউনিয়ন পরিষদে এনে জিগ্যাসা বাদ করলে সবাই চুরির কথা সবার সামনে শিকার করে। এসময় বিছালী পুলিশ ক্যাম্পের আইসি সাহেব এসে সন্দেহ মূলক ভাবে তাদের আটক করে জেল হাজতে পেরন করেন।
অভিযুক্তদের নির্যাতন সহ চুল কেটে মাথা নেড়া করার বিষয়ে ও ৭ জনকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিষেয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো জানান,আমি বা আমার সামনে কেউ তাদের নির্যাতন করে নি বা তাদের চুল কাটেনি  এবং চোঁর চক্র যাদের গরু চুরি করেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া বাবদ এ জরিমানা করা হয়েছে বলেও তিনি  জানান। বিছিলী ইউনিয়নের মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মুরছালিন জানান,খবর পেয়ে আমি ইউনিয়ন পরিষদের ঘটনা স্থলে গিয়ে গরু চুরির সত্যতা পেয়ে আসামিদের আটক করে জেল হাজতে পেরন করি এবং চেয়ারম্যান তার পরিষদে কি করেছে এটা আমার দেখের বিষয় না বলেও তিনি জানান।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *