স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ে প্রতারণা, অবশেষে ডিবি’র হাতে ধরা

Uncategorized অপরাধ


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও (অ্যাডিশনাল পার্সোনাল অফিসার) পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে একজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ রাসেল মিয়া। এসময় তার হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২ টি মোবাইল ফোন ও ২টি সিম, ১৬টি ভিজিটিং কার্ড (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) ও ১টি সিল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ১৯ জুলাই, দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, Md. Raj Bin Rasel Talukder নাম দিয়ে একজন ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রীর ছবি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করে নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাকরির প্রলোভন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান, পুলিশে লোক নিয়োগ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বদলী, এলাকার মামলা নিষ্পত্তি সংক্রান্তে তদবির করে বিপুল পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করছে।

এধরণের এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্তকালে প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শানাক্ত করা হয়।
গত সোমবার (১৮ জুলাই ২০২২) রংপুর জেলার কোতয়ালী থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত রাসেল রংপুর পীরগঞ্জের একজন বাসিন্দা।

সে মোঃ রাজ বিন রাসেল তালুকদার নাম দিয়ে ফেইসবুকে আইডি খোলে। সে কৌশলে মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে। ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ অফিস নেতাকর্মীদের জন্য উন্মুক্ত থাকার সুযোগে রাসেল ধানমন্ডি পার্টি অফিসে আসতো। ফলে আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সাথে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। পার্টি অফিসে ছবি তুলে সে ছবি তার নিজ ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে। তার আপলোডকৃত ছবি ব্যবহার করে নিজ এলাকাসহ রংপুর জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে সমাজে নিজেকে পরিচিত করে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভুয়া ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে তা সকলের মাঝে বিতরণ করতো। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ভিআইপিদের সাথে ছবি থাকলেই কারো সাথে সম্পর্ক করা বা লেনদেন করা যাবে না।
গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, পিপিএম এর নিদের্শনায় ও এডিসি মোহাম্মদ জুনায়েদ আলম সরকার, পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার এডিসি মোঃ মহিদুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
এরকম প্রতারণা এড়াতে গোয়েন্দা-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো, এমপি, মন্ত্রী ও সমাজের বিশিষ্টজনদের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে কারো সাথে লেনদেন হতে বিরত থাকা।
এমপি, মন্ত্রী ও সমাজের বিশিষ্টজনদের সাথে অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত কারো সাথে ছবি তোলার ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *