কুটনৈতিক বিশ্লেষক ঃ দেরিতে হলেও চমৎকার সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ ব্যাংক ৬ টি ব্যাংকের ট্রেজারি চিফ কে অপসারনের নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার রেট যেখানে ৯৫ টাকা সেখানে ব্যাংকগুলি ১১০ টাকায় এলসি সেটেল করছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এক্সচেঞ্জ গেইনে শত শত কোটি টাকা মুনাফা করেছে বিভিন্ন ব্যাংক। একটাই কথা ডলার নেই। অথচ কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডলার সংরক্ষন করছে আর কিছু ব্যাংকের হাতে ডলার নেই। এই ইম্ব্যালান্স সৃষ্টির মাধ্যমে যেসব ব্যাংকের হাতে পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে তাদের ট্রেজারি বিপুল অংকের মুনাফা করে নিয়েছে ডলার সংকট দেখিয়ে।
৮০ টা মানি এক্সেঞ্জারে অভিযান চালিয়ে ৫ টির লাইসেন্স বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদের অনেকের কাছে ১২ হাজার ডলারের বেশি রাখার অনুমতি না থাকলেও লোভের আশায় অতিরিক্ত ডলার মজুদ করেছে। দাম বাড়বে বলে প্যানিক সৃষ্টি করে হাতে থাকা ডলার বিক্রি না করে উলটা ডলার কিনেছে তারা। সহজ কথায় ডিমান্ড সাপ্লাই এর নরমাল রুলস এখানে নেই। এটা ফটকাবাজি বা মজুদদারি বলা চলে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে যদি আরো ডলার ছাড়ে অর্থাৎ বিক্রি করে সেটাও এখন এরা বিভিন্ন ভাবে কিনে নিয়ে আরো লাভে বিক্রির আশায় মজুদ করবে।
গ্রিনব্যাক যখন অন্য কারেন্সির বিপরীতে মূল্য হারাচ্ছে তখন শেষ মুহুর্তের মার্কেট ম্যানুপুলেশনের মুনাফার ভাগ কেউ ছাড়তে রাজি নয় বাংলাদেশে। কি সুশৃঙ্খল বাজার ব্যাবস্থা!! বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে এক্সচেঞ্জ গেইনের ক্যাপ চালু করা। রপ্তানিতে যে হার রপ্তানিকারককে দেয়া হবে আমদানিতে সেই হারের থেকে ১ বা ২ টাকার বেশি লাভ করা যাবে না বলে ঘোষনা দেয়া উচিত। ব্যাংকগুলিতে শৃঙখলা ফেরাতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা দেখা দিলে প্রতিটা মানুষ এর ভুক্তভোগী হন। যারা বুঝেন তারাও হন, যারা বুঝেন না তারাও হন।
ব্যাংক খাতে আরো সংস্কার দরকার। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির কোন মালিক থাকেনা। এটা স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এর প্রয়োগ নেই। এখানে সবাই ব্যাংকের মালিক পরিচয় দেয়াটা মর্যাদার মনে করে। অপরাধ নয়। এক্ষেত্রে আরো স্পষ্ট ও প্রায়োগিক আইন থাকা দরকার। নন পারফর্মিং লোন গুলিকে বার বার সুবিধা দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা ঝুকি আরো বাড়াচ্ছে। দেশটা আমাদের। কি লাভ লোভ করে?